Friday, November 05, 2021

মানবসেবার গুরুত্ব

 


মানবসেবার গুরুত্ব

এম এ রাজ্জাক হাওলাদার 

ভুমিকা:

আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে অসংখ্য প্রাণী সৃষ্টি করেছেন তার মধ্যে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে। যে সমস্ত কাজ করে মানুষ তার শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখবে সেগুলোর একটি হল মানবসেবা। বিশ্বের মানুষ মানব সেবায় আত্মনিয়োগ করে অনন্য নযীর স্থাপন করেছেন। মানবতার নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর সারাজীবন মানুষের সেবায় ব্যয় করেছেন। আমরা তাঁর উম্মত হিসাবে মানব সেবায় কাজ করা উচিত। তাহলে আমরা সকলে মিলে আরো অনেক বেশী শান্তিতে থাকতে পারবো।

মানবসেবার সংজ্ঞা:

মানবসেবা হল মানুষের কল্যাণে কাজ করা। মানুষকে কষ্ট থেকে উদ্ধার করা, বিপদে পাশে দাঁড়ানো, অসুস্থ হলে সেবা করা এবং যে কোন বৈধ প্রয়োজনে সাহায্য করা।

মানুষ মানুষের কল্যাণে কাজ কর:

كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَوْ آمَنَ أَهْلُ الْكِتَابِ لَكَانَ خَيْرًا لَهُمْ مِنْهُمُ الْمُؤْمِنُونَ وَأَكْثَرُهُمُ الْفَاسِقُونَ

তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যাণের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে কিতাবরা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য কল্যাণকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী। (সূরা আলে ইমরান-৩/১১০)

অন্য আয়াতে এসেছে,

وَلْتَكُنْ مِنْكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ

আর তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিত যারা আহবান জানাবে সৎকর্মের প্রতি, নির্দেশ দেবে ভালো কাজের এবং বারণ করবে অন্যায় কাজ থেকে, আর তারাই হলো সফলকাম। (সূরা আলে ইমরান-৩/১০৪)

হাদীসে এসেছে,

عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ يَرْحَمُ اللَّهُ مَنْ لاَ يَرْحَمُ النَّاسَ

জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ তাকে দয়া করেন না, যে মানুষকে দয়া করে না। (সহীহ বুখারী-৭২৭৬)

প্রিয় নবী (সাঃ)-এর মানবসেবা:

لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ

তোমাদের কাছে এসেছেন তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়। (সূরা তাওবাহ-৯/১২৮)

فَذَكِّرْ إِنَّمَا أَنْتَ مُذَكِّرٌ لَسْتَ عَلَيْهِمْ بِمُصَيْطِرٍ

অতএব, আপনি উপদেশ দিন, আপনি তো কেবল একজন উপদেশদাতা, আপনি তাদের শাসক নন। (সূরা গাশিয়াহ-৮৮/২১, ২২)

মহানবী (সাঃ) অভিসম্পাত করার জন্য প্রেরিত হননি:

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُبَيْدٍ قَالَ: لَمَّا كُسِرَتْ رُبَاعِيَّةُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَشُجَّ فِي جَبْهَتِهِ فَجَعَلَتِ الدِّمَاءُ تَسِيلُ عَلَى وَجْهِهِ قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ، ادْعُ اللهَ عَلَيْهِمْ فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللهَ تَعَالَى لَمْ يَبْعَثْنِي طَعَّانًا وَلَا لَعَّانًا، وَلَكِنْ بَعَثَنِي دَاعِيَةَ وَرَحْمَةٍ، اللهُمَّ اهْدِ قَوْمِي فَإِنَّهُمْ لَا يَعْلَمُونَ -هَذَا مُرْسَلٌ

আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন উহুদ যুদ্ধে মহানবী (সাঃ) এর রুবায়ী দাঁত ভেঙ্গে গেল, তাঁর কপাল ফেটে গেল এবং তাঁর চেহারা রক্তাক্ত হয়ে গেল। তখন তাঁকে বলা হল, আপনি তাদের জন্য বদ দোয়া করুন। তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা আমাকে আক্রমণকারী ও অভিসম্পাত বর্ষণকারীরূপে প্রেরণ করেননি বরং আহবানকারী ও রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছেন। হে আল্লাহ! আমার সম্প্রদায়কে ক্ষমা করে দাও, কারণ তারা বুঝতে পারেনি। (শুয়াবিল ঈমান-১৩৭৫)

মহানবী (সাঃ) সম্পর্কে খাদিজা (রাঃ)-এর মন্তব্য:

عَنْ عَائِشَةَ فَرَجَعَ بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَرْجُفُ فُؤَادُهُ، فَدَخَلَ عَلَى خَدِيجَةَ بِنْتِ خُوَيْلِدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، فَقَالَ: زَمِّلُونِي زَمِّلُونِي فَزَمَّلُوهُ حَتَّى ذَهَبَ عَنْهُ الرَّوْعُ، فَقَالَ لِخَدِيجَةَ وَأَخْبَرَهَا الخَبَرَ: لَقَدْ خَشِيتُ عَلَى نَفْسِي فَقَالَتْ خَدِيجَةُ: كَلَّا وَاللَّهِ مَا يُخْزِيكَ اللَّهُ أَبَدًا، إِنَّكَ لَتَصِلُ الرَّحِمَ، وَتَحْمِلُ الكَلَّ، وَتَكْسِبُ المَعْدُومَ، وَتَقْرِي الضَّيْفَ، وَتُعِينُ عَلَى نَوَائِبِ الحَقِّ،

আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হেরা গুহায় নাযিল হওয়া প্রথম আয়াতগুলো নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রত্যাবর্তন করলেন। তাঁর হৃদয় তখন কাঁপছিল। তিনি খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদের নিকট বললেন, আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত কর, আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত কর, তারা তাকে চাদর দ্বারা আবৃত করলেন, এমনকি তাঁর শংকা দূর হল। তিনি খাদিজার নিকট ঘটনাবৃত্তান্ত জানিয়ে বললেন, আমি আমার জীবন নিয়ে শংকা বোধ করছি। খাদিজা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম কখনোই নয়। আল্লাহ আপনাকে কখনোই লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায় দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক পথের দুর্দশাগ্রস্থকে সাহায্য করেন। (সহীহ বুখারী-০৩)

উপরোক্ত হাদিসে উম্মুল মুমিনীন খাদিজা (রাঃ) মহানবী (সাঃ) সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তা এমনি এমনি শুধু স্বামীকে সান্তনা দেয়ার জন্য বলেননি কিংবা স্বামীর প্রতি ভালোবাসার আতিশয্যে এমন মন্তব্য করেননি বরং তিনি কাছে থেকে রাসূল (সাঃ) এর স্বভাব ও কর্মকান্ড প্রত্যক্ষ করেই যথাযথ মন্তব্য করেছেন। তিনি দেখেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত না হয়েও স্বেচ্ছায় স্বউদ্যোগে মাত্র ১৭ বছর বয়সে মানবতার কল্যাণে হিলফুল ফুযুল গঠন করেছেন। অতএব তাঁর মন্তব্য যথাযথ ছিল।

মানবসেবার উজ্জল নিদর্শন:

হিলফুল ফুযুল এর শর্তাবলী মানবসেবার উজ্জল নিদর্শন হিসেবে বিশ্ব মানবতার জন্য:

ক। মাযলুম ও অসহায়দের সাহায্য করা।

খ। সমাজে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখা।

গ। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে মৈত্রী ও প্রীতির বন্ধন স্থাপন করা।

ঘ। পথিক ও মুসাফিরদের জান মালের নিরাপত্তা বিধান করা।

ঙ। কোন জালেমকে মক্কায় প্রবেশ করতে না দেয়া।

 

মানু সেবার বিভিন্ন দিক:

মানষতো মানুষের জন্য তাই সেবা সকলের জন্য উম্মক্ত মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَبِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَى وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْبِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ مَنْ كَانَ مُخْتَالًا فَخُورًا

তোমরা উপাসনা কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর পিতা-মাতার সাথে, নিকট আত্মীয়ের সাথে, ইয়াতীম, মিসকীন, নিকট আত্মীয় প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, পাশর্^বর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভূক্ত দাস-দাসীদের সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক ও অহংকারীকে পছন্দ করেন না। (সূরা নিসা-৪/৩৬)

ক.নেতা হলেন সম্প্রদায়ের সেবক:

عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: سَيِّدُ الْقَوْمِ فِي السَّفَرِ خَادِمُهُمْ، فَمَنْ سَبَقَهُمْ بِخِدْمَةٍ لَمْ يَسْبِقُوهُ بِعَمَلٍ إِلَّا الشَّهَادَةَ ذَكَرَهُ فِي تَرْجَمَةِ أَبِي الْحَسَنِ النَّيْسَابُورِيُّ الصَّفَّارُ مِنْ فُقَهَاءِ أَصْحَابِ الرَّأْيِ، وَمِنْ أَهْلِ الْوَرَعِ مِنْهُمْ

সহল ইবনে সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সাঃ) বলেছেন, সম্প্রদায়ের নেতা সফরে তাদের সেবক। যে ব্যক্তি সেবার মাধ্যমে এগিয়ে যায়, তার মত আর কেউ এগোতে পারে না শহীদ ব্যতীত। (বায়হাক্বী-৮০৫০)

. ক্ষুধার্তকে খাদ্যদান করা:

عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَطْعِمُوا الجَائِعَ، وَعُودُوا المَرِيضَ، وَفُكُّوا العَانِيَ

আবু মূসা আল আশয়ারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা ক্ষুধার্তকে অন্য দাও, রোগীর সেবা কর এবং কষ্টে পতিতকে উদ্ধার কর। (বুখারী-৫৬৪৯)

فِي جَنَّاتٍ يَتَسَاءَلُونَ عَنِ الْمُجْرِمِينَ مَا سَلَكَكُمْ فِي سَقَرَ قَالُوا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّينَ وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ الْمِسْكِينَ وَكُنَّا نَخُوضُ مَعَ الْخَائِضِينَ وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ الدِّينِ حَتَّى أَتَانَا الْيَقِينُ

তারা থাকবে জান্নাতে এবং পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। অপরাধীদের সম্পর্কে বলবেঃ তোমাদেরকে কিসে জাহান্নামে নীত করেছে? তারা বলবেঃ আমরা নামায পড়তাম না, অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দিতাম না, আমরা সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম এবং আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম। আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত। (সূরা মুদ্দাসসির-৭৪/৪০-৪৭)

فَلَا اقْتَحَمَ الْعَقَبَةَ وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْعَقَبَةُ فَكُّ رَقَبَةٍ أَوْ إِطْعَامٌ فِي يَوْمٍ ذِي مَسْغَبَةٍ يَتِيمًا ذَا مَقْرَبَةٍ أَوْ مِسْكِينًا ذَا مَتْرَبَةٍ ثُمَّ كَانَ مِنَ الَّذِينَ آمَنُوا وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ وَتَوَاصَوْا بِالْمَرْحَمَةِ أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ وَالَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِنَا هُمْ أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ عَلَيْهِمْ نَارٌ مُؤْصَدَةٌ

অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি। আপনি জানেন, সে ঘাঁটি কি? তা হচ্ছে দাসমুক্তি অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে অন্নদান। এতীম আত্মীয়কে অথবা ধুলি-ধুসরিত মিসকীনকে অতঃপর তাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া, যারা ঈমান আনে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় সবরের ও উপদেশ দেয় দয়ার। তারাই সৌভাগ্যশালী। আর যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে তারাই হতভাগা। তারা অগ্নি পরিবেষ্টিত অবস্থায় বন্দী থাকবে। (সূরা বালাদ-৯০/১১-২০)

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন,

وَأَمَّا إِذَا مَا ابْتَلَاهُ فَقَدَرَ عَلَيْهِ رِزْقَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَهَانَنِ كَلَّا بَلْ لَا تُكْرِمُونَ الْيَتِيمَ وَلَا تَحَاضُّونَ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ وَتَأْكُلُونَ التُّرَاثَ أَكْلًا لَمًّا وَتُحِبُّونَ الْمَالَ حُبًّا جَمًّا كَلَّا إِذَا دُكَّتِ الْأَرْضُ دَكًّا دَكًّا وَجَاءَ رَبُّكَ وَالْمَلَكُ صَفًّا صَفًّا

যখন তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর রিযিক সংকুচিত করে দেন, তখন বলেঃ আমার পালনকর্তা আমাকে হেয় করেছেন। এটা অমূলক, বরং তোমরা এতীমকে সম্মান কর না। মিসকীনকে অন্নদানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না এবং তোমরা মৃতের ত্যাজ্য সম্পত্তি সম্পূর্ণরূপে কুক্ষিগত করে ফেল এবং তোমরা ধন-সম্পদকে প্রাণভরে ভালোবাস। এটা অনুচিত। যখন পৃথিবী চুর্ণ-বিচুর্ণ হবে এবং আপনার পালনকর্তা ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে উপস্থিত হবেন। (সূরা ফজর-৮৯/১৬-২২)

অন্য আয়াতে এসেছে,

أَرَأَيْتَ الَّذِي يُكَذِّبُ بِالدِّينِ فَذَلِكَ الَّذِي يَدُعُّ الْيَتِيمَ وَلَا يَحُضُّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ فَوَيْلٌ لِلْمُصَلِّينَ الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ الَّذِينَ هُمْ يُرَاءُون وَيَمْنَعُونَ الْمَاعُونَ

আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচার দিবসকে মিথ্যা বলে? সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে গলা ধাক্কা দেয় এবং মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না। অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর, যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর; যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে এবং নিত্য ব্যবহার্য বস্তু অন্যকে দেয় না। (সূরা মাঊন-১০৭/০১-০৭)

গ.ইয়াতিমের লালন-পালন করা উত্তম মানবসেবা:

عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَا وَكَافِلُ اليَتِيمِ فِي الجَنَّةِ كَهَاتَيْنِ، وَأَشَارَ بِأُصْبُعَيْهِ يَعْنِي: السَّبَّابَةَ وَالوُسْطَى

সহল ইবনে সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সাঃ) বলেছেন, আমি এবং ইয়াতীমের তত্ত্বাবধানকারী এই দুই আঙ্গুলের অনুরূপ জান্নাতে বসবাস করব। এই কথা বলে তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে দেখান। (তিরমিযী-১৯১৮)

ঘ.ভাই ভাইয়ের সেবা করা:

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ

মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও। (সূরা হুজরাত-৪৯/১০)

হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَخْبَرَهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: المُسْلِمُ أَخُو المُسْلِمِ لاَ يَظْلِمُهُ وَلاَ يُسْلِمُهُ، وَمَنْ كَانَ فِي حَاجَةِ أَخِيهِ كَانَ اللَّهُ فِي حَاجَتِهِ، وَمَنْ فَرَّجَ عَنْ مُسْلِمٍ كُرْبَةً، فَرَّجَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرُبَاتِ يَوْمِ القِيَامَةِ، وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ يَوْمَ القِيَامَةِ

আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সাঃ) বলেছেন, মুসলমান মুসলমানের ভাই। সে তার উপর যুলুম করবে না এবং তাকে যালিমের হাতে সোপর্দ করবে না। যে কেউ তার ভাইয়ের অভাব পূর্ণ করবে, আল্লাহ তার অভাব পূর্ণ করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতে তার বিপদ দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ ঢেকে রাখবে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন। (সহীহ বুখারী-২৪৪২)

ঙ.রোগীর সেবা করা:

عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَعُودُ مُسْلِمًا غُدْوَةً إِلاَّ صَلَّى عَلَيْهِ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ حَتَّى يُمْسِيَ، وَإِنْ عَادَهُ عَشِيَّةً إِلاَّ صَلَّى عَلَيْهِ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ حَتَّى يُصْبِحَ، وَكَانَ لَهُ خَرِيفٌ فِي الجَنَّةِ

আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, কোন মুসলমান যদি অন্য কোন মুসলিম রোগীকে সকাল বেলা দেখতে যায়, তাহলে সত্তর হাজার ফেরেশতা তার জন্য সন্ধা পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে। সে যদি সন্ধায় তাকে দেখতে যায় তবে সত্তর হাজার ফেরেশতা ভোর পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকে এবং জান্নাতে তার জন্য একটি ফলের বাগান তৈরী হয়। (তিরমিযী-৯৬৯)

চ. হাশরের দিন আল্লাহর জিজ্ঞাসা:

عَنْ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ: يَا ابْنَ آدَمَ مَرِضْتُ فَلَمْ تَعُدْنِي، قَالَ: يَا رَبِّ كَيْفَ أَعُودُكَ؟ وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ، قَالَ: أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ عَبْدِي فُلَانًا مَرِضَ فَلَمْ تَعُدْهُ، أَمَا عَلِمْتَ أَنَّكَ لَوْ عُدْتَهُ لَوَجَدْتَنِي عِنْدَهُ؟

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ কিয়ামতের দিন বলবেন, হে আদম সন্তান! আমি অসুস্থ হয়েছিলাম কিন্তু তুমি আমার সেবা শুশ্রুষা করনি। সে বলবে, হে পরওয়ারদিগার! আমরা কি করে তোমার সেবা শুশ্রুষা করব, অথচ তুমি সারা জাহানের প্রতিপালক। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দাহ অসুস্থ হয়েছিল, তুমি তার সেবা করনি। তুমি কি জানতে না যে, তুমি তার সেবা শুশ্রুষা করলে আমাকে তার কাছেই পেতে। (সহীহ মুসলিম-৬৪৫০)

 

আমার মনে পড়ে গেল কবির কবিতা খানি-

মানুষের সেবা

             (-আব্দুল কাদির)

হাশরের দিন বলিবেন খোদা- হে আদম সন্তান

তুমি মোরে সেবা কর নাই যবে ছিনু রোগে অজ্ঞান।

মানুষ বলিবে- তুমি প্রভু করতার,

আমরা কেমনে লইব তোমার পরিচর্যার ভার?

বলিবেন খোদা- দেখনি মানুষ কেঁদেছে রোগের ঘোরে,

তারি শুশ্রুষা করিলে তুমি সেথায় পাইতে মোরে।

প্রসংগত হাদীছ খানা মনে হলো-

يَا ابْنَ آدَمَ اسْتَطْعَمْتُكَ فَلَمْ تُطْعِمْنِي، قَالَ: يَا رَبِّ وَكَيْفَ أُطْعِمُكَ؟ وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ، قَالَ: أَمَا عَلِمْتَ أَنَّهُ اسْتَطْعَمَكَ عَبْدِي فُلَانٌ، فَلَمْ تُطْعِمْهُ؟ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّكَ لَوْ أَطْعَمْتَهُ لَوَجَدْتَ ذَلِكَ عِنْدِي،

হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলাম কিন্তু তুমি আমাকে খেতে দাওনি। সে বলবে, হে আমার পরওয়ারদিগার! আমি কি করে তোমাকে আহার করাতে পারি? তুমি তো সারা জাহানের প্রতিপালক। তিনি বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দাহ তোমার কাছে আহার চেয়েছিল? তুমি তাকে খেতে দাওনি। তুমি কি জানতে না যে, যদি তুমি তাকে আহার করাতে তাহলে অবশ্যই তা আমার কাছে পেতে। (সহীহ মুসলিম-৬৪৫০)

খোদা বলিবেন- হে আদম সন্তান,

আমি চেয়েছিনু ক্ষুধায় অন্ন, তুমি কর নাই দান।

মানুষ বলিবে- তুমি জগতের প্রভু,

আমরা কেমনে খাওয়াব তোমারে, সে কাজ কি হয় কভু?

বলিবেন খোদা- ক্ষুধিত বান্দা গিয়েছিল তব দ্বারে,

মোর কাছে তুমি ফিরে পেতে তাহা যদি খাওয়াইতে তারে।

অন্য হাদীছে এসেছে,

يَا ابْنَ آدَمَ اسْتَسْقَيْتُكَ، فَلَمْ تَسْقِنِي، قَالَ: يَا رَبِّ كَيْفَ أَسْقِيكَ؟ وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ، قَالَ: اسْتَسْقَاكَ عَبْدِي فُلَانٌ فَلَمْ تَسْقِهِ، أَمَا إِنَّكَ لَوْ سَقَيْتَهُ وَجَدْتَ ذَلِكَ عِنْدِي

হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে পানীয় চেয়েছিলাম কিন্তু তুমি আমাকে পানি পান করাওনি। সে বলবে, হে আমার পরওয়ারদিগার! আমি কি করে তোমাকে পানি পান করাব, অথচ তুমি সারা জাহানের প্রতিপালক? তিনি বলবেন, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানীয় চেয়েছিল, তুমি তাকে পান করাওনি। যদি তুমি তাকে পান করাতে, তবে তা আমার কাছে পেয়ে যেতে। (সহীহ মুসলিম-৬৪৫০)

পুনরপি খোদা বলিবেন- শোন হে আদম সন্তান,

পিপাসিত হয়ে গিয়েছিনু আমি, করাওনি জল পান।

মানুষ বলিবে- তুমি জগতের স্বামী,

তোমারে কেমনে পিয়াইব বারি, অধম বান্দা আমি?

বলিবেন খোদা- তৃষ্ণার্ত তোমা ডেকেছিল জল আশে,

তারে যদি জল দিতে তুমি তাহা পাইতে আমার পাশে।

ছ.সরকারী চাকুরী মানবসেবা:

عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، أَلَا تَسْتَعْمِلُنِي؟ قَالَ: فَضَرَبَ بِيَدِهِ عَلَى مَنْكِبِي، ثُمَّ قَالَ: يَا أَبَا ذَرٍّ، إِنَّكَ ضَعِيفٌ، وَإِنَّهَا أَمَانَةُ، وَإِنَّهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ خِزْيٌ وَنَدَامَةٌ، إِلَّا مَنْ أَخَذَهَا بِحَقِّهَا، وَأَدَّى الَّذِي عَلَيْهِ فِيهَا

আবু যর (রাঃ) বলেন, আমি আবেদন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আমাকে প্রশাসক পদ প্রদান করবেন? রাবী বলেন, তিনি তখন তার হাত দিয়ে আমার কাঁধে আঘাত করে বললেন, হে আবু যর! তুমি দুর্বল অথচ এটি হচ্ছে একটি আমানত। আর কিয়ামতের দিন এ হবে লাঞ্ছনা ও অনুশোচনা। তবে যে এর হক্ব সঠিকভাবে আদায় করবে তার কথা ভিন্ন। (মুসলিম-৪৬১৩)

জ.রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা মানবসেবা:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الْإِيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ - أَوْ بِضْعٌ وَسِتُّونَ - شُعْبَةً، فَأَفْضَلُهَا قَوْلُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَأَدْنَاهَا إِمَاطَةُ الْأَذَى عَنِ الطَّرِيقِ، وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الْإِيمَانِ

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ঈমানের শাখা সত্তরটিরও বেশী অথবা ষাটটির কিছু বেশী। এর সর্বোচ্চ শাখা হচ্ছে আল্লাহ ব্যতীত ইলাহ নেই এ কথা স্বীকার করা। আর সর্বনি¤œ শাখা হচ্ছে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা। (মুসলিম-৫৯)

ঝ.সকল প্রাণীর সেবা:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَّ رَجُلًا رَأَى كَلْبًا يَأْكُلُ الثَّرَى مِنَ العَطَشِ، فَأَخَذَ الرَّجُلُ خُفَّهُ، فَجَعَلَ يَغْرِفُ لَهُ بِهِ حَتَّى أَرْوَاهُ، فَشَكَرَ اللَّهُ لَهُ، فَأَدْخَلَهُ الجَنَّةَ

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: পূর্ব যুগে জনৈক ব্যক্তি একটি কুকুরকে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় ভিজা মাটি চাটতে দেখে তার মোজা নিল এবং কুকুরটির জন্য কুয়া থেকে পানি এনে দিতে লাগল যতক্ষণ সে ওর তৃষ্ণা মিটাল। আল্লাহ এর বিনিময় দিলেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালেন। (বুখারী-১৭৩, ২৩৬৬)

বিড়ালকে কষ্ট দিয়ে মারার জন্য এক মহিলা জাহান্নামী হয়েছে:

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: عُذِّبَتِ امْرَأَةٌ فِي هِرَّةٍ حَبَسَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ جُوعًا، فَدَخَلَتِ فِيهَا النَّارَ، يُقَالُ، وَاللَّهُ أَعْلَمُ: لَا أَنْتِ أَطْعَمْتِيهَا، وَلَا سَقِيتِيهَا حِينَ حَبَسْتِيهَا، وَلَا أَنْتِ أَرْسَلْتِيهَا، فَأَكَلَتْ مِنْ خَشَاشِ الْأَرْضِ

আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : এক নারী একটি বিড়ালের কারণে দোযখের শাস্তি প্রাপ্ত হয়। সে সেটিকে বেঁধে রেখেছিল, ফলে অনাহারে তার মৃত্যু হয় এবং এ কারণে উক্ত নারী দোযখে যায়। তাকে বলা হবে, আল্লাহ অধিক অবগত, তুই একে আটকে রাখা অবস্থায় না একে খাদ্য ও পানীয় দিয়েছো আর না একে ছেড়ে দিয়েছো যে, পোকা-মাকড় খেয়ে তার জীবন রক্ষা করতে পারতো। (আল আদাবুল মুফরাদ-৩৭৯)

ঞ.সকল সৃষ্টির সেবা কর:

عَن أَنَس؛ أَن النَّبِيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيه وَسَلَّم قَالَ: الْخَلْقُ عِيَالُ اللَّهِ , وَأَحَبُّهُمْ إِلَى اللَّهِ أَنْفَعُهُمْ لعياله

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: সকল সৃষ্টি আল্লাহর পরিবার তাদের মধ্যে সেই আল্লাহর কাছে বেশী প্রিয় যে তাঁর সৃষ্টির বেশী উপকার করে। (মুসনাদে বাযযার-৬৯৪৭)

 

উপসংহার:

আজকের আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে, মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। তার পাশে কোন মানুষ অসহায় অবস্থায় থাকতে পারে না। তাদের সেবা করে অসহায়ত্ব দূর করতে হবে। মহান আল্লাহ সকলকে সে তাওফীক দান করুন।

 

No comments:

Post a Comment

razzakhowlader59@gmil.com