Tuesday, September 08, 2020

আরাফার দিনে রোযা রাখার সীমাহীন ফযিলত





‘‘আরাফার দিনে রোযা রাখার সীমাহীন ফযিলত’’


আমরা আগেই জিলহজ্জের প্রথম ৯ দিনে সিয়াম পালন করার গুরুত্ব সম্পর্কে হাদীস দিয়েছিলাম। আজ শুধু ৯ জিলহজ্জের সিয়াম সম্পর্কে হাদীসটি উল্লখ করলাম। ওই দিনের সিয়ামের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিয়াম আরো কোনো দিনের আছে কি না আমার খেয়াল আসছে না। অনুগ্রহপূর্বক হাদীসটির প্রতি খেয়াল করুন।
وَعَنْ أَبي قَتَادَةَ رضي الله عنه، قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم عَنْ صَومِ يَوْمِ عَرَفَةَ، قَالَ: «يُكَفِّرُ السَّنَةَ المَاضِيَةَ وَالبَاقِيَةَ» رواه مسلم
আবূ কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ: তিনি বলেন,আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আরাফার দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, তার পূর্বের এক বছর ও পরের এক বছরের গোনাহ মোচন করে দেয়। (মুসলিম ১১৬২, রিয়াদুস সলেহিন,হাদিস নং ১২৫৮, হাদিসের মান: সহিহ হাদিস । অপর বর্ণনায় এসেছেঃ
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ، أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ، وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَه-

আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,নবী কারীম (সা:) বলেছেন,"ইয়াওমে আরাফার (নয় যিলহজ্ব) রোযার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী,তিনি এর দ্বারা আগের এক বছরের এবং পরের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন।" (সহীহ মুসলিম,হাদীস ১১৬২;জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৪৯;সুনানে আবু দাউদ,হাদীস ২৪২৫)
তাহলে বুঝতেই পারছেন, মাত্র একদিন সিয়াম পালন করে কী অসীম মর্যাদা লাভ করতে পারেন। এরকম কাছাকাছি মর্যাদার কথা আছে আশুরার রোযা সম্পর্কে। আশুরার রোযা দ্বারা এক বছরের গুনা মাফ করে দেয়া হয়।
কিন্তু একটি মশকিল হলো, বিভিন্ন আলেম দিনটি নির্ধারণ নিয়ে মতপার্থক্য করছেন। কোন্ ৯ তারিখ রোযা রাখব? সৌদিআরবের ৯ তারিখে হাজীগণ আরাফার ময়দানে উপস্থিত থাকেন। আর হাদীসে বলা হয়েছে ইয়াওমে আরাফা (আরাফার দিন)। তাই তারা বলেন, যেদিন আরাফার ময়দানে হাজীগণ থাকেন,সেই দিন সিয়াম পালন করতে হবে।
অপরদিকে অন্যরা বলছেন, আরাফার দিল হলো ৯ যিলহজ্জ। তাই প্রত্যেকে তাদের নিজনিজ এলাকার ৯ যিলহজ্জ অনুসারে সিয়াম পালন করবেন । কারণ, আমরা তো সৌদিআরবের দিনের সাথে রোযা বা ঈদ করি না, তবে এটি করব কেন? তাদের এই যক্তিও উড়িয়ে দেয়া যায় না।
তাই অনেক বিজ্ঞজন বলে থাকেন, এত গুরুত্বপূর্ণ দিনটির ফযিলত যেন বাদ না যায়, সেজন্য ২ দিন সিয়াম পালন করব। হাজীগণ যেদিন আরাফার ময়দানে উপস্থিত হন সেদিন এবং নিজ দেশে যেদিন ৯ যিলহজ্জ হয় সেদিন ।আমার কাছে মনে হয়,এটি একটি নিরাপদ সিদ্ধান্ত। এমনিই তো এই ৯দিন সিয়াম পালনের গুরুত্ব খুব বেশি। আর অনেকেই ধারাবাহিকভাবেই রোযা রাখছেনও। আমি বেশ কয়েকজনকে পেয়েছি তারা পুরো ৯দিনই বা বেশিরভাগ দিন রোযা রাখছেন । সুতরাং এরমধ্যেই পড়ে ৮ ও ৯ যিলহজ্জ । বিশেষ করে এই ২ দিন (অর্থাৎ এবার (২০২০) বৃহস্পতি ও শুক্রবার সকলেই রোযা রাখতে চেষ্টা করব।
অন্যথায় একদিন রাখতে চা্ইলে ঠকে যাওয়ার সম্ভানা আছে। কারণ যারা বলছেন, সৌদির ৯ তারিখে রাখব, তাদের একটি যুক্তি সঠিক যে, এই দিনটি আরাফায় হাজীগণের উপস্থিতির কারণেই মর্যাদাপূর্ণ, তাই সেদিনই রোযা রাখা কর্তব্য। আপাতত এটি খুব শক্ত যুক্তি। কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি, সৌদির পশ্চিমে যেসব দেশ আছে সেসব দেশে তো সৌদির ৯ তারিখ ঈদও হতে পারে। তখন তারা কি সৌদির আরাফার দিন রোযা রাখবে?
আর যারা নিজ দেশের ৯ তারিখে রোযা রাখায় জোর দেন, তাদেরও এই বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার, হাজীরা সেখানে অবস্থান করার সাথেই মর্যাদার সম্পর্কটি উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাই দুদিন রোযা রাখাটাই বেশি নিরাপদ। পারলে তো আরো বেশি।
মা শা আল্লাহ যোগাযোগ মাধ্যমে সএসব আলোচনার সুবাধে অনেকেই এসব বিষয় নিয়ে বেশ আমলী হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মাসের ৩ দিন, সপ্তাহের ২ দিন সিয়াম পালন এবং অন্যান্য নফল আমল খুবই গুরুত্ব দিয়ে করে থাকেন। তাই আপনিও আপনার ফেইসবুক ইত্যাদি ভালো কাজে লাগান। সাদকায়ে জারিয়ার সাওয়াব হাসিল করুন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ববূল করুন। আমীন।

No comments:

Post a Comment

razzakhowlader59@gmil.com