ফাতেহা-ই-ইয়াজদহম কী?
-এম এ রাজ্জাক হাওলাদার
প্রতি বছর রবিউস সানি মাসের ১১তারিখ ‘‘ফাতেহা-ই-ইয়াজদহম’’ পালন করা হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই
হয়তো জানিনা
ফাতেহা-ই-ইয়াজদহম কী? ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম হলো বড় পীর হজরত আবদুল কাদির জিলানী
রহ. এর ওফাত দিবস। হিজরি ৫৬১ সনের ১১ রবিউস সানি তিনি ইন্তিকাল করেন।
ইয়াজদাহম’ ফারসি শব্দ, যার অর্থ এগারো; ‘ফাতিহা-ই-ইয়াজদাহম’ বলতে এগারো এর ফাতিহা শরিফকে বোঝায়। ফারসি ভাষার প্রভাবে
বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান উপমহাদেশসহ আফগানিস্তান, ইরান, বৃহৎ
রাশিয়ার মুসলিম-অধ্যুষিত অঞ্চল, ইরাক
প্রভৃতি স্থানে ‘ফাতিহা-ই ইয়াজদাহম’
অর্থাৎ এগারো এর ফাতিহা নামে
উদ্যাপিত হয়।এই পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম ইমামুল আউলিয়া হজরত মুহিউদ্দিন আবদুল
কাদের জিলানি (র.)-এর স্মরণে পালিত হয়।
ওলিকুল
শিরোমণি আব্দুল কাদের জিলানি (রহঃ) ১০৭৭ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ৪৭০ হিজরি সালের ১
রমজান ইরাকের বাগদাদের প্রায় ৪০০ মাইল অদূরে জিলান নগরের সুবিখ্যাত সাইয়্যেদ
পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হজরত সাইয়্যেদ আবু সালেহ মুসা। মাতার নাম
উম্মুল খায়ের ফাতেমা। তার বাবার বংশ হজরত ইমাম হাসান (রা.)-এর সঙ্গে এবং মায়ের
বংশ হজরত ইমাম হোসাইন (রা.)-এর সঙ্গে মিলিত হয়; এ কারণে তাকে ‘আল-হাসানি ওয়া আল-হোসাইনি’ বলা হয়।পিতৃকুল-মাতৃকুল উভয় দিক থেকেই হজরত আলী (রা.)-এর
বংশধর অর্থাৎ মহানবী (সা.) এর বংশধর। জিলান
শহরের অধিবাসী বিধায় তার নামের শেষে ‘জিলানী’ উপাধি
সংযুক্ত করা হয়। তার মিষ্টভাষী বক্তৃতা, প্রাঞ্জল ভাষায় আল্লাহর বাণী প্রচার করার দ্বারা বড় পীর
কোটি কোটি মানুষকে ইসলামের পথে ফিরিয়ে আনেন এবং সমকালীন বিশ্বে আউলিয়া কিরামের
ওপর সুউচ্চ মর্যাদা লাভ করেন। সারা বিশ্বের মধ্যে তার ভক্ত ও মুরিদের সংখ্যা
সবচেয়ে বেশি বলে খ্যাতি ছিল। আল্লাহ তাকে সব ওলির চেয়ে অধিক কারামত দান
করেছিলেন। ফলে
আল্লাহর দ্বীনকে দুনিয়াতে
ছড়িয়ে দেয়া
সহজতর হয়েছিলো।
ইসলামের
চির আলোকময় পথে ডাকার জন্য তিনি অনেক ওয়াজ-নসিহতও করেছেন; যাতে ছিল বিস্ময়কর প্রভাব। তার প্রতিটি কথা মানুষের হৃদয়ে
দারুণভাবে গেঁথে যেত,
তাদের পরকালের চিন্তায়
বিভোর করে তুলত।
সারা জীবন পথহারা মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়ে আল্লাহ প্রেমিক মহান সাধক, ওলিকুল শিরোমণি ১১৬৮ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ৫৬১ হিজরির ১১ রবিউস সানি ৯১ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
No comments:
Post a Comment
razzakhowlader59@gmil.com