Tuesday, September 15, 2020

সালাতের গুরুত্ব ও ফজিলত



সালাতের গুরুত্ব ও ফজিলত

০২.  সূচনা
                নামায এর আরবী শব্দ সালাত সালাত এর আভিধানিক অর্থ দোয়া করা, ক্ষমা চাওয়া, কারো গুণগান ও পবিত্রতা বর্ণনা করা, কারো দিকে মুখ করা, অগ্রসর হওয়া এবং নিকটবর্তী হওয়া। কুরআনের পরিভাষায় সালোতের অর্থ হলো আল্লাহর দিকে মনোযোগ দেয়া, তাঁর দিকে অগ্রসর হওয়া, তাঁর কাছেই চাওয়া এবং তার নিকটবর্তী হওয়া।
                 শরীয়তে ইহার অর্থ হচ্ছে- এক বিশেষ পদ্ধতিতে আল্লাহর গুণগান করা, যাতে রুকু, সিজদা রয়েছে।  রাসুল করিম (স.) মিরাজের রাত্রে উম্মতে মোহাম্মদীর উপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করা হয়।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্বের মধ্যে সালাত দ্বিতীয়। সালাত আল্লাহ তায়ালা একটি ফরজ হুকুম। আল্লাহ তায়ালা সালাত কায়েম করার নির্দেশ দিয়েছেন। সালাত কায়েমের মাধ্যমে দৈনিক পাঁচবার আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিলে,পরকালে জাহান্নামের আযাব থেবে আল্লাহ মুক্তি দিবেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আল্লাহ মানুষকে তাঁর ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। কুরআন এবং হাদীসে সালাতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
  
০৩. আল-কুরআনে সালাতের গুরুত্ব ও ফজিলত
আল-কুরআনে সালাতের কথা বারংবার উল্লেখ করা হয়েছে। সালাত ধনী-গরীব সবার জন্য ফরজ ইবাদত। মহান আল্লাহ বলেন,
وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ ﴿البقرة: ٤٣﴾
তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং যারা রুকু করে তাদের সাথে রুকু কর।” (সূরা বাকারাহ ২/৪৩)

১/ সালাত সাফল্যের চাবিকাঠি
সফলতা কার জন্য যে কাজ করে তার। তদরুপ যে ব্যক্তি সালাত নিয়মিত আদায় করে তার জন্য সাফল্যের চাবিকাঠি হিেেসবে কাজ করবে। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন-
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ ۖ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ 
নিশ্চয় মুমিনগণ সফলতা লাভ করেছে যারা তাদের সালাতে বিনয়ী।” (সূরা আল মুমিনুন- ১ও২)

০৪. ২/ সালাত অশ্লীল ও মন্দ কাজ হতে বিরত রাখে
সালাত বা নামায এমনই একটি গুণ যা মানুষকে অশ্লীল ও মনন্দ কাজ হতে ফিরিয়ে রাখে এবং ভাল কাজের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

ٰ عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنكَرِ ۗ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ ۗ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ 
নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহ্র স¥রণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ্ জানেন তোমরা যা কর। (সূরা আনকাবুত-৪৫)

০৫. ৩/ সালাত হলো আল্লাহর স্মরণ
মানুষতো তার সৃষ্টি কর্তাকে বিভিন্ন ভাবে স্মরণ করে তার মধ্যে সর্ব উত্তম স্মরণ হলো সালাতে মাধ্যমে স্মরণ করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন -
إِنَّنِي أَنَا اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدْنِي وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي  
আমিই আল্লাহ্ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্বরণার্থে নামায কায়েম কর।” (সূরা ত্বোয়া-হা-১৪)

৬. ৪/ সালাত ইসলামে প্রবেশের প্রমান
মুসলিম ও কাফিরের মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত। মুমিন মুসলমান সালাত আদায় করে আর তারা করেনা। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
فَإِن تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَإِخْوَانُكُمْ فِي الدِّينِ ۗ وَنُفَصِّلُ الْآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ 
যদি তারা তওবা করে, সালাত কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে তাহলে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই। আর আমি বিধানসমূহে জ্ঞানী লোকদের জন্যে সর্বস্তরে র্বণনা করে থাকি।” ( সূরা তওবা- ১১)

০৭. ৫/ সালাত আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার মাধ্যম
যে কোন কাজের পূর্বে তার একটি মাধ্যম প্রয়োজন হয়। ঠিক আল্লাহ তায়ালার সাহায্য যদি পেতে চাই তবে আমাদের সালাতে মাধ্যমে চাইতে হবে। রাসূল করিম (স.) এবং সাহাবায় আজমাইন বিভিন্ন সমস্যায় পতিত হলে তখন সাহায্যের জন্য সেজদায় পরে যেতেন এবং আল্লাহ তায়ালা সাহায্য চাইতেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَقَالَ اللَّهُ إِنِّي مَعَكُمْ لَئِنْ أَقَمْتُمُ الصَّلَاةَ ﴿المائدة: ١٢﴾
আমি তোমাদের সাথে আছি যদি তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা কর। (সূরা মায়েদা- ১২)

০৮. ৬/ সালাতে অমনোযোগীতা দূর্ভোগের কারণ হবে 
যেকোন কাজ করার জন্য সুন্দর একটি মন নিয়ে মনোযোগীতার সহিত করতে হয় তাহলে সেই কাজটি সফলতায় পৌঁছানো সম্ভব। আর যদি অমনোযোগীতা থাকে তার জন্য ব্যক্তি কিংবা সমাজ, পরিবারের উপর দূর্ভোগের কারণ হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন-
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَۗ الَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ
অতএব দূর্ভোগ সে সব সালাত আদায়কারীদের জন্য, যারা তাদের সালাতে অমনোযোগী।” (সূরা মাউন- ৪ ও ৫)

০৯. হাদীসে সালাতের গুরুত্ব ও ফজিলত
সালাতে গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে কুরআনের পাশাপাশি হাদীসে এসেছে রাসুল করিম (স.) থেকে বর্ণনা করেন,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: " فُرِضَتْ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِهِ الصَّلَوَاتُ خَمْسِينَ، ثُمَّ نُقِصَتْ حَتَّى جُعِلَتْ خَمْسًا، ثُمَّ نُودِيَ: يَا مُحَمَّدُ، إِنَّهُ لَا يُبَدَّلُ القَوْلُ لَدَيَّ، وَإِنَّ لَكَ بِهَذِهِ الخَمْسِ خَمْسِينَ [حكم الألباني] : صحيح (ترمزى-২১৩)
হযরত আনাছ ইবনে মালিক (রাঃ) বলেনঃ মিরাজ রজনীতে নবী করীম (সাঃ)-এর উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরয হয়েছিল, পর পর তা কমিয়ে শেষ পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত করা হয়। এর পর বলা হয়, হে মুহাম্মদ (সাঃ) আমার কথার কোন রদবদল হয় না। আপনার জন্য এ পাঁচ ওয়াক্তের সওয়াব পঞ্চাশ ওয়াক্তেরই সমান। (তিরমিজি- ২১৩)
অন্য হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، قَالَ: سَمِعْتُ جَابِرًا، يَقُولُ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُإِنَّ بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ وَالْكُفْرِ تَرْكَ الصَّلَاةِ
জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ মুমিন ব্যক্তি এবং কুফর ও শিরকের মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত ত্যাগ করা। (মুসলিম-১৪৯ ই.ফা.বা)

১০. প্রসিদ্ধ সাহাবী থেকে অন্য একখানা হাদীস রয়েছে,
عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: «بَايَعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى إِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ»(بخارى- (بخارى-৫৫-مسلم-১০৫)
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন আমি নবী করীম (সাঃ)-এর নিকট সালাত কায়েম, যাকাত প্রদান এবং প্রত্যেক মুসলমানকে উপদেশ প্রদান এর শপত গ্রহণ করেছি। (বুখারী-৫৫ ই.ফা.বা; মুসলিম-১০৫ ই.ফা.বা)

জামাআতে স্বলাত আদায়রে ফযীলত,তা র্বজনকারীর প্রতি কঠোরতা
হাদিসে এসেছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِحَطَبٍ، فَيُحْطَبَ، ثُمَّ آمُرَ بِالصَّلاَةِ، فَيُؤَذَّنَ لَهَا، ثُمَّ آمُرَ رَجُلًا فَيَؤُمَّ النَّاسَ، ثُمَّ أُخَالِفَ إِلَى رِجَالٍ، فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ، »(بخارى-616-مسلم-1354) 
হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থকেে র্বণতি, তনিি বলনে, রাসূলুল্লাহ্ (স.)বলছেনেঃ যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম! আমার ইচ্ছা হয়, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে আদশে দইে, তারপর স্বলাত কায়মেরে নর্দিশে দইে, এরপর স্বলাতরে আযান দওেয়া হোক, তারপর এক ব্যক্তকিে লোকদরে ইমামতি করার নর্দিশে দইে। এরপর আমি লোকদরে কাছে যাই এবং যারা স্বলাতে শামলি হয় নাই তাদরে ঘর জ্বালয়িে দইে। (বুখারী-৬১৬ ই.ফা, মুসলিম-১৩৫৪ ই.ফা)
১১. সালাতের ফজিলত
সালাতের ফজিলতের কথা তুলে ধরে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الْصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ وَالْجُمُعُةِ إِلَى الْجُمُعَةِ، وَرَمَضَانِ إِلَى رَمَضَانَ مُكفِّرَاتٌ لِمَا بَيْنَهُنَّ مَ ا اجْتُنِبَتِ الْكَبَائِرُ. (رَوَاهُ مُسلم-৪৪৩)
আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, এক জুমুআ থেকে পরবর্তী জুমুআ ও এক রমাজান থেকে পরবর্তী রমাজান মধ্যবর্তী গুণাহ সমূহের কাফ্ফারা হয়ে যায়, যদি কবীরা গুণাহ থেকে বেচে থাকে। (মুসলিম-৪৪৩ ই.ফা.বা; ৪৫৯ ই.সে)

১২. অন্য হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ:«أَرَأَيْتُمْ لَوْ أَنَّ نَهْرًا بِبَابِ أَحَدِكُمْ يَغْتَسِلُ مِنْهُ كُلَّ يَوْمٍ خَمْسَ مَرَّاتٍ، هَلْ يَبْقَى مِنْ دَرَنِهِ شَيْءٌ؟» قَالُوا: لَا يَبْقَى مِنْ دَرَنِهِ شَيْءٌ، قَالَ: «فَذَلِكَ مَثَلُ الصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ، يَمْحُو اللهُ بِهِنَّ الْخَطَايَا»(بخارى-503-مسلم-1396)
আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আচ্ছা তোমরা বল তো, যদি তোমাদের কারোর বাড়ির দরজার সামনে একটি নহর থাকে, যাতে সে প্রতিদিন পাঁচবার করে গোসল করে, তাহলে তার শরীরে কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকবে কি? সাহাবীরা বললেন, না, কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না। তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত সলাতের উদাহরণও সেইরূপ। এর দ্বারা আল্লাহ পাপসমূহ নিশ্চিহ্ন করে দেন। (বুখারী-৫০৩ ই.ফা.বা; মুসলিম-১৩৯৬ ই.ফা.বা)
১৩. অপর হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ صَلَّى صَلاَتَنَا وَاسْتَقْبَلَ قِبْلَتَنَا، وَأَكَلَ ذَبِيحَتَنَا فَذَلِكَ المُسْلِمُ الَّذِي لَهُ ذِمَّةُ اللَّهِ وَذِمَّةُ رَسُولِهِ، فَلاَ تُخْفِرُوا اللَّهَ فِي ذِمَّتِهِ»(بخارى-384) 
আনাছ ইবনে মালেক (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে ব্যক্তি আমাদের মত সালাত পড়ে আমাদের কিবলার দিকে মুখ করে এবং আমাদের যবহকৃত প্রাণীর মাংস খায় সে মুসলমান। আল্লাহ ও তার রাসূল (সাঃ) তার দায়িত্ব নিয়েছেন। অতএব, তোমরা আল্লাহর দায়ত্বের ব্যাপারে বিশ্বস ভঙ্গ কর না। (বুখারী-৩৮৪ ই.ফা.বা)

১৪. সঠিক সময় সালাত আদায় করার ফজিলত    
এ প্রসংঙ্গে হাদীসে  এসেছে,
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ: سَأَلْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ الْعَمَلِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «الصَّلَاةُ لِوَقْتِهَا» قَالَ: قُلْتُ ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: «بِرُّ الْوَالِدَيْنِ» قَالَ: قُلْتُ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: «الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللهِ» (بخارى-502-7026-مسلم-156)
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি নবী করীম (সাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন কাজটি আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় ? তিনি বললেন- ‘‘যথাসময়ে নামাজ আদায় করা তিনি বললেন এর পর কোন কাজটি? নবী করীম (সাঃ) বললেন-পিতা মাতার খেদমত ও আনুগত্য করা।তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন এর পর কোন কাজটি ? নবী করীম (সাঃ) বললেন- আল্লাহর পথে জিহাদ করা।” (বুখারী-৫০২,৭০২৬ ই.ফা.বা; মুসলিম-১৫৬ ই.ফা.বা)

১৫. সালাত আদায় গুনাহ মাফ
হাদীসে রয়েছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا تَوَضَّأَ الْعَبْدُ الْمُسْلِمُ - أَوِ الْمُؤْمِنُ - فَغَسَلَ وَجْهَهُ خَرَجَ مِنْ وَجْهِهِ كُلُّ خَطِيئَةٍ نَظَرَ إِلَيْهَا بِعَيْنَيْهِ مَعَ الْمَاءِ - أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ -، فَإِذَا غَسَلَ يَدَيْهِ خَرَجَ مِنْ يَدَيْهِ كُلُّ خَطِيئَةٍ كَانَ بَطَشَتْهَا يَدَاهُ مَعَ الْمَاءِ أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ -، فَإِذَا غَسَلَ رِجْلَيْهِ خَرَجَتْ كُلُّ خَطِيئَةٍ مَشَتْهَا رِجْلَاهُ مَعَ الْمَاءِ - أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ - حَتَّى يَخْرُجَ نَقِيًّا مِنَ الذُّنُوبِ» (مُسْلِمُ-470)
আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন ঃ কোন মুমিন বান্দা যখন ওজু করার সময় মুখ ধোয়ার সাথে সাথে অথবা বলেছেন পানির শেষ বিন্দুর সাথে তার ঐ সকল গুনাহ বের হয়ে যায়, যার দিকে তার দুচোখের দৃষ্টি পড়েছিল। আর যখন দুই হাত ধোয়, তখন পানির সাথে অথবা বলেছেন, পানির শেষ বিন্দুর সাথে তার ঐ সকল গুনাহ বের হয়ে যায়। যে গুলো তার দুহাত ধরেছিল। আর যখন দুই পা ধোয়, পানির সাথে অথবা বলেছেন, পানির শেষ বিন্দুর সাথে তার ঐ সকল গুনাহ বের হয়ে যায় যেগুলোর দিকে তার দুপা অগ্রসর হয়ে ছিল; ফলে লোকটি তার সমুদয় গুণাহ থেকে সম্পূর্ণভাবে পরিস্কার হয়ে যায়।” (সহীহ মুসলিম-৪৭০ ই.ফা.বা)
১৬. অপর হাদীসে এসেছে,
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «خَمْسُ صَلَوَاتٍ افْتَرَضَهُنَّ اللَّهُ تَعَالَى مَنْ أَحْسَنَ وُضُوءَهُنَّ وَصَلَّاهُنَّ لِوَقْتِهِنَّ وَأَتَمَّ رُكُوعَهُنَّ وَخُشُوعَهُنَّ كَانَ لَهُ عَلَى اللَّهِ عَهْدٌ أَنْ يَغْفِرَ لَهُ، وَمَنْ لَمْ يَفْعَلْ فَلَيْسَ لَهُ عَلَى اللَّهِ عَهْدٌ، إِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُ وَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُ» (صَحِيح). رَوَاهُ أَحْمَدُ-22704- وَأَبُو دَاوُدَ -425)
উবাদাহ ইবনে সামিত (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত সলাত আল্লাহ তায়ালা ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অযু করে নির্ধারিত সময়ে বিনয়ের সাথে রুকু ও অন্যান্য আরকান সমূহ আদায়ের মাধ্যমে পূর্ণরূপে সালাত কায়েম করে, তার জন্য মহান আল্লাহর প্রতিশ্রæতি হলো তিনি তাকে ক্ষমা করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি এরুপ করবেনা তার জন্য মহান আল্লাহর কোন প্রতিশ্রæতি নাই। ইচ্ছে করলে তিনি তাকে ক্ষমা করবেন অথবা তাকে শাস্তি দিবেন।” (আহমদ-২২৭০৪, আবু দাউদ-৪২৫)

১৭. সালাত রবের সাথে গোপন আলাপ
এ প্রসংঙ্গে হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا قَامَ فِي صَلاَتِهِ، فَإِنَّمَا يُنَاجِي رَبَّهُ أَوْ رَبُّهُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ قِبْلَتِهِ،(بخارى)
আনাছ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাড়ায়, সে তখন তার রবের সাথে একান্তে আলাপ করে অথবা তার রব তার ও কিবলার মাঝে থাকে। (সহীহ বুখারী-আধু-৩৯০, ই.ফা.বা-৩৯৬)
১৮.  জান্নাতের সু-সংবাদ
জান্নাতে সু-সংবাদ দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي مُوسَى، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ صَلَّى
 البَرْدَيْنِ دَخَلَ الجَنَّةَ
আবু বকর ইবনে মুসা (রাঃ) তার পিতা আবু মুসা হতে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দুটি ঠান্ডা ওয়াক্তের সালাত  (তথা ফজর ও আসর) আদায় করবে সে জন্নাতে যাবে।  (সহীহ বুখারী-৫৪৬ ই.ফা.বা; মুসলিম-১৩১৩ ই.ফা.বা)
১৯. সকাল বিকাল মসজিদে যাওয়ার ফজিলত
মসজিদ আল্লাহর ঘর আর সালাত আদায়ের জন্য ঘরের চাইতে মসজিদ-ই উত্তম স্থান। রাসূল (স.) বলেন- ঘরের চাইতে মসজিদে সালাত আদায় ৭০গুণ সাওয়াব বেশী রয়েছে। আর সকাল বিকাল যে ব্যক্তি মসজিদে যাবে তার একটি পুরুস্কারের ঘোষণা দিয়ে রাসূলের  হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، «مَنْ غَدَا إِلَى الْمَسْجِدِ، أَوْ رَاحَ، أَعَدَّ اللهُ لَهُ فِي الْجَنَّةِ نُزُلًا، كُلَّمَا غَدَا، أَوْ رَاحَ »(بخارى-629-مسلم-1398) 
আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, কোন ব্যক্তি সকাল বিকাল যতবার মসজিদে যাতায়াত করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ততবার আতিথেয়তার ব্যবস্থা করেন। (বুখারী-৬২৯ ই.ফা.বা;  মুসলিম-১৩৯৮ ই.ফা)

২০. সালাতে মন এদিক-সেদিক কেন যায়?
                মনোবিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে, আমাদের মন সরাসরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। আমাদের শরীর সরাসরি আমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন। ইচ্ছে করলেই আমরা পারি আমাদের হাতকে উর্ধ্বমুখী করতে, আবার খেয়াল-খুশি মতো নিচে নামাতে। সহজ ভাষায় বলা য়ায়, আমাদের মনোভাব অনুযায়ী সব আদেশ নিষেধ শরীর গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু আমাদের চালিকা শক্তি মন আমাদের নিয়ন্ত্রণ খুব একটা গ্রাহ্য করে না। আমরা অধিকাংশ মানুষ হয়তো লক্ষ্য করে থাকবো মন স্থির না বরং সবসময় চলমান বা গতিশীল।
                যখন আমরা সালাতে দাঁড়াই মনকে তখন কোনো কাজ দিই না। কিন্তু মন কোন কাজ ছাড়া থাকতে পারে না। তাই মন এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়।
  
২১. মনকে কীভাবে স্থির রাখা যায়? মনটাকে কাজ দিন
                বেশী ভাগ সালাত আদায়কারী সালাতের মধ্যে কুরআনের যে অংশগুলো তিলাওয়াত করে থাকে- যথা সুরা ফাতিহা ও অন্যান্য অংশ সেগুলো পুরোপুরি মুখন্থ। এমনকি সে ঘুমের মধ্যেও তা পড়ে যেতে পারে-
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
সমস্ত প্রশংসা বিশ^ প্রতিপালক আল্লাহর প্রতি। (সুরা ফাতিহা-১-৭)
                তিলাওয়াতের সময় সাথে সাথে যদি ইমাম ও মোক্তাদি  তার অর্থটি অনুধাবনের প্রয়াস চালানো হয়, তবে আমাদের মস্তিস্ক কাজ পাবে। যখন মস্তিস্ক তিলাওয়াতকৃত অংশটুকু অনুবাদের কাজে ব্যস্ত থাকবে, তখন সে আর এদিক সেদিক ছোটাছুটি করবে না।  এভাবে দেখা যাবে যে এক সময় ঠিক হয়ে গেছে।
                এক কথায় চলা যায়, মস্তিস্ক কুরআন তিলাওয়াত ও এর অনুবাদ এ দুটি কাজে নিবদ্ধ করে অর্থের প্রতি শতভাগ মনোযোগ নিবদ্ধ করলে আল্লাহ চাহেতো স্বয়ংক্রিয়ভাবেই মনের বেখেয়ালি চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

২২. সালাত আদায়ের উপকারিতা
                সালাত আদায় করলে অনে উপকার হয়। এটি আসলে একটি জীবন দর্শন। সালাত মানে আত্মিক পরিশুদ্ধতা, শান্তি ও দৈহিক অনুশীল। বিশ^াস আস্থা ইত্যাদি আত্মিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটায়।
আল্লাহ বলেন,
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ
সত্যিকারের বিশ্বাসী তারাই যাদের হৃদয় কম্পিত হয়ে উঠে যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয়।(সুরা আনফাল-২নং আয়াত)
একজ প্রকৃত মুমিন তার দিন শুরু করে ফজরের সালাত আদায়ের মাধ্যমে যাতে আহবান করা হয়-
اَلصَّلَوةُ خَيْرُ مِّنَ النَّوْمِ
অর্থ-ঘুমের চেয়ে সালাত উত্তম।
                সুতরা একজন মুমিনের জন্য এভাবে অনেক উপকারের কথা বলা হয়েছে।

২৩. দৈহিক উন্নয়নে সালাত
                দৈহিক উন্নয়নের কথা বলতে হলে প্রথমে বলতে হয় আমরা যখন রুকুতে যাই তখন মাথা ঝুঁকাই ফলে আমাদের শরীর বাঁকা হয় এবং  মাথার দিকে রক্ত বাড়তে থাকে। এরপর যখন সোজা হয়ে দাঁড়াই তখন রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয় এবং শরীর আরামপ্রদ হয়ে যায়। এভাবে সালাতের মধ্যে সিজদা থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো, হাঁটু মাটিতে স্পর্শ করা, হাত ও কপাল দিয়ে মাটিতে সেজদায় যাওয়া এবং সিজদা থেকে উঠে হাঁটু গেড়ে বসি যা মানুষের শরীরের জন্য বিজ্ঞানের মতে অনেক উপকারের। সুতরাং বলা যেতে পারে যে সালাতের প্রত্যেকটি কাজে  দৈহিক উন্নয়ন রয়েছে।

২৪. বিভিন্ন অবস্থায় সালাত
                আমরা প্রতিদিন ও প্রতি সময় সালাত আদায় করি।  কিন্তু নিম্মের দুটি দিক কি ভাবে সালাত পড়বো তা সংক্ষেপে বলছি।
ক.যুদ্ধাবস্থা অবস্থায় সালাত
                সালাতে ব্যাপারে কোনো আরাম-বিশ্রাম নেই এমনকি যুদ্ধের ময়দানেও সালাত আদায় করতে হবে। যুদ্ধের ময়দানে কীভাবে সালাত আদায় করতে হবে আল্লাহ রব্বুল আলামিন কুরআনে সেই নির্দেশও দিয়েছেন।
فَإِنْ خِفْتُمْ فَرِجَالًا أَوْ رُكْبَانًا فَإِذَا أَمِنْتُمْ فَاذْكُرُوا اللَّهَ كَمَا عَلَّمَكُمْ مَا لَمْ تَكُونُوا تَعْلَمُونَ
যদি তোমরা ভয় বা গোলোযোগের আশঙ্কা করো, তবে পায়ে হেটে অথবা আরোহী অবস্থায় পড় নাও। অত:পর যখন তোমরা নিরাপদ হয়ে যাবে, তখন আল্লাহকে স্মরণ করবে যেভাবে তিনি তোমাদের শিখিয়েছেন যা তোমরা জানতে না। (সুরা বাকারা-২৩৯)
২৫. অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন,
فَإِذَا قَضَيْتُمُ الصَّلَاةَ فَاذْكُرُوا اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِكُمْ
যখন তোমরা সালাত সম্পন্ন কর, তখন আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো দাঁড়ানো,বসা এবং শায়িত অবস্থায়। (সুরা নিসা-১০৩)
                সুতরাং যুদ্ধের বা অন্য কোনো বিপদের সময় দাঁড়িয়ে, বসে অথবা শুয়ে  সালাত আদায় করতে হবে। এমনকি অসুস্থাবস্থায়ও  আদায় করতে হবে।
খ.অসুস্থতা অবস্থায় সালাত
                সহীহ আল বুখারীতে আছে- এক ব্যক্তি রাসূল (স.)-কে জিজ্ঞেস করলো সে পাইলসের সমস্যায় ভুগছে। কীভাবে সে সালাত আদায় করবে? নবী করীম (স.) বললেন দাঁড়িয়ে সালাম পড়ো। যদি তা না পারো বসে সালাত পড়ো, যদি তাতে অক্ষম হও, শুয়ে আদায় করো তাতেও অক্ষম হলে ইশারায় আদায় করো। (সহীহ বুখারী-- )
সুতরাং কেউ অসুস্থ হলেও সালাতের ব্যাপারে কোনো ওজর নেই।
  
২৬. উপসংহার
প্রিয় হাজেরিন! সালাতে মাধ্যমে একজন মুসলিম আল্লাহর দরবারে শুধু সাহায্যের আর্জিই পেশ করে না। সালাত আমাদের সঠিক দিক নির্দেশনাও দিয়ে থাকে। বর্তমান সময়ের সর্বাধুনিক কম্পিউটারের চেয়েও মানুষের দৈহিক, বুদ্ধিবৃত্তিক গঠন ও কর্মপদ্ধতি অধিকতর জটিল। আমরা মানুষেরা অর্থাৎ মানবজাতি হচ্ছি মহান ‘‘আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি তথা আশরাফুল মাখলুকাত’’ (সুরা আত্বতীন-৪)

২৭. পরিশেষে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর একখানা হাদীস বলে শেষ করছি আজকের বক্তব্য-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: " إِنَّ أَوَّلَ مَا يُحَاسَبُ بِهِ العَبْدُ يَوْمَ القِيَامَةِ مِنْ عَمَلِهِ صَلَاتُهُ، فَإِنْ صَلُحَتْ فَقَدْ أَفْلَحَ وَأَنْجَحَ، وَإِنْ فَسَدَتْ فَقَدْ خَابَ وَخَسِرَ، فَإِنْ انْتَقَصَ مِنْ فَرِيضَتِهِ شَيْءٌ، قَالَ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ: انْظُرُوا هَلْ لِعَبْدِي مِنْ تَطَوُّعٍ فَيُكَمَّلَ بِهَا مَا انْتَقَصَ مِنَ الفَرِيضَةِ، ثُمَّ يَكُونُ سَائِرُ عَمَلِهِ عَلَى ذَلِكَ " [حكم الألباني] : صحيح (ترمزى-
আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি- কিয়ামতের দিন বান্দার আমল সমূহের মধ্যে সর্বপ্রথম সালাতের হিসাব নেয়া হবে। যদি ঠিকমত সালাতের হিসাব দিতে পারে তবে সে মুক্তি পাবে এবং সফলকাম হবে।
আর যদি সালাতের হিসাব দিতে ব্যর্থ হয়, তবে সে ক্ষতিগ্রস্থ ও বিপর্যস্ত হবে। যদি ফরজ সালাতের মধ্যে কিছুটা ত্রæটি হয়ে থাকে, তখন মহান আল্লাহ তার পক্ষে বলবেন, দেখ, বান্দার কোন নফল সালাত আছে কিনা? থাকলে তা দিয়ে ফরজের ঘাটতি পূরণ করা হবে। অত:পর সমস্ত কাজের বিচার পর্যায়ক্রমে এ ভাবে করা হবে। (তিরমিযি-৩৮৮ ই.সে,আবু দাউদ-৮৬৪ ই.সে)
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে সালাতের গুরুত্ব ও ফজিলত বুঝে আমলকে পরিপুরক করা উচিৎ। আল্লাহ আমাদের সালাতের আমল সঠিক ভাবে করার তাওফিক দিন।


No comments:

Post a Comment

razzakhowlader59@gmil.com