ইসলামী দৃষ্টিতে জ্ঞানার্জনের মর্যাদা
এম এ রাজ্জাক হাওলাদার
ভূমিকাঃ
ইসলামে জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব অপরিসীম। মুসলিমের প্রতি ইসলামের
প্রথম বার্তাই হলো: اِقْرَاْ- পড়,তথা জ্ঞানার্জন কর। জ্ঞান অর্জনই মানুষের মর্যাদার পার্থক্য
নির্ণয় করে দেয়। জ্ঞানার্জন ছাড়া ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন- কোনো ক্ষেত্রেই সত্যিকার
অর্থে যথাযথভাবে ইসলাম পালন সম্ভব নয়।
উমর
ইবনে আব্দুল আযীয (রাহ.) বলেছেন-
من عمل على غير علم كان ما يفسد أكثر مما يصلح
যে ব্যক্তি ইলম ছাড়া আমল করবে সে সঠিকভাবে যতটুকু করবে না করবে, বরবাদ করবে তার চেয়ে বেশি। (তারীখে তাবারী-৬/৫৭২)
সুতরাং এ জ্ঞানের মর্যাদা দিতে গিয়েই আল্লাহ তাআলা
ফেরেশতাদের উপর হযরত আদম (আ:) এর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। তাকে সেজদা করতে বলেছেন।
জ্ঞান অর্জনের প্রাধান্য দেয়ার এ বিষয়টি ছিল মহান আল্লাহর একটি কুদরত।
দ্বীনী
ইলম/জ্ঞানের ফযীলতঃ
পবিত্র কুরআনের সর্বপ্রথম ওহীতে জ্ঞানার্জনের
প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
আল্লাহ বলেন-
اِقْرَاْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِیْ خَلَقَ، خَلَقَ الْاِنْسَانَ
مِنْ عَلَق ، اِقْرَاْ وَ رَبُّكَ الْاَكْرَم، الَّذِیْ عَلَّمَ بِالْقَلَم،
عَلَّمَ الْاِنْسَانَ مَا لَمْ یَعْلَمْ
পাঠ কর তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন-সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে। পাঠ কর, আর তোমার প্রতিপালক মহামহিমান্বিত, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা
দিয়েছেন মানুষকে, যা সে জানত
না।(সূরা আলাক-৯৬:১-৫)
অপর
এক আয়াতে আল্লাহ বলেন-
قُلْ هَلْ یَسْتَوِی الَّذِیْنَ یَعْلَمُوْنَ وَ الَّذِیْنَ لَا
یَعْلَمُوْنَ.
বল, যারা জানে এবং যারা জানে না তারা কি সমান? (সূরা যুমার-৩৯: ৯)
কুরআনুল কারিমের অন্যত্র বলা হয়েছে-
یَرْفَعِ اللهُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مِنْكُمْ وَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا
الْعِلْمَ دَرَجٰتٍ
তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে
ইলম দান করা হয়েছে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে মর্যাদায় উন্নত করবেন। (সূরা মুজাদালাহ-৫৮: ১১)
রাসূলুল্লাহ
(সঃ) বলেছেন-
لاَ حَسَدَ إِلّا فِي اثْنَتَيْنِ: رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ مَالًا
فَسُلِّطَ عَلَى هَلَكَتِهِ فِي الحَقِّ، وَرَجُلٌ آتَاهُ اللهُ الحِكْمَةَ فَهُوَ
يَقْضِي بِهَا وَيُعَلِّمُهَا
দুই ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো ব্যাপারেই
হিংসা হতে পারে না। এক. আল্লাহ পাক যাকে সম্পদ দান করেছেন আর সে ন্যায়ের পথে খরচ
করতে থাকে। দুই. যাকে দ্বীনী জ্ঞান দান করেছেন আর সে তা দিয়ে বিচার করে এবং তা
মানুষকে শেখায়। (সহীহ বুখারী-৭৩; সহীহ মুসলিম-৮১৬)
দ্বীনী
ইলমের স্তর
ও ভাগঃ
(১) ফরযে
আইন । যেমন
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ
প্রত্যেক মুসলিমের উপর ইলম অর্জন করা ফরয। (মুসনাদে
আবু হানীফা (হাছকাফী)-১, ২; ইবনে মাজাহ-২২৪)
(২) ফরযে কেফায়া।
আল্লাহ বলেন-
فَلَوْلاَ نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَآئِفَةٌ
لِّيَتَفَقَّهُوْا فِي الدِّيْنِ وَلِيُنْذِرُوْا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوْا
إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُوْنَ
তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হ’ল না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান
করে স্বজাতিকে, যখন তারা
তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে? (তওবা-৯:১২২)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَ مَا كَانَ الْمُؤْمِنُوْنَ لِیَنْفِرُوْا كَآفَّةً فَلَوْ لَا
نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَآىِٕفَةٌ لِّیَتَفَقَّهُوْا فِی الدِّیْنِ
وَ لِیُنْذِرُوْا قَوْمَهُمْ اِذَا رَجَعُوْۤا اِلَیْهِمْ لَعَلَّهُمْ
یَحْذَرُوْنَ
মুমিনদের সকলের একসঙ্গে অভিযানে বের হওয়া
সঙ্গত নয়, তাদের
প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন, যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে
পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে। যাতে তারা
সতর্ক হয়। (সূরা তাওবা-৯: ১২২)
এই
ইলমের ব্যাপারেই হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
يَحْمِلُ هَذَا الْعِلْمَ مِنْ كُلِّ خَلَفٍ عُدُولُهُ، يَنْفُونَ
عَنْهُ تَحْرِيفَ الْغَالِينَ، وَانْتِحَالَ الْمُبْطِلِينَ، وَتَأْوِيلَ
الْجَاهِلِينَ
এই ইলমকে ধারণ করবে প্রত্যেক উত্তর প্রজন্মের
আস্থাভাজন শ্রেণি। তাঁরা একে মুক্ত রাখবে সীমালঙ্ঘনকারীদের বিকৃতি থেকে, বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচার থেকে এবং মূর্খদের
অপব্যাখ্যা থেকে। (শরহু মুশকিলিল আছার-৩৮৮৪; শারাফু আসহাবিল, খতীব বাগদাদী, পৃ. ২৯; বুগইয়াতুল মুলতামিস, আলাঈ, পৃ.৩৪)
জাগতিক
বিষয়ে জ্ঞানার্জনের প্রয়োজনীয়তা:
পার্থিব জীবনযাত্রার প্রয়োজনীয় ও কল্যাণকর
জ্ঞান অর্জন ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকেও কাম্য। বিধানগতভাবে জাগতিক জ্ঞান দুই প্রকার:
এক. যা চর্চা করা অপরিহার্য।
দুই. যা চর্চা করা নিষিদ্ধ।
প্রথমটি হচ্ছে- ওই সব জ্ঞান, যা জীবনযাপনের ক্ষেত্রে অপরিহার্য। যেমন-
চিকিৎসা, গণিত, এমনিভাবে কৃষি, রাষ্ট্রনীতি, প্রয়োজনীয় বিজ্ঞান ও দর্শন ইত্যাদির মৌলিক
পর্যায়ের জ্ঞানও অপরিহার্য। গোটা জনপদে যদি এই জ্ঞানের পারদর্শী কেউ না থাকে, তাহলে সবাই কষ্টে পতিত হবে। পক্ষান্তরে
দ্বিতীয়টি, যা মানুষকে
অকল্যাণের দিকে নিয়ে যায়, তা চর্চা করা
হারাম। যেমন- ইসলামবিরোধী প্রাচীন ও আধুনিক দর্শন, কুফরি সাহিত্য ইত্যাদি। তদ্রূপ অকল্যাণকর ও
অপ্রয়োজনীয় বিষয় চর্চা করাও নিষিদ্ধ। (ইহইয়াউ উলুমিদ দ্বীন : ১/২৯-৩০)
জাগতিক জ্ঞান অর্জনেরও একটি বিশুদ্ধ ধর্মীয়
দিক রয়েছে, সে ক্ষেত্রে
তা দ্বীনি খিদমত হিসেবেই গণ্য হয়ে থাকে। যেমন- বর্তমান বিজ্ঞান-প্রযুক্তির চরম
উন্নতির যুগে মুসলমানদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে
সর্বোচ্চ পারদর্শিতা অর্জন, দ্বীন
প্রচারের জন্য কম্পিউটার শিক্ষা ও অন্যান্য অত্যাধুনিক তথ্য প্রযুক্তির
মাধ্যমগুলোর জ্ঞান অর্জন ইত্যাদি দ্বীনি খিদমতের উদ্দেশ্যে হলে তা সম্পূর্ণরূপে
ইসলামের খিদমত হিসেবে গণ্য হবে।
জ্ঞান
চর্চার ব্যাপারে ইসলামের উদার দৃষ্টিভঙ্গি:
এর অনন্য উদাহরণ পাওয়া যায় যুদ্ধ বন্দীদের
ব্যাপারে মহানবী (ছাঃ)-এর মহানুভবতা থেকে। হিজরতের দেড় বছর পর বদর যুদ্ধে প্রায় ৭০
জন মুশরিক বন্দী হয়। তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোকের মুক্তিপণ দানের সামর্থ্য ছিল
না। রাসূল (ছাঃ) মদীনার ১০ জন করে ছেলেমেয়েকে শিক্ষাদানের বিনিময়ে তাদেরকে মুক্ত
করে দেন। ( বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষার ইতিহাস ও ঐতিহ্য: মোহাম্মদ আবদুল মান্নান)
কুরআন-সুন্নাহ্য়
জ্ঞানার্জনের ব্যাপারে গুরুত্বারোপঃ
কুরআনের ইলম অর্জনের গুরুত্ব কুরআনের মতই।
ইমাম বুখারী রাহ. সহীহ বুখারীতে একটি শিরোনাম দিয়েছেন-
باب العِلمِ قبْلَ القوْلِ والعمل
(সকল কথা ও আমলের আগে হচ্ছে সেই বিষয়ের
জ্ঞানার্জন।)
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন-
هُوَ الَّذِیْ بَعَثَ فِی الْاُمِّیّٖنَ رَسُوْلًا مِّنْهُمْ
یَتْلُوْا عَلَیْهِمْ اٰیٰتِهٖ وَ یُزَكِّیْهِمْ وَ یُعَلِّمُهُمُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَةَ
তিনিই উম্মিদের মধ্যে একজন রাসূল পাঠিয়েছেন
তাদের মধ্য হতে, যে তাদের
সামনে তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবে; তাদের পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও
হিকমত; ইতিপূর্বে তো
তারা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে। (জুমুআহ-৬২: ২)
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
عن معا وية (رض) قا ل : قا ل رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم :
"من يرد الله خيرا يفقه فى
الدين _ " رواه البخا رى، رقم الحديث: 7312-ومسلم، 1037- كل
مطبع مصر
মুয়াবিয়া রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইরশাদ ফরমান: 'আল্লাহ তায়ালা
যার জন্য বিশেষ কল্যাণ কামনা করেন, তাকে দ্বীনী জ্ঞান অর্জন ও বুঝার তাওফিক দান
করেন।' (সহীহ বুখারী-৭৩১২, সহীহ মুসলিম-১০৩৭)
জ্ঞানার্জনকারীর
মর্যাদাঃ
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন,
مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا، سَهّلَ اللهُ لَهُ
بِهِ طَرِيقًا إِلَى الْجَنّةِ
যেই ব্যক্তি ইলম তলবের জন্য কোনো পথ অবলম্বন
করবে আল্লাহ পাক এর বদৌলতে তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেবেন। (সহীহ মুসলিম-২৬৯৯)
হযরত সাফওয়ান ইবনে আস্সাল রা. বলেন, আমি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
কাছে আসলাম। তখন তিনি মসজিদে বসে ছিলেন। আমি তাঁকে বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি এসেছি ইলম শিক্ষা করার জন্য। তিনি বললেন, জ্ঞানার্জনকারীকে মারহাবা। নিশ্চয় তালেবে
ইলমকে ফিরিশতাগণ বেষ্টন করে রাখে এবং তাঁদের ডানা দিয়ে তাকে ছাঁয়া দিতে থাকে।
অতঃপর তাঁরা সারিবদ্ধভাবে প্রথম আসমান পর্যন্ত মিলে মিলে দাঁড়িয়ে যায়। এসব কিছু
তাঁরা সে যা অন্বেষণ করছে তার ভালবাসায় করে। (আখলাকুল উলামা, আর্জুরী ১/৩৭; তবারানী কাবীর-৭৩৪৭; মাজমাউয যাওয়ায়েদ-৫৫০)
নবী করীম (সা:) হযরত আবু জর রা.-কে সম্বোধন
করে বলেছেন, হে আবু জর, কুরআনের একটি আয়াত শিক্ষা করা তোমার জন্য একশ
রাকাত নফল নামায পড়ার চেয়েও উত্তম। ইলমের একটি অধ্যায় শিক্ষা করা তোমার জন্য এক
হাজার রাকাত নফল নামায পড়ার চেয়েও উত্তম। চাই এর উপর আমল করা হোক বা না হোক। (সুনানে
ইবনে মাজাহ-২১৯)
হাদীসে
জ্ঞানার্জনের রাস্তাকে আল্লাহর রাস্তা বলা হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন,
مَنْ خَرَجَ فِي طَلَبِ العِلْمِ فَهُوَ فِي سَبِيلِ اللهِ حَتَّى
يَرْجِعَ
যে ব্যক্তি ইলম অন্বেষণের জন্য বের হল সে
আল্লাহর রাস্তায় বের হল। -জামে তিরিমিযী, হাদীস ২৬৪৭
রাসূলুল্লাহ (সঃ) আলেম ও জ্ঞানার্জনকারীর
প্রশংসায় বলেছেন-
وَإِنّ الْمَلَائِكَةَ لَتَضَعُ أَجْنِحَتَهَا رِضًا لِطَالِبِ
الْعِلْمِ، وَإِنّهُ لَيَسْتَغْفِرُ لِلْعَالِمِ مَنْ فِي السّمَاوَاتِ
وَالْأَرْضِ، حَتّى الْحِيتَان فِي الْمَاءِ، وَفَضْلُ الْعَالِمِ عَلَى
الْعَابِدِ كَفَضْلِ الْقَمَرِ عَلَى سَائِرِ الْكَوَاكِبِ
নিশ্চয় ফেরেশতাগণ তালিবে ইলমের প্রতি
সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নিজেদের ডানা বিছিয়ে দেন। আর আলেমের জন্য মাগফিরাত কামনা
করতে থাকে আসমান-যমীনের সবকিছু। এমনকি পানির নিচে থাকা মাছ। (অন্য বর্ণনায়, গর্তের পিপিলিকা।) আলেমের মর্যাদা আবেদের উপর
তেমন তারকারাজির মাঝে চন্দ্র যেমন। (মুসনাদে আহমাদ-২১৭১৫; জামে তিরমিযী-২৬৮২, ২৬৮৫; ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার-১/১৬১)
জ্ঞান
চর্চা/ শিক্ষাদানকারীর মর্যাদাঃ
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: خيركم من تعلم القرآن وعلمه
তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি, যে কুরআন মাজীদ শিক্ষা করে এবং শিক্ষা দেয়। (সহীহ
বুখারী-৫০২৭)
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন-
مَنْ جَاءَ مَسْجِدِي هَذَا، لَمْ يَأْتِهِ إِلّا لِخَيْرٍ
يَتَعَلّمُهُ أَوْ يُعَلِّمُهُ، فَهُوَ بِمَنْزِلَةِ الْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ
الله
যেই ব্যক্তি আমার মসজিদে আসল শুধু একারণে যে, সে কোনো কল্যাণের বাণী শিখবে অথবা শেখাবে সেই
ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর ন্যায়। (সুনানে ইবনে মাজাহ-২২৭)
অপর
এক হাদীস বলা হয়েছে-
إِذَا مَاتَ الْإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلّا مِنْ
ثَلَاثَةٍ: إِلّا مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ، أَوْ
وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ
যখন মানুষ মারা যায় তার সকল আমলের রাস্তা
বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তিনটি রাস্তা খোলা থাকে। এক. ছদকায়ে জারিয়া। দুই. এমন ইলম, যা থেকে (মানুষ) উপকৃত হয়। তিন. নেক সন্তান, যে তার জন্য দুআ করে। (সহীহ মুসলিম-১৬৩১)
রাসূলুল্লাহ(সঃ) বলেন,
مَنْ عَلَّمَ عِلْمًا فَلَهُ أَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهِ لاَ يَنْقُصُ
مِنْ أَجْرِ الْعَامِلِ
যে ব্যক্তি কাউকে দ্বীনি ইলম শিক্ষা দিবে সে
ঐ ব্যক্তির ন্যায় ছাওয়াব পাবে, যে তার উপর আমল করল। কিন্তু আমলকারীর নেকী
থেকে এতটুকুও কমানো হবে না।(ইবনে মাযাহ-১৯৮)
ইলম
তথা জ্ঞানের ধারক-বাহকগণকে সম্মানঃ
আবুদ্দারদা রা. ও ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন-
كُنْ عَالِمًا أَوْ مُتَعَلِّمًا أَوْ مُحِبّا أَوْ مُتّبَعًا،
وَلَا تَكُنِ الْخَامِسَ فَتَهْلِكَ. قَالَ: قُلْتُ لِلْحَسَنِ: مَنِ الْخَامِسُ؟
قَالَ: الْمُبْتَدِعُ
তুমি আলেম হও। নয়তো আলেমের ছাত্র হও। নয়তো
আলেমকে মহব্বতকারী হও। নয়তো আলেমের অনুসারী হও। পঞ্চম ব্যক্তি হয়ো না। তাহলে তোমার
ধ্বংস অনিবার্য। বর্ণনাকারী হাসান বসরী রাহ.-কে জিজ্ঞাসা করা হল, পঞ্চম ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, পঞ্চম ব্যক্তি হচ্ছে, বেদআতি। (আলইবানাহ, ইবনে বাত্তাহ, বর্ণনা ২১০; আলমাদখাল, বায়হাকী, বর্ণনা ৩৮১; জামিউ বায়ানিল ইলম, ইবনু আব্দিল বার, বর্ণনা ১৪২)
আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে আহলে ইলমের
সাক্ষ্যকে দলিলরূপে পেশ করেছেন-
شَهِدَ اللهُ اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ وَ الْمَلٰٓىِٕكَةُ
وَ اُولُوا الْعِلْمِ قَآىِٕمًۢا بِالْقِسْطِ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الْعَزِیْزُ
الْحَكِیْمُ
আল্লাহ স্বয়ং এ বিষয়ের সাক্ষ্য দেন এবং
ফিরিশতাগণ ও ‘উলুল ইলম’ও যে, তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, যিনি ইনসাফের সাথে (বিশ্বজগতের) নিয়ম-শৃঙ্খলা
নিয়ন্ত্রণ করছেন। তিনি ছাড়া
অন্য কেউ ইবাদতের উপযুক্ত নয়। তাঁর ক্ষমতাও পরিপূর্ণ এবং হিকমতও পরিপূর্ণ। (সূরা
আলে ইমরান-৩: ১৮)
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন-
إِنّ اللهَ لاَ يَقْبِضُ العِلْمَ انْتِزَاعًا يَنْتَزِعُهُ مِنَ
العِبَادِ، وَلَكِنْ يَقْبِضُ العِلْمَ بِقَبْضِ العُلَمَاءِ، حَتَّى إِذَا لَمْ
يُبْقِ عَالِمًا اتّخَذَ النّاسُ رُءُوسًا جُهّالًا، فَسُئِلُوا فَأَفْتَوْا
بِغَيْرِ عِلْمٍ، فَضَلّوا وَأَضَلّوا
নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা ইলমকে মানুষদের থেকে
ছিনিয়ে তুলে নেবেন না। তবে তিনি ইলমকে উঠিয়ে নেবেন আলেমদেরকে উঠিয়ে নেওয়ার
মাধ্যমে। একপর্যায়ে যখন (দুনিয়াতে) কোনো আলেম অবশিষ্ট থাকবে না তখন মানুষেরা
মূর্খদেরকে নেতা হিসাবে গ্রহণ করবে। অতঃপর তাদেরকে যখন (দ্বীনের কোনো বিষয়ে)
জিজ্ঞাসা করা হবে; তারা না জেনে
উত্তর দেবে। ফলে তারা নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে। (সহীহ
বুখারী-১০০; সহীহ মুসলিম-২৬৭৩)
রাসূলুল্লাহ (সঃ) আরো বলেন-
فَضْلُ العَالِمِ عَلَى العَابِدِ كَفَضْلِي عَلَى أَدْنَاكُمْ
আবেদের (আলেম নয় এমন ইবাদাতগুযার নেককার
ব্যক্তি) উপর আলেমের মর্যাদা তোমাদের একজন সাধারণ ব্যক্তির উপর আমার মর্যাদার
ন্যায়। তিরমিযী-২৬৮৫)
আরো ইরশাদ করেন-
إِنّ الْعُلَمَاءَ وَرَثَةُ الْأَنْبِيَاءِ، إِنّ الْأَنْبِيَاءَ
لَمْ يُوَرِّثُوا دِينَارًا وَلَا دِرْهَمًا، إِنّمَا وَرّثُوا الْعِلْمَ، فَمَنْ
أَخَذَهُ أَخَذَ بِحَظٍّ وَافِرٍ
নিশ্চয় আলেমগণ নবীগণের ওয়ারিশ। আর নবীগণ
দিনার-দিরহামের (অর্থ-সম্পদের) ওয়ারিশ বানান না। তাঁরা ওয়ারিশ বানান ইলমের। সুতরাং
যেই ব্যক্তি তা গ্রহণ করল সে তো (মিরাছের) এক বিরাট অংশ গ্রহণ করল। (সুনানে ইবনে
মাজাহ-২২৩; মুসনাদে আহমাদ-২১৭১৫; সুনানে আবু দাউদ-৩৬)
জ্ঞানী
ও মূর্খ কখনো সমান হতে পারেনা
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন-
قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لا يعلمون
( الزمر 9
হে নবী আপনি বলে দিন, যে ব্যক্তি (কুরআন-সুন্নাহ তথা শরীয়াতের
বিধান) জানে আর যে জানে না, তারা কি উভয়ে
সমান গতে পারে? তার মানে কখনই
সমান হতে পারে না।(সুরা জুমাআ-৬২:৯)
আল্লাহ আরো বলেন
* إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ
عِبَادِهِ الْعُلَماء – ( الفا طر -28
একমাত্র (ওহীর জ্ঞানে জ্ঞানী) আলিমগণই আমাকে
ভয় করে থাকে।(সুরা
ফাতির-৩৫:২৮)
তিনি অন্যত্র বলেন,
وَمَا يَعْقِلُهَا إِلَّا الْعَالِمُونَ-(العنكبوت- 43
একমাত্র আলেমগণই ভাল-মন্দ ও হক-বাতিলের মাঝে
পার্থক্য নির্ণয় করতে পারে।(সুরা আনকাবুত-২৯:৪৩)
আল্লাহর
নিকট উপকারী জ্ঞান চাইতে উৎসাহিত করাঃ
ইব্রাহীম (আ) দুআ করেন,
رَبِّ هَبْ لِي حُكْمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ
হে আমার প্রতিপালক! আমাকে প্রজ্ঞা দান কর এবং
আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত কর’ (শু‘আরা-২৬:৮৩)
রাসূলুল্লাহ (সঃ) প্রতি ফজর সালাতের পর দুআ
করতেন,
اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا طَيِّبًا
وَعَمَلاً مُتَقَبَّلاً
হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট উপকারী জ্ঞান, কবুলযোগ্য আমল ও পবিত্র রূযী প্রার্থনা করছি’।(ইবনে মাযাহ-৭৬২)
স্বয়ং আল্লাহ জ্ঞানার্জনের দুআ শিখিয়েছেন-
و قل رَبِّ زِدْنِیْ عِلْمًا
হে আমার প্রভু, আমার ইলম বৃদ্ধি করে দাও। (সূরা ত্ব-হা-২০:
১১৪)
জ্ঞানার্জনে
করণীয় ও বর্জনীয়ঃ
(১) নিয়ত বিশুদ্ধ করা: হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
إنما الأعمال بالنيات
مَنْ تَعَلّمَ عِلْمًا مِمّا يُبْتَغَى بِهِ وَجْهُ اللهِ عَزّ
وَجَلّ لَا يَتَعَلّمُهُ إِلّا لِيُصِيبَ بِهِ عَرَضًا مِنَ الدّنْيَا، لَمْ
يَجِدْ عَرْفَ الْجَنّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَعْنِي رِيحَهَا
আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে শিক্ষা করা হয়
এমন ইলম (দ্বীনী ইলম) যেই ব্যক্তি পার্থিব কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য শিক্ষা করবে
কিয়ামতের দিন সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। (মুসনাদে আহমাদ-৮৪৫৭; সুনানে আবু দাউদ-৩৬৬৪)
অন্য এক হাদীসে নবী করীম (সঃ) বলেছেন-
لَا تَعَلّمُوا الْعِلْمَ لِتُبَاهُوا بِهِ الْعُلَمَاءَ، وَلَا
تُمَارُوا بِهِ السّفَهَاءَ، وَلَا تَخَيّرُوا بِهِ الْمَجَالِسَ، فَمَنْ فَعَلَ
ذَلِكَ فَالنّارَ النّارَ
তোমরা এই উদ্দেশ্যে ইলম শিক্ষা করো না যে, এর মাধ্যমে আলেমদের সাথে গর্ব করবে বা
মূর্খদের সাথে বিবাদে লিপ্ত হবে। কিংবা মজলিসের অধিকর্তা হবে। যে এমন করবে তার
জন্য রয়েছে জাহান্নাম, তার জন্য
রয়েছে জাহান্নাম। (সহীহ ইবনে হিব্বান-৭৭)
(২) তা'লীম ও তরবীয়ত গ্রহণ করা: রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন-
إِنّمَا الْعِلْمُ بِالتّعَلّمِ
ইলম হাসিল করতে হবে শেখা-শেখানোর মাধ্যমে। (সহীহ
বুখারী-১/২)
(৩) উস্তাযের সাহচর্য গ্রহণ করাঃ ইরশাদ হয়েছে-
فَسْـَٔلُوْۤا اَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ
তোমরা যদি না জানো তবে আহলে যিক্রের কাছে
জিজ্ঞাসা করে নাও। (সূরা নাহল-১৬: ৪৩)
এজন্য শুধু বই-পত্র পড়াকেই ইলম শিক্ষার জন্য
যথেষ্ট মনে করা ভুল। পড়তেও হবে, হক্বপন্থী আলেমদের কাছে শেখাও খুবই
গুরুত্বপূর্ণ।
বিখ্যাত
তাবেঈ হযরত ইবনে সীরীন (রহ.) বলেন-
إِنّ هَذَا الْعِلْمَ دِينٌ، فَانْظُرُوا عَمّنْ تَأْخُذُونَ
دِينَكُمْ
এই ইলম (কুরআন-সুন্নাহ্র ইলম) হচ্ছে দ্বীন।
সুতরাং দেখে নাও, কার কাছ থেকে
তোমরা তোমাদের দ্বীন গ্রহণ করছ। (সহীহ মুসলিম-১/১৪)
(৪) কঠোর অধ্যাবসায় ও মেহনত করাঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন-
إِنّ أَحَدَكُمْ لَمْ يُولَدْ عَالِمًا، وَإِنَّمَا الْعِلْمُ
بِالتّعَلّمِ
তোমাদের কেউই আলেম হয়ে জন্ম লাভ করে না। ইলম
তো হাসিল হয় শিক্ষা করার মাধ্যমে। (আলমাদখাল ইলাস সুনানিল কুবরা, বায়হাকী-১/২৬৭)
হযরত ইবনে আব্বাস রা.-কে জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার এত বিপুল ইলম কীভাবে অর্জিত হয়েছে? তিনি উত্তর দিলেন-
بِلِسَانٍ سَؤُولٍ، وَقَلْبٍ عَقُولٍ
অধিক জিজ্ঞাসাকারী যবান ও সজাগ হৃদয়ের
মাধ্যমে। (ফাযাইলুস সাহাবাহ, ইমাম আহমাদ-২/৯৭০; আলআহাদু ওয়াল মাছানী, ইবনু আবী আছেম-৩/২৯৩)
(৫) লজ্জা ও অহংকার জ্ঞানার্জনের পথে বড় অন্তরায়ঃ
বিখ্যাত
তাবেঈ হযরত মুজাহিদ (রাহ.) বলেন-
لاَ يَتَعَلّمُ العِلْمَ مُسْتَحْيٍ وَلاَ مُسْتَكْبِرٌ
অনর্থক লজ্জাকারী ও অহংকারী ইলম থেকে বঞ্চিত
হয়। (সহীহ বুখারী-১/৩৮)
হযরত আয়েশা (রা.) আনসারী নারীদের প্রশংসা করে
বলেছেন-
نِعْمَ النِّسَاءُ نِسَاءُ الأَنْصَارِ لَمْ يَمْنَعْهُنّ
الحَيَاءُ أَنْ يَتَفَقّهْنَ فِي الدِّينِ
আনসারী নারীরা কতই না উত্তম! দ্বীনের গভীর
জ্ঞান অর্জন করার ক্ষেত্রে লজ্জা তাদের জন্য বাধা হয় না। (সহীহ বুখারী-১/৩৮)
(৬) লৌকিকতা পরিহার করে আল্লাহর সন্তুষ্টি
প্রত্যাশা করা :
وَرَجُلٌ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ وَقِرَاءَةَ الْقُرْآنِ فَأُتِيَ
بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ، فَقَالَ: مَا عَمِلْتَ فِيهَا ؟ قَالَ: تَعَلَّمْتُ
الْعِلْمَ وَقَرَأْتُ الْقُرْآنَ وَعَلَّمْتُهُ فِيكَ، قَالَ: كَذَبْتَ، إِنَّمَا
أَرَدْتَ أَنْ يُقَالَ: فُلَانٌ عَالِمٌ وَفُلَانٌ قَارِئٌ فَقَدْ قِيلَ، فَأُمِرَ
بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ
যে ব্যক্তি ইলম শিখেছে এবং অপরকে শিক্ষা
দিয়েছে এবং কু্রআন পাঠ করত, ক্বিয়ামতের
মাঠে তাকে উপস্থিত করা হবে। আল্লাহ প্রথমে তাকে নিজ প্রদত্ত নে‘মতের কথা স্মরণ করিয়ে দিবেন আর তারও স্মরণ
হবে। তখন আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করবেন, এই সকল নে‘মতের কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তুমি কী করেছ? সে বলবে, আমি ইলম শিখেছি এবং অপরকে শিক্ষা দিয়েছি। তখন
আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা
বলছ। বরং তুমি ইলম শিখেছ ও অপরকে শিক্ষা দিয়েছ এ উদ্দেশ্যে যে, তোমাকে আলেম বলা হবে। আর কুরআন তেলোয়াত করেছ
এ উদ্দেশ্যে যে, তোমাকে ক্বারী
বলা হবে। আর তোমাকে তা বলাও হয়েছে। তারপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হবে। অতঃপর
তাকে মুখের উপর ভর করে টেনে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।(সহীহ মুসলিম-১৯০৫)
উপসংহারঃ
ইসলামে দ্বীনি বিষয়ে জ্ঞানার্জনের যেমন
গুরুত্ব রয়েছে, তেমনি রয়েছে
জাগতিক বিষয়ে জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব। পার্থিব প্রয়োজন পূরণ ও সামাজিক ব্যবস্থাপনা
ও ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য জাগতিক শিক্ষা অতীব জরুরি। উপরন্তু বহু দ্বীনি কাজের
জন্যও জাগতিক বিষয়ে জ্ঞানার্জন প্রয়োজন পড়ে। পক্ষান্তরে জীবনের সব কাজ
ইসলামের বিধান মোতাবেক করার জন্য দ্বীনি শিক্ষার বিকল্প নেই। বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তিতে সমাজ যতই উন্নতি লাভ করুক, ইমান ও আল্লাহভীতি না থাকলে নৈতিক
মূল্যবোধসম্পন্ন মানবিক সমাজ গঠন সম্ভব নয়।
No comments:
Post a Comment
razzakhowlader59@gmil.com