ইসলামে
জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব
এম এ রাজ্জাক হাওলাদার
ভুমিকা:
মহান আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করে এ দুনিয়াতে
পাঠিয়েছেন তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে। মানুষ পৃথিবীতে কিভাবে তাদের জীবন পরিচালনা করবে
তাও তিনি নবী-রাসূল প্রেরণের মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছেন। জাগতিক জীবনের সকল বিষয় এবং
আল্লাহর গোলামী সঠিকভাবে করার জন্য জ্ঞানার্জন অতীব জরুরী। তা না হলে সদিচ্ছা থাকা
সত্ত্বেও নিজে ও জাতির জন্য ভালো কাজ করা সম্ভব হবে না। তাই প্রত্যেক ব্যক্তিকে
যথাযথ জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
ইসলামে
জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব:
প্রিয়
ভাইয়েরা! আজকের আমরা ইসলামের জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব নিয়ে কুরআন হাদীসের আলোকে
আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
জ্ঞানার্জন
করার আদেশ:
اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ
عَلَقٍ اقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ عَلَّمَ
الْإِنْسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ
পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি
করেছেন।যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না। (সূরা
আলাক্ব-৯৬ : ০১-০৫)
জ্ঞান
অর্জন করা ফরয:
فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاسْتَغْفِرْ
لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ
مُتَقَلَّبَكُمْ وَمَثْوَاكُمْ
জেনে রাখুন! আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।
ক্ষমাপ্রার্থনা করুন, আপনার ক্রটির
জন্যে এবং মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্যে। আল্লাহ, তোমাদের গতিবিধি ও অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞাত। (সূরা মুহাম্মদ-৪৭ : ১৯)
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ،
وَوَاضِعُ الْعِلْمِ عِنْدَ غَيْرِ أَهْلِهِ كَمُقَلِّدِ الْخَنَازِيرِ
الْجَوْهَرَ وَاللُّؤْلُؤَ وَالذَّهَبَ
আনা ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয।
অপাত্রে জ্ঞান দানকারী শুকরের গলায় মণিমুক্তা ও সোনার হার পরানো ব্যক্তির সমান। (ইবনে
মাজাহ : ২২৪)
আয়াতগুলো
নাযিলের প্রেক্ষাপট:
عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ المُؤْمِنِينَ أَنَّهَا قَالَتْ: أَوَّلُ مَا
بُدِئَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الوَحْيِ
الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ فِي النَّوْمِ، فَكَانَ لاَ يَرَى رُؤْيَا إِلَّا جَاءَتْ
مِثْلَ فَلَقِ الصُّبْحِ، ثُمَّ حُبِّبَ إِلَيْهِ الخَلاَءُ، وَكَانَ يَخْلُو
بِغَارِ حِرَاءٍ فَيَتَحَنَّثُ فِيهِ - وَهُوَ التَّعَبُّدُ - اللَّيَالِيَ
ذَوَاتِ العَدَدِ قَبْلَ أَنْ يَنْزِعَ إِلَى أَهْلِهِ، وَيَتَزَوَّدُ لِذَلِكَ،
ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَى خَدِيجَةَ فَيَتَزَوَّدُ لِمِثْلِهَا، حَتَّى جَاءَهُ
الحَقُّ وَهُوَ فِي غَارِ حِرَاءٍ، فَجَاءَهُ المَلَكُ فَقَالَ: اقْرَأْ، قَالَ:
مَا أَنَا بِقَارِئٍ قَالَ: فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الجَهْدَ
ثُمَّ أَرْسَلَنِي، فَقَالَ: اقْرَأْ، قُلْتُ: مَا أَنَا بِقَارِئٍ، فَأَخَذَنِي
فَغَطَّنِي الثَّانِيَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الجَهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِي،
فَقَالَ: اقْرَأْ، فَقُلْتُ: مَا أَنَا بِقَارِئٍ، فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي
الثَّالِثَةَ ثُمَّ أَرْسَلَنِي، فَقَالَ: {اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ.
خَلَقَ الإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ. اقْرَأْ وَرَبُّكَ الأَكْرَمُ} [العلق
উম্মুল মু’মিনীন আয়শা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. এর নিকট সর্বপ্রথম যে অহী
আসে, তা ছিল
নিদ্রাবস্থায় নেক স্বপ্নরূপে। যে স্বপ্ন তিনি দেখতেন তা একেবারে প্রভাতের আলোর
ন্যায় প্রকাশিত হতো। অতঃপর তাঁর নিকট নির্জনতা পছন্দনীয় হয়ে দাঁড়ায় এবং তিনি হেরার
গুহায় নির্জনে অবস্থান করতেন। আপন পরিবারের নিকট ফিরে এসে কিছু খাদ্যসামগ্রী সঙ্গে
নিয়ে যাওয়ার পূর্বে- এভাবে তিনি সেখানে এক নাগাড়ে বেশ কয়েকদিন ইবাদতে মগ্ন থাকতেন।
অতঃপর খাদিজা (রা.) এর নিকট ফিরে এসে আবারো একই সময়ের জন্য খাদ্যসামগ্রী নিয়ে
যেতেন। এভাবে হেরা গুহায় অবস্থানকালে তার নিকট অহী আসলো। তাঁর নিকট ফেরেশতা এসে বললো, পাঠ করুন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমি পড়তে জানি না। তিনি সা. বলেন, অতঃপর সে আমাকে জড়িয়ে ধরে এমনভাবে চাপ দিলো
যে, আমার খুব কষ্ট
হলো। অতঃপর সে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললো, পাঠ করুন। আমি বললাম, আমি তো পড়তে জানি না। সে দ্বিতীয় বার আমাকে
জড়িয়ে ধরে এমনভাবে চাপ দিলো যে, আমার খুব কষ্ট হলো। অতঃপর সে আমাকে ছেড়ে দিয়ে
বললো, পাঠ করুন। আমি
উত্তর দিলাম, আমি তো পড়তে
জানি না। রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, অতঃপর তৃতীয়বারে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে চাপ
দিলেন। তারপর ছেড়ে দিয়ে বললেন, পাঠ করুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি সৃষ্টি করেছেন
মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না। (সূরা
আলাক্ব-৯৬ : ০১-০৫) {বুখারী : ০৩}
জ্ঞানার্জনের
মর্যাদা:
আলেমগণের
মর্যাদা বেশী:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قِيلَ لَكُمْ تَفَسَّحُوا
فِي الْمَجَالِسِ فَافْسَحُوا يَفْسَحِ اللَّهُ لَكُمْ وَإِذَا قِيلَ انْشُزُوا
فَانْشُزُوا يَرْفَعِ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَالَّذِينَ أُوتُوا
الْعِلْمَ دَرَجَاتٍ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
হে মু’মিনগণ! যখন তোমাদেরকে বলা হয়: মজলিসে স্থান
প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা
স্থান প্রশস্ত করে দিও। আল্লাহর জন্যে তোমাদের জন্য প্রশস্ত করে দিবেন। যখন বলা
হয়: উঠে যাও, তখন উঠে যেয়ো।
তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, আল্লাহ তাদের মর্যাদা উচ্চ করে দিবেন। আল্লাহ
খবর রাখেন যা কিছু তোমরা কর। (সূরা মুজাদালাহ-৭৩ : ১১)
যারা
জানে এবং যার জনে না তারা সমান নয়:
أَمَّنْ هُوَ قَانِتٌ آنَاءَ اللَّيْلِ سَاجِدًا وَقَائِمًا
يَحْذَرُ الْآخِرَةَ وَيَرْجُو رَحْمَةَ رَبِّهِ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ
يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو
الْأَلْبَابِ
যে ব্যক্তি রাত্রিকালে সেজদার মাধ্যমে অথবা
দাঁড়িয়ে এবাদত করে, পরকালের আশংকা
রাখে এবং তার পালনকর্তার রহমত প্রত্যাশা করে, সে কি তার সমান, যে এরূপ করে না; বলুন, যারা জানে এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে? চিন্তা-ভাবনা কেবল তারাই করে, যারা বুদ্ধিমান। (সূরা যুমার-৩৯ : ০৯)
জ্ঞানীগণ
আল্লাহকে বেশী ভয় করে:
وَمِنَ النَّاسِ وَالدَّوَابِّ وَالْأَنْعَامِ مُخْتَلِفٌ
أَلْوَانُهُ كَذَلِكَ إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ إِنَّ
اللَّهَ عَزِيزٌ غَفُور
অনুরূপ ভাবে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ, জন্তু, চতুষ্পদ প্রাণী রয়েছে। আল্লাহর বান্দাদের
মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাঁকে ভয় করে। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাশীল। (সূরা
ফাতির-৩৫ : ২৮)
জ্ঞান
বৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা:
فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ وَلَا تَعْجَلْ
بِالْقُرْآنِ مِنْ قَبْلِ أَنْ يُقْضَى إِلَيْكَ وَحْيُهُ وَقُلْ رَبِّ زِدْنِي
عِلْمًا
সত্যিকার মালিক আল্লাহ মহান। আপনার প্রতি
আল্লাহর অহী সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে আপনি কুরআন গ্রহণের ব্যপারে তাড়াহুড়া করবেন না
এবং বলুন: হে আমার পালনকর্তা! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন। (সূরা ত্বহা-২০ : ১১৪)
জ্ঞানীগণ
উদাহরণ বুঝতে পারেন:
وَتِلْكَ الْأَمْثَالُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ وَمَا يَعْقِلُهَا
إِلَّا الْعَالِمُونَ
এ সকল উদাহরণ আমি মানুষের জন্যে দেই; কিন্তু জ্ঞানীরাই তা বোঝে। (সূরা আনকাবূত-২৯ : ৪৩)
জ্ঞান
অর্জন না করার জন্য কিয়ামতে আফসোস করতে হবে:
وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي
أَصْحَابِ السَّعِيرِ
তারা আরও বলবে: যদি আমরা শুনতাম অথবা বুদ্ধি
খাটাতাম, তবে আমরা
জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না। (সূরা মুলক-৬৭ : ১০)
জ্ঞান
অর্জনে নবী মূসা (আঃ) এর আগ্রহ:
قَالَ لَهُ مُوسَى هَلْ أَتَّبِعُكَ عَلَى أَنْ تُعَلِّمَنِ مِمَّا
عُلِّمْتَ رُشْدًا
মূসা তাঁকে বললেন: আমি কি এ শর্তে আপনার
অনুসরণ করতে পারি যে, সত্যপথের যে
জ্ঞান আপনাকে শেখানো হয়েছে, তা থেকে আমাকে
কিছু শিক্ষা দেবেন? (সূরা কাহাফ-১৮ : ৬৬)
জ্ঞান
অর্জন মানে জান্নাতের পথ সুগম করা/জ্ঞানীগণ নবীগণের ওয়ারিস:
عَنْ قَيْسِ بْنِ كَثِيرٍ، قَالَ: قَدِمَ رَجُلٌ مِنَ المَدِينَةِ
عَلَى أَبِي الدَّرْدَاءِ، وَهُوَ بِدِمَشْقَ فَقَالَ: مَا أَقْدَمَكَ يَا أَخِي؟
فَقَالَ: حَدِيثٌ بَلَغَنِي أَنَّكَ تُحَدِّثُهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: أَمَا جِئْتَ لِحَاجَةٍ؟ قَالَ: لَا، قَالَ:
أَمَا قَدِمْتَ لِتِجَارَةٍ؟ قَالَ: لَا، قَالَ: مَا جِئْتُ إِلَّا فِي طَلَبِ
هَذَا الحَدِيثِ؟ قَالَ: فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَبْتَغِي فِيهِ عِلْمًا سَلَكَ
اللَّهُ بِهِ طَرِيقًا إِلَى الجَنَّةِ، وَإِنَّ المَلَائِكَةَ لَتَضَعُ
أَجْنِحَتَهَا رِضَاءً لِطَالِبِ العِلْمِ، وَإِنَّ العَالِمَ لَيَسْتَغْفِرُ لَهُ
مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الأَرْضِ حَتَّى الحِيتَانُ فِي المَاءِ،
وَفَضْلُ العَالِمِ عَلَى العَابِدِ، كَفَضْلِ القَمَرِ عَلَى سَائِرِ
الكَوَاكِبِ، إِنَّ العُلَمَاءَ وَرَثَةُ الأَنْبِيَاءِ، إِنَّ الأَنْبِيَاءَ لَمْ
يُوَرِّثُوا دِينَارًا وَلَا دِرْهَمًا إِنَّمَا وَرَّثُوا العِلْمَ، فَمَنْ
أَخَذَ بِهِ أَخَذَ بِحَظٍّ وَافِرٍ
কাইস ইবনে কাসীর রহ. বলেন, এক ব্যক্তি মদিনা হতে দামিশকে আবু দারদা রা.
এর নিকট আসলো। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ ভাই, তুমি কি প্রয়োজনে এসেছো? সে বললো একটি হাদিসের জন্য এসেছি। আমি জানতে
পারলাম যে, আপনি
রাসূলুল্লাহ (সা.) হতে সে হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি আবারো প্রশ্ন করলেন, তুমি কি অন্য কোন প্রয়োজনে আসনি? সে বললো, না। তিনি বললেন, তুমি কি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রয়োজনে আসনি? সে বললো, না; সে আরো বললো, আমি শুধুমাত্র সে হাদিসটির খোঁজেই এসেছি।
এবার তিনি বললেন, আমি
রাসূলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছিঃ ইলম লাভের উদ্দেশ্যে যে ব্যক্তি পথ চলে আল্লাহ তা’আলা এর মাধ্যমে তাকে জান্নাতে পৌঁছে দেন এবং
ফেরেশতাগণ ইলম অন্বেষণকারীরসন্তুষ্টির জন্য নিজেদের ডানা বিছিয়ে দেন। অতঃপর আসমান-যমীনের সকল
প্রাণী আলিমের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, এমন কি পানি মাছসমূহও। নক্ষত্ররাজির উপর
পূর্ণিমার চাঁদের যে প্রাধান্য, ঠিক তেমনি আবিদগণের উপর আলিমের প্রাধান্য।
অবশ্যই আলিমগণ নবীগণের ওয়ারিস। আর নবীগণ উত্তরাধিকার হিসাবে দীনার বা দিরহাম রেখে
যাননি বরং তাঁরা রেখে গেছেনমীরাস হিসেবে ইলমকে। সুতরাং যে ব্যক্তি ইলম লাভ করেছে সে
পূর্ণ অংশ লাভ করেছে। (তিরমিযী : ২৬৮২)
জ্ঞানার্জনকারীগণের
আলোচনা হয় মহান আল্লাহর দরবারে:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ نَفَّسَ عَنْ مُؤْمِنٍ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ الدُّنْيَا،
نَفَّسَ اللهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ يَسَّرَ
عَلَى مُعْسِرٍ، يَسَّرَ اللهُ عَلَيْهِ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، وَمَنْ
سَتَرَ مُسْلِمًا، سَتَرَهُ اللهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، وَاللهُ فِي
عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِي عَوْنِ أَخِيهِ، وَمَنْ سَلَكَ طَرِيقًا
يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا، سَهَّلَ اللهُ لَهُ بِهِ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ،
وَمَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ فِي بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللهِ، يَتْلُونَ كِتَابَ اللهِ،
وَيَتَدَارَسُونَهُ بَيْنَهُمْ، إِلَّا نَزَلَتْ عَلَيْهِمِ السَّكِينَةُ،
وَغَشِيَتْهُمُ الرَّحْمَةُ وَحَفَّتْهُمُ الْمَلَائِكَةُ، وَذَكَرَهُمُ اللهُ
فِيمَنْ عِنْدَهُ، وَمَنْ بَطَّأَ بِهِ عَمَلُهُ، لَمْ يُسْرِعْ بِهِ نَسَبُهُ
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, মহানবী (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোন মু’মিনের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতে তার বিপদ দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোন দুঃস্থ লোকের অভাব দূর করবে, আল্লাহ তা’আলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দূরাবস্থা দূর
করবেন। যে লোক কোন মুসলমানে দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবে আল্লাহ তা’আলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন
রাখবেন। বান্দাহ যতক্ষণ তার ভাইয়ের সহযোগিতায় আত্মনিয়োগ করে আলালাহততক্ষণ তার
সহযোগিতা করতে থাকেন। যে লোক জ্ঞানার্জনের জন্য রাস্তায় বের হয়, আল্লাহ এর বিনিময়ে জান্নাতের পথ সহজ করে
দেন।যখন কোন সম্প্রদায় আল্লাহর ঘরসমূহের কোন একটি ঘরে কেত্রিত হয়ে আল্লাহর কিতাব
পাঠ করে এবং একে অপরের সাথে মিলে কুরআন অধ্যয়নে নিয়োজিত থাকে তখন তাদের উপর
শান্তিধারা অবতীর্ণ হয়। আল্লাহর রহমত তাদের আচ্ছন্ন করে ফেলে এবং ফেরেশতাগণ
তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখেন। আর আল্লাহ তা’আলা তাঁর নিকটবর্তী ফেরেশতাদের সাতে তাদের
কথা আলোচনা করেন। আর যে লোককে আমলে পিছনে সরিয়ে দিবে তার বংশ মর্যাদা তাকে অগ্রসর
করে দিবে না। (মুসলিম : ৬৭৪৬)
আবেদগণের
চেয়ে জ্ঞানীগণের মর্যাদা বেশী:
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ
رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ بِمَجْلِسَيْنِ فِي
مَسْجِدِهِ فَقَالَ: كِلَاهُمَا عَلَى خَيْرٍ، وَأَحَدُهُمَا أَفْضَلُ مِنْ
صَاحِبِهِ. أَمَّا هَؤُلَاءِ فَيَدْعُونَ اللَّهَ وَيَرْغَبُونَ إِلَيْهِ، فَإِنْ
شَاءَ أَعْطَاهُمْ، وَإِنْ شَاءَ مَنَعَهُمْ، وَأَمَّا هَؤُلَاءِ فَيَتَعَلَّمُونَ
الْفِقْهَ والعلمَ وَيُعَلِّمُونَ الْجَاهِلَ، فَهُمْ أَفْضَلُ، وَإِنَّمَا
بُعِثْتُ مُعَلِّمًا قَالَ: ثُمَّ جَلَسَ فِيهِمْ
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, একদিন মহানবী সা. মসজিদে নববীতে দুটি মজলিস
অতিক্রম করছিলেন। উভয় মজলিসই কল্যাণের মধ্যে ছিল। তবে এক দল অপর দলের চেয়ে উত্তম
ছিল। তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা ও তাঁর ইবাদতে মশগুল ছিল। আল্লাহ চাইলে তাদেরকে
কাঙ্খিত বিষয় দিতে পারেন আবার নাও দিতে পারেন। অপর দল মাসআলা নিরূপণ ও জ্ঞানচর্চায়
নিয়োজিত ছিল এবং যারা জানে না তাদেরকে শিক্ষাদান করছিল, তারাই উত্তম। আমি তো শিক্ষক হিসাবে প্রেরিত
হয়েছি। অতঃপর তাদের মধ্যে বসে পড়লেন। (দারেমী : ৩৬১)
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فَقِيهٌ أَشَدُّ عَلَى الشَّيْطَانِ مِنْ أَلْفِ عَابِدٍ
ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, একজন ফকীহ শরীয়তের বিধানে অভিজ্ঞ ব্যক্তি
শয়তানের জন্য এক হাজারইবাদতকারীর চেয়ে অধিক শক্ত। (তিরমিযী : ২৬৮১ ; ইবনে মাজাহ : ২২২)
জ্ঞান
অর্জনকারীগণ আল্লাহর পথে থাকেন:
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ خَرَجَ فِي طَلَبِ العِلْمِ فَهُوَ فِي سَبِيلِ
اللهِ حَتَّى يَرْجِعَ
আনাস ইবনে মালেক রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জনের জন্য বের হয়, সে ফিরে আসার আগ পর্যন্ত আল্লাহর পথেই থাকে।
(তিরমিযী : ২৬৪৭)
আল্লাহর
প্রিয়পাত্রগণ জ্ঞান জ্ঞানার্জন করতে পারেন:
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ، قَالَ: مَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُفَقِّهْهُ فِي الدِّينِ
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, আল্লাহ যে ব্যক্তির কল্যাণ চান তাকে ধর্মের
জ্ঞানে সমৃদ্ধ করেন। (তিরমিযী : ২৬৪৫)
জ্ঞান
বা শিক্ষা
গোপন রাখতে নেই:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ سُئِلَ عَنْ عِلْمٍ عَلِمَهُ ثُمَّ كَتَمَهُ أُلْجِمَ
يَوْمَ القِيَامَةِ بِلِجَامٍ مِنْ نَارٍ
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে লোক এমন কোন ইলম বা জ্ঞান সম্পর্কে
জিজ্ঞাসিত হয় যা সে জানে, অতঃপর সে তা
গোপন করে, তাকে কিয়ামতের
দিন আগুনের লাগাম পরানো হবে। (তিরমিযী : ২৬৪৯)
জ্ঞান
জ্ঞানীর হারানো ধন:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الكَلِمَةُ الحِكْمَةُ ضَالَّةُ الْمُؤْمِنِ، فَحَيْثُ
وَجَدَهَا فَهُوَ أَحَقُّ بِهَا
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, প্রজ্ঞাপূর্ণ কথা মু’মিনের হারানো ধন সুতরাং যে যেখানেই পাবে
সেখান থেকেই সংগ্রহ করবে। (তিরমিযী : ২৬৮৭)
জাতি
কিভাবে বিভ্রান্ত হবে:
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ العَاصِ قَالَ: سَمِعْتُ
رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّ اللَّهَ لاَ
يَقْبِضُ العِلْمَ انْتِزَاعًا يَنْتَزِعُهُ مِنَ العِبَادِ، وَلَكِنْ يَقْبِضُ
العِلْمَ بِقَبْضِ العُلَمَاءِ، حَتَّى إِذَا لَمْ يُبْقِ عَالِمًا اتَّخَذَ
النَّاسُ رُءُوسًا جُهَّالًا، فَسُئِلُوا فَأَفْتَوْا بِغَيْرِ عِلْمٍ، فَضَلُّوا
وَأَضَلُّوا
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অন্তর থেকে ইলম উঠিয়ে
নেন না, কিন্তু ইলমকে উঠিয়ে নিবেন আলেমগণকে উঠিয়ে নেয়ার
মাধ্যমে। অতঃপর যখন কোন আলেম অবশিষ্ট থাকবে না তখন লোকেরা মুর্খদেরকেই নেতা বানিয়ে
নিবে। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হলে না জেনেও ফতোয়া প্রদান করবে। ফলে তারা নিজেরাও
পথভ্রষ্ট হবে এবং অন্যকেও পথভ্রষ্ট করবে। (সহীহ বুখারী ; ১০০ ; মুসলিম : ৬৬৮৯)
অন্য
হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: لَأُحَدِّثَنَّكُمْ
حَدِيثًا سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ
يُحَدِّثُكُمْ بِهِ أَحَدٌ غَيْرِي: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يُرْفَعَ
العِلْمُ، وَيَكْثُرَ الجَهْلُ، وَيَكْثُرَ الزِّنَا، وَيَكْثُرَ شُرْبُ الخَمْرِ،
وَيَقِلَّ الرِّجَالُ، وَيَكْثُرَ النِّسَاءُ حَتَّى يَكُونَ لِخَمْسِينَ
امْرَأَةً القَيِّمُ الوَاحِدُ
আনাস রা. বলেন, আমি তোমদের কাছে একটি হাদিস বর্ণনা করবো, যা আমি রাসূলুল্লাহ সা. এর কাছে শুনেছি এবং
আমি ব্যতীত আর কেউ এ হাদিস বলতে পারবে না। আমি রাসূলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের আলামতের মধ্যে রয়েছে ইলম উঠে যাবে, অজ্ঞতা বেড়ে যাবে, ব্যভিচার বৃদ্ধি পাবে, মদ পানের মাত্রা বেড়ে যাবে, পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে এবং নারীদের সংখ্যা
এত বেড়ে যাবে যে, এবজন পুরুষকে
পঞ্চাশজন নারীর দেখাশোনা করতে হবে। (বুখারী : ৫২৩১)
জ্ঞানীগণকে
সম্মান করা:
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَيْسَ مِنْ أُمَّتِي مَنْ لَمْ يُجِلَّ كَبِيرَنَا،
وَيَرْحَمْ صَغِيرَنَا، وَيَعْرِفْ لِعَالِمِنَا
উবাদাহ ইবনে সামিত রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে আমাদের বড়কে শ্রদ্ধা করে না, আমাদের ছোটকে স্নেহ করে না এবং আমাদের আলেমগণকে সম্মান করে না
সে আমার উম্মত নয়। (আহমদ : ২২৭৫৫)
জ্ঞানের
বিপদ:
عَنِ الْأَعْمَشِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آفَةُ الْعِلْمِ النِّسْيَانُ، وَإِضَاعَتُهُ، أَنْ تُحَدِّثَ
بِهِ غَيْرَ أَهْلِهِ
আ’মাশ (রহ.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, জ্ঞানের বিপদ হলো ভুলে যাওয়া। আর এর ধ্বংস
অপাত্রে জ্ঞান দান করা। (দারেমী : ৬৪৮)
আলেমগণের
উপর বাহাদুরির জন্য জ্ঞানার্জন নয়:
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا تَعَلَّمُوا الْعِلْمَ لِتُبَاهُوا بِهِ
الْعُلَمَاءَ، وَلَا لِتُمَارُوا بِهِ السُّفَهَاءَ، وَلَا تَخَيَّرُوا بِهِ
الْمَجَالِسَ، فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَالنَّارُ النَّارُ
জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমরা আলিগণের উপর বাহাদুরি প্রকাশের জন্য, নির্বোধদের সাথে ঝগড়া করার জন্য এবং জনসভার
উপর বড়ত্ব প্রকাম করার জন্য ধর্মীয় জ্ঞান শিক্ষা করো না। যে এরূপ করবে তার জন্য
রয়েছে আগুন আর আগুন। (ইবনে মাজাহ : ২৫৪)
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الرُّوحِ قُلِ الرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّي
وَمَا أُوتِيتُمْ مِنَ الْعِلْمِ إِلَّا قَلِيلًا
তারা আপনাকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে
দিন: রূহ আমার পালনকর্তার আদেশ ঘটিত। এ বিষয়ে তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দান করা
হয়েছে। (সূরা ইসরা : ৮৫)
কাউকে
বিদ্যাদান করা সাদাকায়ে জারিয়াহ:
عَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ
النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ عَلَّمَ عِلْمًا فَلَهُ
أَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهِ، لَا يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الْعَامِلِ
সহল ইবনে মুয়ায ইবনে আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি জ্ঞানের কথা শিক্ষা দেয় সে
তদনুসারে কর্ম সম্পাদনকারীর সমান পুরষ্কার পাবে, এতে কর্ম সম্পাদনকারীর পুরষ্কারে কোনরূপ
ঘাটতি হবে না। (ইবনে মাজাহ : ২৪০)
উপসংহার:
প্রিয় উপস্থিতি! আমাদের সকল কাজ সুন্দর করে সম্পন্ন করার জন্য
এবং বিশেষ করে মহান আল্লাহর উপাসনা সঠিকভাবে করার জন্য জ্ঞানার্জন জরুরী। জ্ঞানের
অভাবে আমরা অনেক অগুরুত্বপূর্ণ কিংবা বাজে কাজে মূল্যবান সময় ও অর্থ ব্যয় করে থাকি
এবং মনে করি খুব ভালো কাজ করছি। প্রকৃত অর্থে এগুলি কোন ভালো কাজ তো নয়ই অনেক
ক্ষেত্রে কবীরা গুনাহ এবং কোন কোন ক্ষেত্রে শিরক এমনকি কুফুরী পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তাই আমাদের
সকলকে যথাযথ জ্ঞানার্জন করে সঠিক কাজ করতে হবে। মহান আল্লাহ তাওফীক দান করুন। আমীন
No comments:
Post a Comment
razzakhowlader59@gmil.com