পালক পুত্র বা কন্যা গ্রহণ
করা
এম এ রাজ্জাক হাওলাদার
কুরআনে আল্লাহ তা'আলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রীদেরকে আমাদের মা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন যদিও তারা আমাদের জন্মদাত্রী মা নন। এবং ইবরাহীম আ.
কে আমাদের পিতা হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। যদিও তিনি আমাদের জন্মদাতা পিতা নন। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺃَﻭْﻟَﻰ
ﺑِﺎﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻣِﻦْ ﺃَﻧﻔُﺴِﻬِﻢْ ﻭَﺃَﺯْﻭَﺍﺟُﻪُ ﺃُﻣَّﻬَﺎﺗُﻬُﻢْ
নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মাতা।(সূরা আহযাবঃ৬নং আয়াতের কিয়দাংশ) আল্লাহ তা'আলা অন্যত্র বলেন,
ﻭَﺟَﺎﻫِﺪُﻭﺍ ﻓِﻲ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺣَﻖَّ ﺟِﻬَﺎﺩِﻩِ ﻫُﻮَ ﺍﺟْﺘَﺒَﺎﻛُﻢْ ﻭَﻣَﺎ ﺟَﻌَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪِّﻳﻦِ
ﻣِﻦْ ﺣَﺮَﺝٍ ﻣِّﻠَّﺔَ ﺃَﺑِﻴﻜُﻢْ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ ﻫُﻮَ ﺳَﻤَّﺎﻛُﻢُ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤﻴﻦَ ﻣِﻦ
ﻗَﺒْﻞُ ﻭَﻓِﻲ ﻫَﺬَﺍ ﻟِﻴَﻜُﻮﻥَ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮﻝُ ﺷَﻬِﻴﺪًﺍ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻭَﺗَﻜُﻮﻧُﻮﺍ
ﺷُﻬَﺪَﺍﺀ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻓَﺄَﻗِﻴﻤُﻮﺍ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻭَﺁﺗُﻮﺍ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻭَﺍﻋْﺘَﺼِﻤُﻮﺍ
ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻫُﻮَ ﻣَﻮْﻟَﺎﻛُﻢْ ﻓَﻨِﻌْﻢَ ﺍﻟْﻤَﻮْﻟَﻰ ﻭَﻧِﻌْﻢَ ﺍﻟﻨَّﺼِﻴﺮُ
তোমরা আল্লাহর জন্যে শ্রম স্বীকার কর যেভাবে শ্রম স্বীকার করা উচিত। তিনি তোমাদেরকে পছন্দ করেছেন এবং ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা রাখেননি। তোমরা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মে কায়েম থাক। তিনিই তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন পূর্বেও এবং এই কোরআনেও, যাতে রসূল তোমাদের জন্যে সাক্ষ্যদাতা এবং তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলির জন্যে। সুতরাং তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে শক্তভাবে ধারণ কর। তিনিই তোমাদের মালিক। অতএব তিনি কত উত্তম মালিক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী।(সূরা হজ্ব-৭৮)
অনুরূপভাবে ছোটদের প্রতি স্নেহ ও মমতা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে তাদেরকে ‘ছেলে’ বা বৎস বলার প্রচলিনও রয়েছে।এবং এটি দূষণীয়ও নয়। যেমন হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনাস রা. কে বলেন,
يَا بُنَيَّ إِذَا
دَخَلْتَ عَلَى أَهْلِكَ فَسَلِّمْ يَكُونُ بَرَكَةً عَلَيْكَ وَعَلَى أَهْلِ
بَيْتِكَ
হে আমার বৎস! তুমি যখন বাড়িতে প্রবেশ করবে, তখন বাড়ির লোকদেরকে সালাম দিবে।এটা তোমার জন্য এবং তোমার পরিবারবর্গের জন্য রহমত স্বরূপ।” (সুনানে তিরমিযি-২৬৯৮)
সম্মান প্রদর্শন পূর্বক কাউকে বাবা বা মা বলে সম্বোধন করা জায়েয আছে।তবে কাউকে বাস্তবে বাবা-মার স্থান দিয়ে দেয়া বা নিজ পিতা-মাত ব্যতীত নিজেকে অন্যকারো সন্তান বলে পরিচয় দেয়া, আইডি কার্ড বা পাসপোর্টে নাম দেয়া কখনো জায়েয হবে না।এটা সম্পূর্ণই না জায়েয। যেমন হযরত সা'দ রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি-
عَنْ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ سَمِعْتُ
النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «مَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ
أَبِيهِ، وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ غَيْرُ أَبِيهِ، فَالْجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ
" যে ব্যক্তি আপন পিতা ছাড়া অন্যকে পিতা বলে মেনে নেয় অথচ সে জানে যে, সে তার পিতা নয়, তার জন্য জান্নাত হারাম। "। (সহীহ বুখারী- ৬৭৬৬)
হাদীসের সারমর্মঃ যে ব্যক্তি নিজের জন্মদাতা পিতা ছাড়া অন্য কাউকে পিতা হিসেবে মেনে নয় বা অন্য কারও সাথে জন্মগত সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠার দাবী করে তার জন্য জান্নাত হারাম। অন্য বর্ণনায় এসেছে, সে কুফুরী কর আল্লাহ-ই ভালো জানেন।-- মুফতী ইমদাদুল হক
ইসলামে এতিম ও দুস্থ শিশুদের লালন পালনের বিধান রয়েছে এবং এজন্য অনেক বড় নাকি রয়েছে। পালক পুত্র বা কন্যা গ্রহণ করে সেই পুত্রকন্যার আসল মা বাবার পরিচয় মুছে দিয়ে নিজে মা-বাবা হয়ে যাওয়া বা মা বাবার পরিচয় প্রদান করা ইসলামী শরীয়তে বৈধ নয় , এটা হারাম।(এজন্য দেখুন সূরা আহযাব আয়াত ০৪ ও ০৫) এই অংশটুকুর অনুবাদ ও তাফসির দেখে নেবেন। জাযাকাল্লাহ খাইরান।
No comments:
Post a Comment
razzakhowlader59@gmil.com