পেশাব পায়খানার নাপাকী দূর করার পদ্ধতি
-এম এ রাজ্জাক হাওলাদার
পেশাব-পায়খানার
পরে নাপাকী দুইভাবে দূর করা যেতে পারে- যথা:-
১. পানি
দ্বারা।
২.
ঢিলা-কুলুখ দ্বারা।
পানি দ্বারা নাপাকী দূর করলে আর ঢিলা বা কুলুখ নেওয়ার
প্রয়োজন নেই। এটা নারী ও পুরষ, উভয়ের
জন্য। অনেকে মনে করেন,
পুরুষের পবিত্রতা অর্জনের
শুধুমাত্র ঢিলা কুলুখ বা পানি যথেষ্ঠ না, প্রথমে ঢিলা কুলুখ নিয়ে পরে পানি নিতে হবে। এটা ভুল ধারণা।
ঢিলা-কুলুখের নিয়ম নারী-পুরুষ সবার জন্যই এক। বরং, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময়ে কুবা
মসজিদের কিছু মুসল্লী ঢিলা-কুলুখ না নিয়ে সরাসরি পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করতো আর
আল্লাহ এটাকে পছন্দ করেন এজন্য তাদের প্রশংসা করে কুরআনে আয়াত নাযিল করেন। আবু
হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
فيه رجال
يحبون أن يتطهروا
“সেখানে এমন কিছু লোক আছে যারা নিজেদেরকে পূত-পবিত্র রাখতে
পছন্দ করে।”
(সূরা
তাওবা-৯/১০৮)
এই আয়াতটি কূবাবাসীদের উদ্দেশ্যে নাযিল হয়েছে। কারণ তারা
শুধু পানি দ্বারা ইস্তেন্জা করত। (তিরমিযী, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ, হাদীছ সহীহ)
# পবিত্রতা অর্জনের জন্য পেশাব করার পরে তাড়াহুড়া করে উঠে না
পড়ে,
একটু সময় অপেক্ষা করতে হবে, যাতে করে নিশ্চিত হওয়া যায় পেশাব আর বের হবেনা। তারপর পানি
অথবা ঢিলা-কুলুখ (অথবা টিস্যু) দিয়ে নাপাকী পরিষ্কার করতে হবে।
# শুধু পানি দিয়ে নাপাকী দূর করা উত্তম, সেইক্ষেত্রে আর ঢিলা-কুলুখ/টিস্যু ব্যবহার করা লাগবেনা। তবে
পানি ব্যবহার না করে শুধু টিস্যু বা ঢিলা কুলুখ ব্যবহার করলেও হয়ে যাবে। নাপাকী
দূর করলেই হবে।
# কিন্তু এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যাবেনা বা শয়তানের ওসওয়াসাকে
অন্তরে স্থান দেওয়া যাবেনা। আপনি এটা নিয়ে দুঃশিচন্তা করে আপনার জীবন অতিষ্ট করে
তুলবেন না আবার পেশাব থেকে বেঁচে থাকতে অসতর্কও হবেন না।
আপনার যতটুকু সাধ্য আছে সে অনুযায়ী চেষ্টা করবেন নাপাকী
থেকে মুক্ত থাকার জন্য। কিন্তু রোগের কারণে সেটা সম্ভব না হলে, আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের বাইরে কোনো বোঝা চাপিয়ে দেন না।
# রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুলুখ ও পানি একত্রে ব্যবহার করেছেন এ মর্মে কোনো
প্রমাণ পাওয়া যায় না। তিনি কখনো কেবল পানি ব্যবহার করেছেন। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, আবুদাঊদ, মিশকাত
হা/৩৪২,
৩৬০ ‘টয়লেটের শিষ্টাচার’ অনুচ্ছেদ)
# কখনো বেজোড় সংখ্যক কুলুখ ব্যবহার করেছেন (বুখারী হা/১৫৫-৫৬ ‘ওযূ’
অধ্যায় ‘কুলুখ’ ব্যবহার
অনুচ্ছেদ-২০,
২১)
# ওযূ শেষে তিনি কিছু পানি লজ্জাস্থান বরাবর ছিটিয়ে দিতেন। (আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত
হা/৩৬১,
৩৬৬)
এটি ছিল
সন্দেহ দূর করার জন্য। এর চেয়ে বেশী কিছু করা বাড়াবাড়ি মাত্র।
#
ঢিলা ব্যবহার করার পর পানি নেওয়ার
যে বর্ণনা প্রচলিত আছে তা ভিত্তিহীন।(ইরওয়াউল গালীল হা/৪২; সিলসিলা যঈফাহ হা/১০৩১)
No comments:
Post a Comment
razzakhowlader59@gmil.com