Friday, November 05, 2021

আদর্শ যুবকের বৈশিষ্ট্য

 


আদর্শ যুবকের বৈশিষ্ট্য

এম এ রাজ্জাক হাওলাদার

শুরুকথা:

যুবকরা যেকোন কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। বয়স্ক লোকদের নিকট যে কাজটা কঠিন, সে কাজটা যুবকদের নিকট সহজ। যুবকদের মূল্যবান সময়টা বিভিন্ন খারাপ কাজে অতিবাহিত না করে, কল্যাণকর কাজে অতিবাহিত করতে হবে। যাতে করে ক্বিয়ামতের কঠিন দিনে জওয়াব দেওয়া সহজ হয়। কতিপয় গুণাবলী অর্জন করতে পারলে ইহকালে শান্তি মিলবে এবং পরকালেও পাওয়া যাবে নাজাত। আর এই গুণাবলী সম্পন্ন যুবককে আদর্শ যুবক বলে অভিহিত করা যায়। নিম্নে আদর্শ যুবকের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গুণ সম্পর্কে আলোচনা পেশ করা হল।-

আল্লাহকে ভয় করা :

আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন, يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوْا رَبَّكُمْ إِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ شَيْءٌ عَظِيْمٌ، يَوْمَ تَرَوْنَهَا تَذْهَلُ كُلُّ مُرْضِعَةٍ عَمَّا أَرْضَعَتْ وَتَضَعُ كُلُّ ذَاتِ حَمْلٍ حَمْلَهَا وَتَرَى النَّاسَ سُكَارَى وَمَا هُمْ بِسُكَارَى وَلَكِنَّ عَذَابَ اللهِ شَدِيْدٌ. ‘হে মানব মন্ডলী! তোমরা ভয় কর তোমাদের প্রতিপালককে। নিঃসন্দেহে ক্বিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়ানক ব্যাপার। যেদিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে, সেইদিন প্রত্যেক স্তন্যদাত্রী বিস্মৃত হবে তার দুগ্ধপোষ্য শিশুকে এবং প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করে ফেলবে। মানুষকে দেখবে মাতাল সদৃশ, যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্ত্ততঃ আল্লাহর শাস্তি কঠিন (সূরা হজ্জ ২২/১-২)

আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা প্রকৃত ভীতি সহকারে আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না (আলে ইমরান ৩/১০২)অন্যত্র তিনি আরো বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক যে, আগামীকালের জন্য সে কি অগ্রিম পাঠিয়েছে। আর আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত (সূরা হাশর ৫৯/১৮)

আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত নবী করীম (স.) বলেছেন, ‘সাত প্রকারের লোককে আল্লাহ নিজের ছায়ায় আশ্রয় দিবেন, যে দিন তাঁর ছায়া ছাড়া অন্য কোন ছায়া থাকবে না। সেই সাত প্রকারের লোক হচ্ছে- (১) ন্যায়পরায়ণ শাসক। (২) যে যুবক তার প্রভুর ইবাদতে যৌবন কাটিয়েছে। (৩) যে ব্যক্তির মন মসজিদের সাথে বাঁধা। (৪) যে দুই লোক আল্লাহরই উদ্দেশ্যে একে অপরকে ভালবাসে। তারা আল্লাহর উদ্দেশ্যেই মিলিত হয়, আবার আল্লাহর উদ্দেশ্যেই বিচ্ছিন্ন হয়। (৫) যে ব্যক্তি অভিজাত ঘরের রূপসী নারীর আহবানকে এই বলে প্রত্যাখ্যান করে যে, আমি আল্লাহকে ভয় করি। (৬) যে ব্যক্তি এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত কি খরচ করে তার বাম হাত তা জানতে পারে না। (৭) যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার চক্ষুদ্বয় থেকে অশ্রুধারা বইতে থাকে[1]

আল্লাহর পথে ব্যয় করা :

আল্লাহ তাআলা বলেন, وَأَنْفِقُواْ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَلاَ تُلْقُوْا بِأَيْدِيْكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِতোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় কর এবং স্বীয় হাত ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিও না (সূরা বাক্বারাহ-২/১৯৫) অন্যত্র তিনি বলেন, ‘যারা আল্লাহর পথে স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা যেমন একটি শস্যবীজ, তা হতে উৎপন্ন হল সাতটি শীষ। প্রত্যেক শীষে (উৎপন্ন হল) শত শস্য এবং আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা করেন বর্ধিত করে দেন। বস্ত্ততঃ আল্লাহ হচ্ছেন বিপুল দাতা মহাজ্ঞানী (সুরা বাক্বারাহ-২/২৬১) আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের জান, মাল ক্রয় করেছেন জান্নাতের বিনিময়ে (সূরা তওবা-৯/১১১)

অর্থ কুরবানীর ন্যায় সময় ও শ্রম কুরবানীতেও অশেষ ছওয়াব রয়েছে। এ মর্মে রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, لَغَدْوَةٌ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ أَوْ رَوْحَةٌ خَيْرٌ مِّنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَاআল্লাহর পথে একটা সকাল অথবা একটা সন্ধ্যা ব্যয় করা দুনিয়া ও এর মধ্যস্থিত সমস্ত সম্পদ থেকে উত্তম[2] রাসূলুল্লাহ (স.) আরো বলেন, مَا اغْبَرَّتْ قَدَمَا عَبْدٍ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ فَتَمَسَّهُ النَّارُ আল্লাহর পথে কোন বান্দার পদদ্বয় ধূলিমলিন হলে তাকে (জাহান্নামের) আগুন স্পর্শ করবে না[3]

আমর বিন মায়মূনা আওদী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) জনৈক ব্যক্তিকে নছীহত স্বরূপ বললেন, পাঁচটি জিনিসের পূর্বে পাঁচটি জিনিসকে মূল্যায়ন কর- (১) বার্ধক্যের পূর্বে যৌবনকে, (২) ব্যস্ততার পূর্বে অবসরকে, (৩) মৃত্যুর পূর্বে জীবনকে, (৪) রোগাক্রান্ত হওয়ার পূর্বে সুস্থতাকে, (৫) দরিদ্রতার পূর্বে সচ্ছলতাকে[4]

পরকালের জন্য প্রস্ত্ততি :

মৃত্যুর পরেই মানুষের পরকালীন জীবনের হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে যায়। আর প্রত্যেক আত্মাকে মরতেই হবে। আল্লাহ বলেন, كُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَةُ الْمَوْتِপ্রত্যেক আত্মাকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে (সূরা আলে ইমরান-১৮৫) মরণের সময় মানুষের কৃতকর্মই তার সাথী হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, وَجَاءَتْ كُلُّ نَفْسٍ مَّعَهَا سَائِقٌ وَّشَهِيْدٌপ্রত্যেক ব্যক্তি আগমন করবে, তার সাথে থাকবে চালক ও কর্মের সাক্ষী (সূরা কাফ-৫০/২১) যে শয়তানের প্ররোচনায় মানুষ দুনিয়াতে পাপাচার করে, সে আল্লাহর কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলবে, আমি তাকে পাপ কাজে লিপ্ত করিনি; বরং সে নিজেই পাপ করেছে। আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, قَالَ قَرِيْنُهُ رَبَّنَا مَا أَطْغَيْتُهُ وَلَكِنْ كَانَ فِيْ ضَلاَلٍ بَعِيْدٍতার সঙ্গী শয়তান বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমি তাকে অবাধ্যতায় লিপ্ত করিনি। বস্ত্ততঃ সে নিজেই ছিল সুদূর পথভ্রান্তিতে লিপ্ত (সূরা কাফ-৫০/২৭)

পরকালে প্রত্যেকে স্বীয় কর্ম দেখতে পাবে। আল্লাহ বলেন, ‘অতএব কেউ অণুপরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে এবং কেউ অণুপরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে (সূরা যিলযাল-৯৯/৭-৮) ইহকাল ক্ষণস্থায়ী ও পরকাল চিরস্থায়ী। আল্লাহ বলেন, وَالْآخِرَةُ خَيْرٌ وَأَبْقَىঅথচ আখেরাতের জীবনই উত্তম ও চিরস্থায়ী (সূরা আলা-৮৭/১৭)

মুস্তাওরিদ বিন শাদ্দাদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (স.)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহর কসম! আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার উদাহরণ হ, যেমন তোমাদের কেউ মহাসাগরের মধ্যে নিজের একটি আঙ্গুল ডুবিয়ে দেয়, অতঃপর সে লক্ষ্য করে দেখুক তা কি (পরিমাণ পানি) নিয়ে আসল[5] মহাসাগরের পানিকে পরকালের সাথে তুলনা করা হয়েছে। আর আঙ্গুলের পানি দ্বারা দুনিয়া বুঝানো হয়েছে। বস্ত্তত দুনিয়া অল্প কয়েক দিনের আর পরকাল চিরস্থায়ী।

হাশরের দিন অত্যন্ত ভয়াবহ হবে। এই দিনের ভয়াবহতা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, فَكَيْفَ تَتَّقُوْنَ إِنْ كَفَرْتُمْ يَوْماً يَّجْعَلُ الْوِلْدَانَ شِيْباًঅতএব তোমরা যদি কুফরী কর, তবে কি করে আত্মরক্ষা করবে সেই দিন, যেই দিন কিশোরকে পরিণত করবে বৃদ্ধে (সূরা মুযযাম্মিল-৭৩/১৭)

মিকদাদ ইবনে আসওয়াদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘ক্বিয়ামতের দিন সূর্যকে মানুষের অতি নিকটবর্তী করা হবে। এমনকি তা এক মাইল পরিমাণ তাদের নিকটে হবে। তখন মানুষ সূর্যের তাপে আপন আপন আমল অনুযায়ী ঘামের মধ্যে ডুবে থাকবে। ঘাম কারো টাখনু পর্যন্ত হবে, কারো হাঁটু পর্যন্ত হবে, কারো ঘাম কোমর পর্যন্ত হবে। আর কারো জন্য এই ঘাম লাগাম হয়ে যাবে। একথাটি বলে নবী করীম (স.) নিজের মুখের দিকে হাত দ্বারা ইশারা করলেন[6]

রাসূলুল্লাহ (স.) আরো বলেন, يَعْرَقُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يَذْهَبَ عَرَقُهُمْ فِى الأَرْضِ سَبْعِيْنَ ذِرَاعًا، وَيُلْجِمُهُمْ حَتَّى يَبْلُغَ آذَانَهُمْক্বিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ ঘর্মাক্ত হয়ে পড়বে। এমনকি তাদের ঘাম যমীনের সত্তর গজ পর্যন্ত ছড়িয়ে যাবে। ঘাম তাদের লাগাম হয়ে যাবে, এমনকি তা তাদের কান পর্যন্ত পৌঁছবে[7]

ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (স.) আমার শীররের এক অংশ ধরে বললেন, ‘পৃথিবীতে অপরিচিত অথবা পথযাত্রীর ন্যায় জীবন যাপন কর। আর প্রতিনিয়ত নিজেকে কবরবাসী মনে কর[8] ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, ক্বিয়ামতের দিন আদম সন্তানকে পাঁচটি প্রশ্নের জওয়াব না দেওয়া পর্যন্ত এক কদম নড়তে দেওয়া হবে না। (১) জীবনকাল কিভাবে অতিবাহিত করেছে, (২) যৌবনকাল কোন পথে ব্যয় করেছে, (৩) কোন পথে সম্পদ আয় করেছে, (৪) কোন পথে তা ব্যয় করেছে, (৫) ইলম অনুযায়ী আমল করছে কি-না’?[9] সুতরাং পরকালীন জীবনে নাজাতের জন্য প্রস্ততি গ্রহণ করা আদর্শ যুবকের বৈশিষ্ট্য।

ভাল কাজ করা :

ভাল কাজ তথা সৎকাজ করা আদর্শ যুবকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সৎকাজের মূল হল ঈমান আনা। আল্লাহ তাআলা বলেন, وَالَّذِيْنَ آمَنُوْا وَاتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُم بِإِيْمَانٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَمَا أَلَتْنَاهُم مِّنْ عَمَلِهِم مِّنْ شَيْءٍ كُلُّ امْرِئٍ بِمَا كَسَبَ رَهِيْنٌ. ‘আর যারা ঈমান আনে এবং তাদের সন্তান-সন্ততি ঈমানে তাদের অনুগামী হয়, তাদের সাথে মিলিত করবো তাদের সন্তান-সন্ততিকে এবং তাদের কর্মফল, আমি কিছুমাত্র হ্রাস করবো না। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী (সূরা তূর-৫২/২১)

ঈমানদার যুবকদের উদাহরণ পেশ করে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা ছিল কয়েক জন যুবক, তারা তাদের প্রতিপালকের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল এবং আমি তাদের সৎপথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করেছিলাম (সূরা কাহফ-১৮/১৩)

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘মানুষ যখন মরে যায়, তখন তার সমস্ত আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়, তিনটি আমল ব্যতীত, (১) ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ (২) উপকারী জ্ঞান (৩) সৎ সন্তান, যে তার জন্য দোআ করে।[10] সুতরাং মৃত্যু পরবর্তী জীবনের জন্য ভাল কাজ করে যেতে হবে। মানুষের কর্মফল সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, لِيَجْزِيَ الَّذِيْنَ أَسَاؤُوْا بِمَا عَمِلُوْا وَيَجْزِيَ الَّذِيْنَ أَحْسَنُوْا بِالْحُسْنَىযারা মন্দ কর্ম করে তাদেরকে তিনি দেন মন্দ ফল এবং যারা সৎকর্ম করে তাদেরকে দেন উত্তম পুরস্কার (সূরা নাজম-৫৩/৩১)

উত্তম চরিত্র গঠন করা :

আদর্শবান হওয়ার জন্য উত্তম চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন করা অতি যরূরী। আর উত্তম চরিত্রের মূর্ত প্রতীক ছিলেন নবী করীম (স.)রাসূলুল্লাহ (স.)-কে লক্ষ্য করে আল্লাহ তাআলা বলেন, وَإِنَّكَ لَعَلى خُلُقٍ عَظِيمٍতুমি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী (সূরা কলম-৬৮/৪) অন্যত্র তিনি বলেন,

لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَنْ كَانَ يَرْجُو اللهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللهَ كَثِيْراً

তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (স.)-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ (সূরা আহযাব-৩৩/২১)

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি দশ বছর যাবত রাসূলুল্লাহ (স.)-এর সেবা করছি। তিনি আমার প্রতি কখনো উহশব্দটিও উচ্চারণ করেননি। তিনি আমার কোন কাজে কখনো অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেননি যে, এটা তুমি করলে না কেন অথবা কোন কাজ ছুটে যাওয়ার কারণেও তিনি বলেননি যে, এটা তুমি কেন করলে না।[11]

আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.)-কে প্রশ্ন করা হল কোন কর্মটি সবচাইতে বেশি পরিমাণে মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে? তিনি বলেন, আল্লাহভীতি, সদাচরণ ও উত্তম চরিত্র। আবার তাঁকে প্রশ্ন করা হল কোন কাজটি সবচাইতে বেশি পরিমাণে মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন, মুখ ও লজ্জাস্থান[12]

আল্লাহ তাআলা বলেন, وَقُل لِّعِبَادِيْ يَقُوْلُوْا الَّتِيْ هِيَ أَحْسَنُ إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْزَغُ بَيْنَهُمْ إِنَّ الشَّيْطَانَ كَانَ لِلإِنْسَانِ عَدُوّاً مُّبِيْنًاআমার বান্দাদেরকে যা উত্তম তা বলতে বল, শয়তান তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উসকানি দেয়। শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু (সূরা ইসরা-১৭/৫৩) তিনি আরো বলেন, ادْفَعْ بِالَّتِيْ هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِيْ بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةٌ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيْمٌমন্দ প্রতিহত কর উৎকৃষ্ট দ্বারা, ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত (সূরা হামীম সাজদাহ-৪১/৩৪)

রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, اتَّقِ اللهَ حَيْثُمَا كُنْتَ وَأَتْبِعِ السَّيِّئَةَ الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا وَخَالِقِ النَّاسَ بِخُلُقٍ حَسَنٍতুমি যেখানেই থাক আল্লাহ তাআলাকে ভয় কর। মন্দ কাজের পরপরই ভাল কাজ কর, তাতে মন্দ দূরীভূত হয়ে যাবে এবং মানুষের সাথে উত্তম আচরণ কর[13] রাসূলুল্লাহ (স.) আরো বলেন, أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِيْنَ إِيْمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا وَخِيَارُكُمْ خِيَارُكُمْ لِنِسَائِهِمْ خُلُقًاতোমাদের মধ্যে ঈমানে পরিপূর্ণ মুসলমান হচ্ছে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তি। যেসব লোক নিজেদের স্ত্রীদের নিকট উত্তম, তারাই তোমাদের মধ্যে অতি উত্তম[14]

অবিচ্ছেদ্য সাক্ষী হতে সাবধান হওয়া :

মানুষ শরীর থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আলাদা করে চলতে পারবে না। এগুলো সব সময় মানুষের সাথে থাকে। অথচ একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে হাত দ্বারা কষ্ট দিয়ে নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানুষ তার হাত-পা দ্বারা যেসব কাজ করে, সেসব কাজের সাক্ষী দিবে তাদের হাত-পা ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন,

الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيْهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوْا يَكْسِبُوْنَ

আমি আজ এদের মুখ বন্ধ করে দিব, এদের হাত কথা বলবে আমার সাথে এবং এদের পা সাক্ষ্য দিবে এদের কৃতকর্মের (সূরা ইয়াসীন-৩৬/৬৫)

আল্লাহ তাআলা অন্য আয়াতে বলেন, ‘যেদিন আল্লাহর শত্রুদেরকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে এবং ওদের বিন্যস্ত করা হবে বিভিন্ন দলে। তারা যখন জাহান্নামের কাছে পেঁŠছবে, তখন তাদের কান, চক্ষু, ত্বক তাদের কর্ম সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে (সূরা হামীম সাজদা-৪১/১৯-২০) তিনি আরো বলেন, যেদিন প্রকাশ করে দিবে তাদের জিহবা, তাদের হাত ও তাদের পা, যা কিছু তারা করত (সূরা নূর-২৪/২৪)

আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (স.)-এর কাছে ছিলাম হঠাৎ তিনি হাসলেন। অতঃপর জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি জান আমি কেন হাসছি? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই বেশি জানেন। তিনি বলেন, ক্বিয়ামতের দিন বান্দা যে তার রবের সাথে সরাসরি কথা বলবে, সে কথাটি স্মরণ করে হাসছি। বান্দা বলবে, হে প্রভু! তুমি কি আমাকে যুলুম থেকে নিরাপত্তা দান করনি? আল্লাহ বলবেন, হ্যাঁ। তখন বান্দা বলবে, আজ আমি আমার সম্পর্কে আপনজন ছাড়া আমার বিরুদ্ধে অন্য কারো সাক্ষ্য গ্রহণ করব না। তখন আল্লাহ বলবেন, আজ তুমি নিজেই তোমার সাক্ষী হিসাবে এবং কেরামান-কাতেবীনের সাক্ষীই তোমার জন্য যথেষ্ট। অতঃপর আল্লাহ তাআলা তার মুখের উপর মোহর লাগিয়ে দিবেন এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বলা হবে, তোমরা বল। তখন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সমূহ তাদের কৃতকর্মসমূহ প্রকাশ করে দিবে। এরপর তার মুখকে খুলে দেওয়া হবে। তখন সে স্বীয় অঙ্গ সমূহকে লক্ষ্য করে আক্ষেপের সাথে বলবে, হে দূরভাগা অঙ্গসমূহ! দূর হও, তোদের ধ্বংস হোক। তোদের জন্যই তো আমি আমার প্রভুর সাথে ঝগড়া করছিলাম[15]

প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেওয়া :

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহর ইবাদত কর তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না। পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহার করো এবং নিকটাত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীনদের সাথে ভাল ব্যবহার কর। নিকট প্রতিবেশী ও দূর প্রতিবেশী এবং সৎকর্মীদের সাথে ভাল ব্যবহার কর। পথিক ও দাস-দাসীদের সাথে ভাল ব্যবহার কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ অহংকারী দাম্ভিককে পসন্দ করেন না (সূরা নিসা-৪/৩৬)

রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন,

وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ، وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ، وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ. قِيلَ وَمَنْ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ الَّذِى لاَ يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَايِقَهُ

আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়। আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়। আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়জিজ্ঞেস করা হ, হে আল্লাহর রাসূল (স.)! কে সেই ব্যক্তি? তিনি বললেন, যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না[16] রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ لاَ يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُসে ব্যক্তি কখনো জান্নাতে যাবে না, যার অন্যায়ের কারণে তার প্রতিবেশী নিরাপদে থাকে না[17] আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহর নিকটে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ঐ ব্যক্তি, যার অনিষ্ট হতে বাঁচার জন্য মানুষ তাকে পরিহার করে[18]

ব্যাভিচার থেকে বেঁচে থাকা :

আল্লাহ তাআলা বলেন, وَلاَ تَقْرَبُواْ الزِّنَى إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَّسَاءَ سَبِيْلاًতোমরা যেনার নিকটবর্তীও হয়ো না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট পথ (সূরা ইসরা-১৭/৩২)

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, ‘যেনাকার নারী-পুরুষ প্রত্যেককে একশবেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান পালনে তাদের উভয়ের প্রতি তোমাদের মনে অনুগ্রহ আনা উচিত নয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও ক্বিয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাসী হও (সূরা নূর-২৪/২)

উবাদাহ ইবনু ছামেত (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তোমরা আমার নিকট হতে আল্লাহর বিধান গ্রহণ করকথাটি রাসূল (স.) দুইবার বললেন, আল্লাহ তাআলা তাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন অবিবাহিত নারী-পুরুষকে একশবেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য নির্বাসন করতে হবে। আর বিবাহিত নারী-পুরুষকে রজমকরতে হবে।[19] রাসূল (স.) আরো বলেন, ‘যেনাকার ও যেনাকারিণী ক্বিয়ামত পর্যন্ত উলঙ্গ অবস্থায় আগুনে জ্বলতে থাকবে[20]

আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর লোকের সাথে আল্লাহ তাআলা ক্বিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদেরকে তিনি পবিত্রও করবেন না। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তারা হচ্ছে- (১) বৃদ্ধ যেনাকার (২) মিথ্যাবাদী শাসক (৩) অহংকারী দরিদ্র ব্যক্তি[21]

রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘মানুষের দুচোখের যেনা দেখা। দুকানের যেনা শুনা। জিহবার যেনা কথা বলা। হাতের যেনা স্পর্শ করা। পায়ের যেনা যেনার পথে চলা। অন্তরের যেনা হচ্ছে আকাঙ্ক্ষা করা। লজ্জাস্থান তার সত্য মিথ্যা প্রমাণ করে[22] ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, অবশ্যই কোন পুরুষ কোন নারীর সাথে নির্জনে একত্রিত হলে তৃতীয়জন হবে শয়তান[23]

রেশমী বস্ত্র, স্বর্ণালংকার এবং নারীদের সাদৃশ্যপূর্ণ পোষাক পরিহার :

রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, مَنْ لَبِسَ الْحَرِيْرَ فِى الدُّنْيَا فَلَنْ يَّلْبَسَهُ فِى الآخِرَةِযে ব্যক্তি দুনিয়াতে রেশমী বস্ত্র পরিধান করবে, সে পরকালে রেশমী বস্ত্র পরিধান করবে না[24] আলী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই স্বর্ণালংকার এবং রেশমী বস্ত্র আমার উম্মতের পুরুষের জন্য হারাম এবং নারীর জন্য হালাল[25]

ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সে সকল পুরুষদের উপর অভিসম্পাত যারা মহিলাদের বেশ ধারণ করে[26] আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) সেই পুরুষের উপর অভিশাপ করেছেন, যে মহিলাদের পোষাক পরিধান করে[27]

গিঁটের নিচে কাপড় পরিধান না করা :

আবু হুরায়রাহ (রাঃ) আরো বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরবে সে জাহান্নামী[28]

রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, لاَ يَنْظُرُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَى مَنْ جَرَّ إِزَارَهُ بَطَرًاআল্লাহ তাআলা ক্বিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তির প্রতি করুণার দৃষ্টি দিবেন না, যে অহংকার বশতঃ কাপড় ঝুলিয়ে পরে[29]

গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র পরিহার করা :

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّشْتَرِيْ لَهْوَ الْحَدِيْثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيْلِ اللهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَّيَتَّخِذَهَا هُزُواً أُوْلَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِيْنٌ

এক শ্রেণীর লোক আছে, যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে ভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে অন্ধভাবে গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র সংগ্রহ করে এবং তা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে, এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি (সূরা লোকমান-৩১/৬)

রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘অবশ্যই আমার পরে এমন কিছু লোক আসবে যারা যেনা, রেশম, নেশাদার দ্রব্য ও গান বাজনাকে হালাল মনে করবে[30] রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন,

إِنَّ اللهَ تَعَالَى حَرَّمَ الْخَمْرَ وَالْمَيْسِرَ وَالْكُوْبَةَ وَقَالَ كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ. قِيْلَ الْكُوبَةُ الطَّبْلُ

নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা মদ, জুয়া ও সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র হারাম করেছেন[31]

নেশাদার দ্রব্য পরিহার :

আল্লাহ তাআলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُواْ إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالأَنصَابُ وَالأَزْلاَمُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوْهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَহে মুমিনগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ শয়তানের কাজ। অতএব তোমরা এগুলি থেকে বেঁচে থাক। যাতে তোমরা কল্যাণ প্রাপ্ত হও (সূরা মায়েদাহ ৫/৯০)

ওছমান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, اجْتَنِبُوا الْخَمْرَ فَإِنَّهَا أُمُّ الْخَبَائِثِতোমরা নেশাদার দ্রব্য থেকে বেঁচে থাক। কেননা নেশাদার দ্রব্য হচ্ছে অশ্লীল কর্মের মূল[32]

ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সব নেশাদার দ্রব্য মদ, আর সব ধরনের মদ হারাম। যে ব্যক্তি সর্বদা নেশাদার দ্রব্য পান করে তওবা বিহীন অবস্থায় মারা যাবে, সে পরকালে সুস্বাদু পানীয় পান করতে পারে না[33] আবু দারদা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘নেশাদার দ্রব্য পানকারী জান্নাতে যাবে না[34]

আনাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (স.) বলেছেন, ‘যখন আমার উম্মত নেশাদার দ্রব্য পান করবে, গায়িকাদের নিয়ে নাচ-গানে মত্ত হবে এবং বাদ্যযন্ত্র নিয়ে ব্যস্ত হবে, তখন অবশ্যই তিনটি ভয়াবহ বিপদ নেমে আসবে- (১) বিভিন্ন এলাকার ভূমি ধসে যাবে (২) উপর থেকে অথবা কোন জাতির পক্ষ থেকে যুলুম অত্যাচার চাপিয়ে দেওয়া হবে (৩) অনেকের পাপের দরুণ আকার-আকৃতি বিকৃত করা হবে।[35]

ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘অবশ্যই আমার উম্মতের কিছু সম্প্রদায় রাত অতিবাহিত করবে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য-পানীয়তে ভোগ বিলাসী হয়ে এবং বিভিন্ন ধরনের বিনোদন, আমোদ-প্রমোদে। এমতাবস্থায় তাদের সকলে শূকর ও বানরের আকৃতিতে রূপান্তরিত হবে[36]

শেষকথা:

অতএব হে যুবক! তোমার প্রতিফোটা রক্ত আল্লাহর দেয়া পবিত্র আমানত, এসো তা ব্যয় করি আল্লাহর পথে। যৌবনের তাড়নায় যেন আমাদের মূল্যবান সময়টা শয়তানের পথে ব্যয় না করে আল্লাহর পথে ব্যয় করি। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন- আমীন!

 

 

তত্থসূত্র:

[1]. বুখারী, হা/৬০২৯  [2]. বুখারী হা/২৭৯২; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৭৯২

[3]. বুখারী, হা/২৮১১; মিশকাত হা/৩৭৯৪[4]. তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৭৪

[5]. মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৫৬[6]. মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫৪০

[7]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫৫৩৯ [8]. বুখারী, বাংলা মিশকাত হা/৫০৪৪

[9]. তিরমিযী হা/২৪১৬ [10]. মুসলিম, হা/৪০৭৬[11]. তিরমিযী হা/২০১৫

[12]. তিরমিযী, হা/২০০৪[13]. তিরমিযী, হা/১৯৮৭; মিশকাত হা/৫০৮৩

[14]. তিরমিযী হা/১১৬২[15]. মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৯৮

[16]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৬২[17]. মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৬৩

[18]. বুখারী হা/২৯০৫[19]. মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫৫৮[20]. বুখারী, মিশকাত হা/৪৬২১

[21]. মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৯[22]. মুসলিম, মিশকাত হা/৮৬

[23]. তিরমিযী, মিশকাত হা/১৩১৮ [24]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৩১৬

[25]. ইবনে মাজাহ হা/২৯১২[26]. বুখারী, মিশকাত হা/৪৪২৯

[27]. আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৪৬৯[28]. বুখারী, মিশকাত হা/৪৩১৪

[29]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৩১১[30]. বুখারী ৮৩৭ পৃঃ

[31]. মিশকাত হা/৪৫০৩[32]. নাসাঈ হা/৫৬৮৪[33]. মুসলিম ২/১৬৭

[34]. ইবনু মাজাহ হা/৩৩৭৬[35]. সিলসিলা ছহীহা হা/১৬০৪[36]. সিলসিলা ছহীহা হা/২৬৯৯



 

No comments:

Post a Comment

razzakhowlader59@gmil.com