Sunday, November 23, 2025

ইসলামের দৃষ্টিতে ভূমিকম্প: কারণ, শিক্ষা ও করণীয়

 


ইসলামের দৃষ্টিতে ভূমিকম্প: কারণ, শিক্ষা ও করণীয়

-এম এ রাজ্জাক হাওলাদার

সূচনা:

বিভিন্ন সময় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়। কোথাও তীব্রতা বেশি, কোথাও কম। তবে যেমনই হোক, ভূমিকম্প হলো মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা। যেন মানুষ তাওবা করে মহান আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে। নিজেদের আচার-আচরণ শুধরে নেয়। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য দোয়া করে। আল্লাহকে অনেক বেশি স্মরণ করে এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে।

ভূমিকম্প (الزلازل) এমন এক প্রাকৃতিক ঘটনা যা মানুষের শক্তিকে অক্ষম করে দেয়, আল্লাহর কুদরতের সামনে মানবসভ্যতাকে অসহায় করে তোলে। কুরআন-হাদীসে ভূমিকম্পকে কখনো আল্লাহর নিদর্শন, কখনো সতর্কবার্তা, আবার কখনো পরীক্ষা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলাম এই ঘটনাকে কেবল বৈজ্ঞানিক ঘটনা হিসেবে নয়, বরং একটি আধ্যাত্মিক বার্তা হিসেবেও ব্যাখ্যা করেছে।

 

ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী ভূমিকম্প হওয়ার কারণ:

প্রাকৃতিক নানা বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ মানুষের অপকর্ম। এগুলোর পথ ধরেই মানুষ কিয়ামতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সতর্ক করে প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘যখন অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জিত হবে। কাউকে বিশ্বাস করে সম্পদ গচ্ছিত রাখা হবে, কিন্তু তা আত্মসাত করা হবে (অর্থাৎ যার সম্পদ সে আর ফেরত পাবে না)।

জাকাতকে দেখা হবে জরিমানা হিসেবে। ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া বিদ্যা অর্জন করা হবে, একজন পুরুষ তার স্ত্রীর বাধ্যগত হয়ে মায়ের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করবে। বন্ধুকে কাছে টেনে নেবে আর পিতাকে দূরে সরিয়ে দেবে। মসজিদে উচ্চস্বরে শোরগোল (কথাবার্ত) হবে। যখন সবচেয়ে দুর্বল ব্যক্তিটি সমাজের শাসক রূপে আবির্ভূত হবে। সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো- রক্তিম বর্ণের ঝড়ের (এসিড বৃষ্টি), ভূকম্পনের, ভূমিধসের, রূপ বিকৃতির (লিঙ্গ পরিবর্তন), পাথর বৃষ্টির এবং সুতো ছেঁড়া (তাসবিহ) দানার ন্যায় একটির পর একটি নিদর্শনগুলোর জন্য।’ (তিরমিজি: ১৪৪৭)

আল্লামা ইবনু কাইয়িম (রহ.) বলেন, মহান আল্লাহ মাঝে মাঝে পৃথিবীকে জীবন্ত হয়ে ওঠার অনুমতি দেন। ফলে বড় ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তখন এই ভূমিকম্প মানুষকে ভীত করে। তারা মহান আল্লাহর নিকট তাওবা করে, পাপ কর্ম ছেড়ে দেয়, আল্লাহর প্রতি ধাবিত হয় এবং তাদের কৃত পাপ কর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে মোনাজাত করে। আগেকার যুগে যখন ভূমিকম্প হতো, তখন সঠিক পথে পরিচালিত সৎকর্মশীল লোকেরা বলতো, ‘মহান আল্লাহ আমাদেরকে সতর্ক করেছেন।

ভূমিকম্প বিষয়ে পবিত্র কোরআনের যিলযালনামে স্বতন্ত্র একটি সুরা নাযিল করা হয়েছে। মানুষ শুধু কোনো ঘটনার কারণ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয় এবং ভূতত্ত্ববিজ্ঞানও এই কার্যকারণ সম্পর্কেই আলোচনা করে থাকে। ভূতত্ত্ববিজ্ঞান বলে, ভূ-অভ্যন্তরে শিলায় পীড়নের জন্য যে শক্তির সঞ্চয় ঘটে, সেই শক্তির হঠাৎ মুক্তি ঘটলে ভূপৃষ্ঠ ক্ষণিকের জন্য কেঁপে ওঠে এবং ভূত্বকের কিছু অংশ আন্দোলিত হয়। এমন আকস্মিক ও ক্ষণস্থায়ী কম্পনকে ভূমিকম্প (Earthquake) বলে। সাধারণত তিনটি কারণে ভূমিকম্পের উত্পত্তি হয়ে থাকে

() ভূপৃষ্ঠজনিত কারণে

()  আগ্নেয়গিরিজনিত কারণে

(গ) শিলাচ্যুতিজনিত কারণে ভূমিকম্প হয়।

সূতরাং মহান আল্লাহ বলেন,

وَمَا نُرْسِلُ بِالْآيَاتِ إِلَّا تَخْوِيفًا

আমি ভয় দেখানোর জন্যই (তাদের কাছে আজাবের) নিদর্শনগুলো পাঠাই।’ (সুরা বনি ইসরাইল-১৭:৫৯)

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন,

قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا مِنْ فَوْقِكُمْ أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ

বলে দাও, ‘আল্লাহ তোমাদের ওপর থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম।’ (সুরা আনআম-:৬৫)

হাদীসে এসেছে, জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যখন তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষমআয়াতটি নাজিল হলো, তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। ”(বুখার)

শায়খ ইস্পাহানি (রহ.) এই আয়াতের তাফসির করে বলেন, ‘এর ব্যাখ্যা হলো, ভূমিকম্প ও ভূমিধসের মাধ্যমে পৃথিবীর অভ্যন্তরে ঢুকে যাওয়া (পৃথিবীতে ভূমিকম্প হওয়া)।

 

 

 

নিম্নে ভূমিকম্পের কতিপয় দিক তুলে দরছি যা বাস্তবতার জীবনে কাজে লাগতে পারে আর তা হচ্ছে

এক. ভূমিকম্পের কারণইসলামী দৃষ্টিতে:

১. আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন (آيات الله):

আল্লাহ তাআলা মাঝে মাঝে এমন নিদর্শনপাঠান যা মানুষের অন্তরে ভয়, সচেতনতা এবং তাঁর কুদরতের স্বীকৃতি সৃষ্টি করে।

কুরআনের দলিল:

﴿وَمَا نُرْسِلُ بِالْآيَاتِ إِلَّا تَخْوِيفًا﴾

আমি নিদর্শন (বিপদ) পাঠাই শুধু ভয় দেখানোর জন্য।”— সূরা আল-ইসরা 17:59

ইবনে আব্বাস (رضي الله عنهما) বলেন— “هِيَ آيَاتٌ يُخَوِّفُ اللَّهُ بِهَا عِبَادَهُ

এগুলো এমন নিদর্শন যার মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভয় দেখান।

তাফসীর ইবনে কাসীর।

২. মানুষের গুনাহ ও অধঃপতনের কারণে সতর্কবার্তা:

যখন কোনো জাতির মাঝে ব্যাপক গুনাহ, অবাধ্যতা, ব্যভিচার, সুদ, জুলুম ও অন্যায় বাড়েআল্লাহ তাঁদের সতর্ক করার জন্য বিভিন্ন বিপর্যয় পাঠান।

কুরআনের দলিল: ﴿وَمَا أَصَابَكُمْ مِنْ مُصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ﴾

তোমাদের ওপর যত বিপদ আসেতা তোমাদের কর্মের কারণে।”— সূরা আশ-শূরা 42:30

ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন— “الزلازل من العقوبات التي يرسلها الله إذا ظهرت المعاصي

গুনাহ প্রকাশ্যে ছড়িয়ে পড়লে আল্লাহ ভূমিকম্প ধরনের শাস্তি পাঠান।”— Majmū‘ al-Fatāwā (18/248)

৩. আল্লাহর পরীক্ষা ও বাছাই (ابتلاء):

সব ভূমিকম্প শাস্তি নয়। অনেক সময় এগুলো হয় আল্লাহর পরীক্ষাযাতে ধৈর্যশীল ও অস্থির লোকদের পার্থক্য প্রকাশ পায়।

কুরআনের দলিল: ﴿وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ.

আমি অবশ্যই তোমাদেরকে ভয় ও ক্ষুধা দ্বারা পরীক্ষা করব।”— সূরা আল-বাকারা 2:155

ইমাম কুরতুবী বলেন— “الزلزال قد يكون ابتلاءً لا عقوبة

ভূমিকম্প কখনো পরীক্ষা হয়, শাস্তি নয়।”— তাফসীর কুরতুবী।

৪. কিয়ামতের নিকটবর্তী আলামত হিসেবে ভূমিকম্প বৃদ্ধি:

রসূল (সা.)ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে কিয়ামতের আগে ভূমিকম্প ব্যাপকভাবে বাড়বে।

সহীহ হাদীস: «وَيَكْثُرُ الزَّلْزَالُ»

“(কিয়ামতের আগে) ভূমিকম্প বৃদ্ধি পাবে।”— সহীহ বুখারি-৭১২১

 

দুই. ভূমিকম্প থেকে শেখার বিষয় ও শিক্ষাসমূহ:

১. মানুষের অসহায়ত্ব ও আল্লাহর শক্তির স্বীকৃতি:

মানুষ হাজার প্রযুক্তি আবিষ্কার করলেও ভূমিকম্পের মুহূর্তে সে সম্পূর্ণ অক্ষম। এটি আল্লাহর শক্তির স্পষ্ট প্রমাণ।

২. গুনাহ থেকে ফিরে এসে তাওবা করার প্রয়োজনীয়তা:

কুরআন বলেছে—  ﴿لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ﴾যেন তারা ফিরে আসে।”— সূরা যুখরুফ 43:48

ভূমিকম্প হলো ফিরে আসার আহ্বান।

৩. আল্লাহর নিয়ামতের মূল্য উপলব্ধি:

ভূমিকম্পের পর মানুষ বুঝতে পারেএক মুহূর্তে কীভাবে জীবন ও সম্পদ হারাতে পারে।

তিন. ভূমিকম্পের সময় মুসলিমের করণীয় (সুন্নাহ অনুসারে)

১. তাওবা ও ইস্তিগফার বৃদ্ধি করা: أستغفرُ اللهَ العظيمَ وأتوبُ إليه

নবী (সা.)বলেন— «طُوبَى لِمَنْ وَجَدَ فِي صَحِيفَتِهِ اسْتِغْفَارًا كَثِيرًا»

যার আমলনামায় প্রচুর ইস্তিগফার থাকবে, তার জন্য সুসংবাদ।”— ইবনে মাজাহ, 3819

২. নামাজে দাঁড়ানো ও দোয়া করা:

বিপদের সময়ে নবী (সা.)নামাজের দিকে ধাবিত হতেন।

«فَزِعَ إِلَى الصَّلَاةِ»

তিনি নামাজে আশ্রয় নিতেন।”— মুসনাদ আহমাদ

৩. দান-সদকা করা:

﴿إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ﴾

সৎকর্ম গুনাহ মুছে দেয়।”— সূরা হুদ 11:114

সদকা বিপদ দূর করার অন্যতম উপায়।

৪. মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া:

আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা রাসূল (সা.)এর নির্দেশ।

«وَاللَّهُ فِي عَوْنِ الْعَبْدِ...»

আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন যতক্ষণ বান্দা অন্যের সাহায্যে থাকে।”— মুসলিম, 2699

৫. দুনিয়াবী নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা:

ইসলাম কেবল দোয়ার উপর নির্ভর করতে বলে না; বরং যথাযথ সতর্কতা গ্রহণ করাও সুন্নাহ।

* ভূমিকম্পের সময় নিরাপদ স্থানে যাওয়া

* ভবন থেকে দ্রুত বের হওয়া

* ভাঙা অংশ থেকে দূরে থাকা

* পরিবারকে সুরক্ষায় নেওয়া এগুলো তাওয়াক্কুলের অংশ।

 

চার. ভূমিকম্পের পর মুসলিমের করণীয়:

১. মৃতদের জন্য দোয়া করা:

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُمْ وَارْحَمْهُمْ

২. মসজিদে খুতবা, ইস্তিগফার ও দোয়া বৃদ্ধি:

সালাফ যুগে ভূমিকম্প হলে খতিবরা মানুষকে তাওবার দিকে আহ্বান করতেন।

ইমাম ইবনে কায়্যিম (রহ.) বলেন

كان السلف إذا زلزلت الأرض خرجوا يستغفرون الله ويدعون

সালাফরা ভূমিকম্প হলে বাইরে বের হয়ে আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করতেন।

زاد المعاد

৩. গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা:

যেসব গুনাহ সমাজে বাড়লে আল্লাহর শাস্তি নেমে আসে

ব্যভিচার

সুদ

ঘুষ

জুলুম

পরনিন্দা

অন্তঃসত্ত্বা মহিলার ওপর অত্যাচার ইত্যাদি।

 

উপসংহার:

ইসলামের দৃষ্টিতে ভূমিকম্প কেবল ভূগর্ভের চলাচল নয়; এটি একটি দিব্য বার্তা, যাতে

আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন রয়েছে গুনাহ থেকে সতর্কবার্তা রয়েছে পরীক্ষা রয়েছে

কিয়ামতের আলামত রয়েছে মুসলিমের দায়িত্ব হলো

তাওবা করা, ইস্তিগফার করা, নামাজে দাঁড়ানো, সাহায্য করা, এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

Tuesday, October 21, 2025

দায়েমি(সার্বক্ষণিক)ফরজ সমূহ

 দায়েমি(সার্বক্ষণিক)ফরজ সমূহ

-এম এ রাজ্জাক হাওলাদার

দায়েমি ফরজ অর্থ: এমন ফরজ যা প্রতিনিয়ত, প্রতিদিন এবং সার্বক্ষণিক ভাবে পালন করা আবশ্যক। নারী-পুরুষের প্রকৃতি ও সৃষ্টিগত কিছু পার্থক্য ছাড়া উভয়ের উপর অবশ্য পালনীয় ফরজ বিধানগুলো প্রায় একই রকম।

নিম্নে কুরআন-হাদিসের নির্যাস থেকে উভয়ের জন্য আলাদা আলাদাভাবে কতিপয় সার্বক্ষণিক পালনীয় ফরজ কাজ তুলে ধরা হলো:

দায়েমি ফরজ পুরুষদের জন্য: ১৮টি যেমন:

১. সার্বক্ষণিক ঈমানের অবস্থায় থাকা।

২. সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করা।

৩. সর্বাবস্থায় শিরক, বিদআত এবং সব ধরণের আল্লাহর নাফরমানি ও পাপাচার থেকে দূরে থাকা।

৪. পরনারী থেকে দৃষ্টি হেফাজত করা

৫. হালাল স্ত্রী ছাড়া লজ্জা স্থান হেফাজত করা।

৬. স্ত্রী-সন্তানদের হক আদায় করা এবং যথাসাধ্য ভালোভাবে তাদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করা

৭. হালাল পন্থায় অর্থ উপার্জন করা (অর্থ উপার্জনে সব ধরণের হারাম পন্থা পরিহার করা)

৮. স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিকে অন্যায় কাজ করতে দেখলে বা এ সম্পর্কে অবগত হলে তাদেরকে বাধা দেয়া, তাদেরকে দীনের সঠিক জ্ঞান দান করা ও ইসলামের উপর প্রতিপালন করা। স্ত্রী অন্যায়-পাপাচারে জড়িত থাকলে তাকে নসিহত করা। এতে কাজ না হলে তার বিরুদ্ধে শরিয়ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

৯. মানুষের সাথে সুন্দর আচরণ করা, ভালো কথা বলা অথবা চুপ থাকা এবং গিবত, চুগলখোরি, গালাগালি, অশ্লীল ও নোংরা কথাবার্তা, মিথ্যা কথা, মিথ্যা সাক্ষ্য, কারও মৃত্যুতে বিলাপ করা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা।

১০. সর্বাবস্থায় আল্লাহ, রাসূল ও দীনের প্রতি ভালবাসা অটুট রাখা।

১১. স্ত্রী সহবাস, স্বপ্নদোষ বা অন্য কোনও কারণে গোসল ফরজ হলে গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা।

১২. পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, রমজান মাসে রোজা এবং অন্যান্য ফরজ ইবাদতগুলো যথা সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে আদায় করা।

১৩. দাড়ি রাখা (দাড়ি কাটা, ছাঁটা,মুণ্ডন করা হারাম)

১৪. নিজের শরীরে হক আদায়ের পাশাপাশি পিতা-মাতার আনুগত্য (যদি তা আল্লাহর নাফরমানি ও সাধ্যাতিরিক্ত না হয়) এবং মুসলিমদের পারস্পারিক হক সমূহ আদায় করা।

১৫. দীন সম্পর্কে কমপক্ষে এতটুকু জ্ঞান অন্বেষণ করা যা দ্বারা দৈনন্দিন ফরজ ইবাদত সমূহ সুন্দরভাবে সম্পাদন করা করা সম্ভব হয়।

১৬. সর্বক্ষেত্রে হালাল-হারাম বিধান মেনে জীবন যাপন করা।

১৭. কাফেরদের সাদৃশ্য অবলম্বন না করা (ধর্মীয়, সংস্কৃতি ও রীতিনীতির ক্ষেত্রে)।

১৮. কখনো আল্লাহর নাফরমি মূলক কাজ বা পাপাচার ঘটে গেলে অনতিবিলম্বে আন্তরিক অনুশোচনা সহকারে আল্লাহর কাছে তওবা করা ইত্যাদি।

দায়েমি ফরজ মহিলাদের জন্য: ১৬টি যেমন:

১. সার্বক্ষণিক ঈমানের অবস্থায় থাকা।

২. সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করা।

৩. সর্বাবস্থায় শিরক, বিদআত এবং সব ধরণের আল্লাহর নাফরমানি ও পাপাচার থেকে দূরে থাকা।

৪. পরপুরুষের দৃষ্টি থেকে নিজেকে হেফাজত করা (পূর্ণাঙ্গ পর্দা করা)।

৫. স্বামী ছাড়া নিজের লজ্জা স্থান হেফাজত করা।

৬. স্বামীর আনুগত্য করা এবং তার সন্তান-সন্ততি, অর্থ-সম্পদ ইত্যাদি রক্ষণাবেক্ষণ করা।

৭. সন্তান-সন্ততিকে অন্যায় কাজ করতে দেখলে বা এ সম্পর্কে অবগত হলে তাদেরকে বাধা দেয়া, তাদেরকে দীনের সঠিক জ্ঞান দান করা ও ইসলামের উপর প্রতিপালন করা। স্বামীকে অন্যায়-পাপাচারে জড়িত থাকলে তাকে নসিহত করা এবং সংশোধনের চেষ্টা করা।

৮. মানুষের সাথে সুন্দর আচরণ করা, ভালো কথা বলা অথবা চুপ থাকা। সেই সাথে গিবত, চুগলখোরি, গালাগালি, অশ্লীল ও নোংরা কথাবার্তা, মিথ্যা কথা, মিথ্যা সাক্ষ্য, কারও মৃত্যুতে বিলাপ করা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা।

 ৯. সর্বাবস্থায় আল্লাহ, রাসূল ও দীনের প্রতি ভালবাসা অটুট রাখা।

১০. স্বামী সহবাস, স্বপ্নদোষ, হায়েজ-নিফাস থেকে মুক্ত হলে বা অন্য কোনও কারণে গোসল ফরজ হলে গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা।

১১. পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, রমজান মাসে রোজা এবং অন্যান্য ফরজ ইবাদতগুলো যথা সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে আদায় করা।

১২. দীন সম্পর্কে কমপক্ষে এতটুকু জ্ঞান অন্বেষণ করা যা দ্বারা দৈনন্দিন ফরজ ইবাদত সমূহ সুন্দরভাবে সম্পাদন করা করা সম্ভব হয়।

১৩. সর্বক্ষেত্রে হালাল-হারাম বিধান মেনে জীবন যাপন করা ইত্যাদি।

১৪. নিজের শরীরে হক আদায়ের পাশাপাশি অবিবাহিত অবস্থায় পিতামাতার এবং বিয়ের পর স্বামীর আনুগত্য (যদি তা আল্লাহর নাফরমানি ও সাধ্যাতিরিক্ত না হয়) এবং মুসলিমদের পারস্পারিক হক সমূহ আদায় করা।

১৫. কাফেরদের সাদৃশ্য অবলম্বন না করা (ধর্মীয়, সংস্কৃতি ও রীতিনীতির ক্ষেত্রে)।

১৬. কখনো আল্লাহর নাফরমি মূলক কাজ বা পাপাচার ঘটে গেলে অনতিবিলম্বে আন্তরিক অনুশোচনা সহকারে আল্লাহর কাছে তওবা করা ইত্যাদি।

প্রিয় ভাইয়েরা! মহান আল্লাহ তাআলা নারী-পুরুষ উভয়কে তাদের উপর অর্পিত অবধারিত দায়েমি ফরজ ইবাদতগুলো পূর্ণ ইখলাসের সাথে সম্পাদন করার তওফিক দান করুন। আমিন।