ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর হক
এম এ রাজ্জাক হাওলাদার
ভুমিকা:
স্বামী-স্ত্রী একে অপরের অঙ্গস্বরূপ।
সুতরাং একে অপরের হকের প্রতি লক্ষ রাখবে, তাতেই দাম্পত্যজীবন সুখের হবে।
পুরুষদেরকে মহিলাদের হক আদায় করতে হবে। মহিলা বলতে শুধু স্ত্রী নয়। স্ত্রীর হক তো আছেই, স্ত্রীর ওপর স্বামীর যেসব হক রয়েছে, তার চেয়ে বেশি হক রয়েছে স্বামীর ওপর
স্ত্রীর।
স্বামী আগে স্ত্রীর হক আদায় করবে, তারপর স্ত্রী স্বামীর হক আদায় করবে।
অভিজ্ঞতায় দেখা যায়,
স্বামী স্ত্রীর
হক আদায় করলেই স্ত্রী স্বামীর হক আদায় করে। এমনিভাবে পিতা-মাতার ওপরও মেয়েদের হক
রয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর হকগুলো জেনে নেই।
১. স্বামীর আনুগত্য
:
স্বামীর আনুগত্য করা স্ত্রীর কর্তব্য।
তবে যে কোন আনুগত্যই নয়,
বরং যেসব
ক্ষেত্রে আনুগত্যের নিম্ন বর্ণিত তিন শর্ত বিদ্যমান থাকবে।
(ক) ভাল ও সৎ কাজ এবং আল্লাহর বিধান বিরোধী
নয় এমন সকল বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য করা। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অবাধ্যতায় কোন
সৃষ্টির আনুগত্য বৈধ নয়।
(খ) স্ত্রীর
সাধ্য ও সামর্থ্যরে উপযোগী বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য করা। কারণ আল্লাহ তাআলা মানুষকে
তার সাধ্যের বাইরে অতিরিক্ত দায়িত্বারোপ করেন না।
(গ) যে নির্দেশ
কিংবা চাহিদা পূরণে কোন ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, সে ব্যাপারে স্বামীর আনুগত্য করা।
আনুগত্য আবশ্যক করে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ وَلِلرِّجَالِ
عَلَيْهِنَّ دَرَجَةٌ وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
নারীদের তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে যেমন আছে
তাদের উপর পুরুষগণ
শ্রেষ্ঠত্ব ও কর্তৃত্বের অধিকারী। [সূরা বাকারা-২:২২৮]
আল্লাহ তাআলা আরো
বলেন:
الرِّجَالُ
قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ
وَبِمَا أَنْفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ
পুরুষগণ নারীদের উপর কর্তৃত্বকারী। কারণ আল্লাহ তাআলা-ই
তাদের মাঝে তারতম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের বিধান রেখেছেন। দ্বিতীয়ত পুরুষরাই ব্যয়-ভার
গ্রহণ করে।
[সূরা নিসা-৪: ৩৪]
উপরন্তু এ আনুগত্যের দ্বারা বৈবাহিক
জীবন স্থায়িত্ব পায়,
পরিবার চলে সঠিক
পথে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বামীর আনুগত্যকে এবাদতের
স্বীকৃতি প্রদান করে বলেন—
যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজান মাসের রোজা রাখে এবং নিজের
লজ্জাস্থান হেফাজত করে ও স্বীয় স্বামীর আনুগত্য করে, সে নিজের ইচ্ছানুযায়ী জান্নাতের যে কোন
দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করবে। [আহমাদ : ১৫৭৩]
স্বামীর কর্তব্য, এ সকল অধিকার প্রয়োগের ব্যাপারে
আল্লাহর বিধানের অনুসরণ করা। স্ত্রীর মননশীলতা ও পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতে
সত্য-কল্যাণ ও উত্তম চরিত্রের উপদেশ প্রদান করা কিংবা হিতাহিত বিবেচনায় বারণ
করা।উপদেশ প্রদান ও বারণ করার ক্ষেত্রে উত্তম আদর্শ ও উন্নত মননশীলতার পরিচয়
দেয়া । এতে সানন্দ চিত্তে ও স্বাগ্রহে স্ত্রীর
আনুগত্য পেয়ে যাবে।
২. স্বামী-আলয়ে অবস্থান:
নেহায়েত প্রয়োজন ব্যতীত ও অনুমতি
ছাড়া স্বামীর বাড়ি থেকে বের হওয়া অনুচিত।মহান আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা
শ্রেষ্ঠ নারীদের ঘরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রীদের সম্বোধন করে বলেন—সকল নারীই এর অন্তর্ভুক্ত:
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ
الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
তোমরা স্ব স্ব গৃহে অবস্থান কর, প্রাচীন যুগের সৌন্দর্য প্রদর্শনের মত
নিজেদের কে প্রদর্শন করে বেড়িও না। [সূরা আহজাব-৩৩:৩৩]
স্ত্রীর উপকার নিহিত এবং যেখানে তারও
কোন ক্ষতি নেই,
এ ধরনের কাজে
স্বামীর বাধা সৃষ্টি না করা। যেমন পর্দার সাথে, সুগন্ধি ও সৌন্দর্য প্রদর্শন পরিহার
করে বাইরে কোথাও যেতে চাইলে বারণ না করা। ইবনে উমর রা. বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন:
عَنْ أُمِّ
سَلَمَةَ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا سَلَّمَ يَمْكُثُ فِي مَكَانِهِ يَسِيرًا» قَالَ ابْنُ
شِهَابٍ: «فَنُرَى وَاللَّهُ أَعْلَمُ لِكَيْ يَنْفُذَ مَنْ يَنْصَرِفُ مِنَ
النِّسَاءِ»
আল্লাহর বান্দিদেরকে তোমরা আল্লাহর ঘরে যেতে বাধা দিয়ো না।
[সহীহ বুখারী: ৮৪৯ ]
আব্দুল্লাহ ইবনে
মাসঊদ (রা:) এর স্ত্রী যয়নব সাকাফী (রা.) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম আমাদেরকে বলতেন:
তোমাদের কেউ মসজিদে যাওয়ার ইচ্ছে করলে সুগন্ধি ব্যবহার
করবে না। [সহীহ মুসলিম : ৬৭৪]
৩. নিজের ঘর এবং
সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখা
স্বামীর সম্পদ সংরক্ষণ করা। স্বামীর
সাধ্যের অতীত এমন কোন আবদার কিংবা প্রয়োজন পেশ না করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
স্ত্রী স্বীয় স্বামীর ঘরের জিম্মাদার। এ জিম্মাদারির
ব্যাপারে তাকে জবাবদিহিতার সম্মুখীন করা হবে। [সহীহ বুখারী: ২৫৪৬]
৪. নিজের সতীত্ব ও
সম্মান রক্ষা করা
পূর্বের কোন এক আলোচনায় আমরা রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একটি হাদিস এ মর্মে উল্লেখ করেছি যে, নিজেকে কখনো পরীক্ষা কিংবা ফেতনার
সম্মুখীন না করা।
৫. স্বামীর অপছন্দনীয় এমন কাউকে তার ঘরে প্রবেশের অনুমতি
না দেয়া
হোক না সে নিকট
আত্মীয় কিংবা আপনজন। যেমন ভাই-বেরাদার। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেনঃ
তোমাদের অপছন্দনীয় কাউকে বিছানায় জায়গা না দেয়া
স্ত্রীদের কর্তব্য।
[মুসলিম : ২১৩৭]
ইসলামে
নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই পর্দা ফরজ
স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ব্যতীত
নফল রোজা না রাখা। কারণ,
রোজা নফল—আনুগত্য ফরজ। রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
নারীর জন্য স্বামীর উপস্থিতিতে অনুমতি ছাড়া রোজা রাখা বৈধ
নয়। অনুরূপ ভাবে অনুমতি ব্যতীত তার ঘরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়াও বৈধ নয়। [সহীহ বুখারী : ৪৭৬৯]
স্বামীর উপর
স্ত্রীর অধিকার
স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কর্তব্য, সুখকর দাম্পত্য জীবন, সুশৃঙ্খল পরিবার, পরার্থপরতায় ঋদ্ধ ও সমৃদ্ধ
স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন অটুট রাখার স্বার্থে ইসলাম জীবন সঙ্গী স্বামীর উপর কতিপয়
অধিকার আরোপ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি এখানে প্রদত্ত হল।
১. দেন মোহর : নারীর দেন মোহর পরিশোধ করা ফরজ। এ হক
তার নিজের,
পিতা-মাতা কিংবা
অন্য কারো নয়। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَآتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً
তোমরা প্রফুল্ল চিত্তে স্ত্রীদের মোহরানা দিয়ে দাও। [নিসা-৪:৪]
২. ভরন পোষণ : সামর্থ্য ও প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী
স্ত্রীর ভরন-পোষণ করা স্বামীর কর্তব্য। স্বামীর সাধ্য ও স্ত্রীর মর্তবার ভিত্তিতে
এ ভরন-পোষণ কম বেশি হতে পারে।অনুরূপ ভাবে সময় ও স্থান ভেদে এর মাঝে তারতম্য হতে
পারে।আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
لِيُنْفِقْ ذُو سَعَةٍ مِنْ سَعَتِهِ وَمَنْ قُدِرَ عَلَيْهِ
رِزْقُهُ فَلْيُنْفِقْ مِمَّا آتَاهُ اللَّهُ لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا
إِلَّا مَا آتَاهَا سَيَجْعَلُ اللَّهُ بَعْدَ عُسْرٍ يُسْرًا
বিত্তশালী স্বীয় বিত্তানুযায়ী ব্যয় করবে। আর যে সীমিত
সম্পদের মালিক সে আল্লাহ প্রদত্ত সীমিত সম্পদ হতেই ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যে
পরিমাণ দিয়েছেন,
তারচেয়ে
বেশি ব্যয় করার
আদেশ কাউকে প্রদান করেন না। [সূরা তালাক-৬৫:৭]
৩. স্ত্রীর প্রতি
স্নেহশীল ও দয়া-পরবশ থাকা: স্ত্রীর প্রতি রূঢ় আচরণ না করা। তার
সহনীয় ভুলচুকে ধৈর্যধারণ করা। স্বামী হিসেবে সকলের জানা উচিত, নারীরা মর্যাদার সম্ভাব্য সবকটি আসনে
অধিষ্ঠিত হলেও,
পরিপূর্ণ রূপে
সংশোধিত হওয়া সম্ভব নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
তোমরা নারীদের ব্যাপারে কল্যাণকামী। কারণ, তারা পাঁজরের হাড় দ্বারা সৃষ্ট।
পাঁজরের উপরের হাড়টি সবচেয়ে বেশি বাঁকা। (যে হাড় দিয়ে নারীদের সৃষ্টি করা হয়েছে)
তুমি একে সোজা করতে চাইলে,
ভেঙে ফেলবে।
আবার এ অবস্থায় রেখে দিলে,
বাঁকা হয়েই
থাকবে। তাই তোমরা তাদের কল্যাণকামী হও, এবং তাদের ব্যাপারে সৎ-উপদেশ গ্রহণ কর।” [বুখারী]
৪. স্ত্রীর
ব্যাপারে আত্মমর্যাদাশীল হওয়া : হাতে ধরে ধরে তাদেরকে হেফাজত ও সুপথে
পরিচালিত করা। কারণ,
তারা
সৃষ্টিগতভাবে দুর্বল,
স্বামীর যে কোন
উদাসীনতায় নিজেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে, অপরকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এ কারণে রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীর ফেতনা হতে খুব যত্ন সহকারে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেনঃ
আমার অবর্তমানে পুরুষদের জন্য নারীদের চেয়ে বেশি ক্ষতিকর কোন ফেতনা রেখে আসিনি। [সহীহ বুখারী:৪৭০৬]
নারীদের
ব্যাপারে আত্মম্ভরিতার প্রতি লক্ষ্য করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেন,
তোমরা সা’আদ এর আবেগ ও আত্মসম্মানবোধ দেখে আশ্চর্যান্বিত হচ্ছ। আমি তার
চেয়ে
বেশি
আত্মসম্মানবোধ করি,
আবার আল্লাহ
আমারচে’
বেশি অহমিকা
সম্পন্ন।
[মুসলিম : ২৭৫৫]
শায়খুল ইসলাম ইবনে
তাইমিয়া রহ. বলেন,
যার মাঝে আত্মমর্যাদাবোধ নেই সে দাইয়ূছ (অসতী নারীর স্বামী, যে নিজ স্ত্রীর অপকর্ম সহ্য করে)।
হাদিসে এসেছেঃ দাইয়ূছ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। [দারামি : ৩৩৯৭]
মানুষের সবচেয়ে বেশি আত্মমর্যাদার
বিষয় নিজের পরিবার। এর ভেতর অগ্রাধিকার প্রাপ্ত স্বীয় স্ত্রী। অতঃপর অন্যান্য
আত্মীয় স্বজন এবং অধীনস্থগণ। পরিশেষে নির্ঘাত বাস্তবতার কথা স্বীকার করে বলতে হয়, কোন পরিবার সমস্যাহীন কিংবা মতবিরোধ
মুক্ত নয়। এটাই মানুষের প্রকৃতি ও মজ্জাগত স্বভাব। এর বিপরীতে কেউ স্বীয়
পরিবারকে নিষ্কণ্টক অথবা ঝামেলা মুক্ত কিংবা ফ্রেশ মনে করলে, ভুল করবে। কারণ, এ ধরাতে সর্বোত্তম পরিবার কিংবা সুখী
ফ্যামিলির একমাত্র উদাহরণ আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
পরিবার ও ফ্যামিলি। সেখানেও আমরা মানবিক দোষ-ত্রুটির চিত্র দেখতে পাই, অন্য পরিবারের পবিত্রতা কোথায় ?
জ্ঞানী-গুণীজনের স্বভাব ভেবে-চিন্তে
কাজ করা,
ত্বরা প্রবণতা
পরিহার করা,
ক্রোধ ও
প্রবৃত্তিকে সংযমশীলতার সাথে মোকাবিলা করা।কারণ, তারা জানে যে কোন মুহূর্তে ক্রোধ ও
শয়তানের প্ররোচনায় আত্মমর্যাদার ছদ্মাবরণে মারাত্মক ও কঠিন গুনাহ হয়ে যেতে
পারে।যার পরিণতি অনুসূচনা বৈকি? আবার এমনও নয় যে, আল্লাহ তাআলা সমস্ত কল্যাণ ও সুপথ
বান্দার নখদর্পে করে দিয়েছেন। তবে অবশ্যই তাকে মেধা, কৌশল ও বুদ্ধি প্রয়োগ করতে হবে।
একজন স্বামীর ওপর
স্ত্রীর হক বা অধিকার
১. সামর্থ্য অনুযায়ী ভরণ-পোষণ ও খরচাদি দিতে কোনো প্রকার
অবহেলা না করা। ২. স্ত্রীকে দ্বীনি মাসআলা-মাসায়িল শিক্ষা প্রদান করা।
৩. ভালো কাজের প্রতি উদ্ভূত করা।
৪. যাদের সঙ্গে দেখা দেয়ার ব্যাপারে ইসলামের অনুমতি রয়েছে, তাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করার সুযোগ
প্রদান করা।
৫. আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার তাগিদ প্রদান করা।
৬. কোনো প্রকার ভুল বা অসাবধানতা হলে ধৈর্য ধারণ করা।
৭. শাসন ও সংশোধনের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা।
৭. মহর আদায় করা।
৮. ইসলামি শরিয়তের সীমার মধ্যে থেকে স্ত্রীর মন জয় করা।
৯. একাধিক স্ত্রী থাকলে তাদের মধ্যে সমতা বজায় রাখা।
১০. নির্যাতন না করা।
যারা তাদের স্ত্রীর কাছে উৎকৃষ্ট...
নবিজি [সা.] বলেছেন, তোমাদের মধ্যে তারাই উৎকৃষ্ট, যারা তাদের স্ত্রীর কাছে উৎকৃষ্ট এবং
আপন পরিবার-পরিজনের প্রতি স্নেহশীল। [তিরমিজি শরিফ] অপর এক হাদিসে রাসুল [সা.]
বলেছেন,
যে ব্যক্তি তার
স্ত্রীর কষ্টদায়ক আচরণে ধৈর্য ধারণ করবে, মহান আল্লাহ তাকে হজরত আইয়ুব (আ.)-এর
সমান ‘সওয়াব’ দান করবেন। হজরত আবু হোরায়রা [রা.]
থেকে বর্ণিত,
রাসুল [সা.]
বলেছেন,
হে মানব জাতি!
স্ত্রীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার ব্যাপারে আমার হুকুম মান্য কর। পাজরের হাড় থেকে
তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে,
স্বভাবতই তারা
বাঁকা।
যদি তুমি বাঁকা হাড়কে শক্তির দ্বারা
সোজা করতে যাও,
তবে তা ভেঙে
যাবে। তাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ছেড়ে দাও, সব সময় বাঁকাই থাকবে। এজন্য আমার শেষ
নির্দেশ হিসেবে কবুল কর,
স্ত্রীর সঙ্গে
ভালো ব্যবহার কর। [বুখারী ও মুসলিম]
স্ত্রীর সঙ্গে সুন্দর ও ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের আপন করে নিতে হবে। স্বামীর
কাছ থেকে যখন কোনো স্ত্রী ভালোবাসা পাবে, তখন সে তার সবটুকু স্বামীর জন্য উজাড়
করে দিবে। রাসুল [সা.] বলেছেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর উভয়ে যখন একে অপরের
দিকে ভালোবাসার নজরে তাকাবে, মহান আল্লাহ তাদের দিকে রহমতের নজরে
তাকাবেন।
No comments:
Post a Comment
razzakhowlader59@gmil.com