Friday, August 19, 2022

তাসবীহ আঙ্গুলের গিরায় হিসাব করে পড়বে

 


তাসবীহ আঙ্গুলের গিরায় হিসাব করে পড়বে

এম এ রাজ্জাক হাওলাদার

প্রতিটি মানুষ দৈনান্দিন সালাত কিংবা অন্য সময়ে বিভিন্ন পদ্ধতিতে তাসবীহ আদায় করে থাকেন। কোন পদ্ধতিতে আদায় করবে সে বিষয় নিয়ে সংক্ষেপে কিছু আলোচনা করছি।

The best way of counting "TASBIH"

  قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ عَلَيْكُنَّ بِالتَّسْبِيحِ وَالتَّهْلِيلِ وَالتَّقْدِيسِ وَاعْقِدْنَ بِالأَنَامِلِ فَإِنَّهُنَّ مَسْئُولاَتٌ مُسْتَنْطَقَاتٌ وَلاَ تَغْفُلْنَ فَتَنْسَيْنَ الرَّحْمَةَ ‏"َ

‏‏“The Messenger of Allah () said to us: ‘Hold fast to At-Tasbih, At-Tahlil, and At-Taqdis, and count them upon the fingertips, for indeed they shall be questioned, and they will be made to speak. And do not become heedless, so that you forget about the Mercy (of Allah).”

রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেনঃ অবশ্যই তোমরা তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ), তাহলীল (লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ)ও তাক্বদীস (সুব্বুহুন কুদ্দূসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রূহ অথবা সুবহানালা মালিকিল কুদ্দূস) আঙ্গুলের গিরায় হিসাব করে পড়বে। কেননা এগুলোকে ক্বিয়ামাতের দিন জিজ্ঞাসা করা হবে এবং কথা বলতে আদেশ দেয়া হবে। সুতরাং তোমরা রহমাত (অনুগ্রহের কারণ) সম্পর্কে উদাসীন থেকো না এবং তা ভুলে যেও না। (জামে তিরমিজি-৩৫৮৩ সামেলা)

তাসবহের দানা দিয়ে তাসবীহ বা জিকির করার বিধান। অনেকেই বলেন, তাসবীহ দানা দিয়ে জিকির করা জায়েজ নাই। আবার অনেকে বলেন আঙ্গুল দিয়ে জিকির বা তাসবহ পাঠ করা উত্তম৷

যিকির বা তাসবহ পাঠে তাসবহ-দানা ব্যবহার করা জায়েয কি না এ সম্পর্কে ফকিহগণ বলেছেন সালাতের বাইরে হাত, কংকর ও তাসবহ-মালা দ্বারা তাসবহ পাঠের অনুমতি দিয়েছেন। পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী কোনো ফকিহ একে নাজায়েয বা মাকরূহ বলেন নি। কেননা এটি কেবল যিকিরের উসিলা বা স্মরণ করিয়ে দেয়া ও গণনার মাধ্যম মাত্রদলিল হিসেবে তারা বলেন,

হাদীস শরীফে এসেছে, উম্মুল মুমিনীন সাফিয়্যা (রা:)থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

دَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ وَبَيْنَ يَدَيَّ أَرْبَعَةُ آلَافِ نَوَاةٍ أُسَبِّحُ بِهَا ، فَقَالَ : لَقَدْ سَبَّحْتِ بِهَذِهِ ، أَلَا أُعَلِّمُكِ بِأَكْثَرَ مِمَّا سَبَّحْتِ بِهِ ، فَقُلْتُ : بَلَى عَلِّمْنِي . فَقَالَ : قُولِي : سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ

একদিন রাসূলুল্লাহ () আমার কাছে এলেন। আমার কাছে তখন চার হাজার খেজুর-বীচি ছিল। এগুলো দ্বারা আমি তাসবহ পাঠ করছিলাম। তিনি বললেন, তুমি তো এগুলোর মাধ্যমে তাসবহ পাঠ করছ। যে পরিমাণ তাসবহ তুমি পাঠ করেছ, তদপেক্ষা বেশী পরিমাণের উপায় কি আমি তোমাকে শিখিয়ে দিব? আমি বললাম, অবশ্যই আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বললেন, তুমি বলবে, (سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ) – সৃষ্টির পরিমাণ সংখ্যকবার সুবহানাল্লাহ। (জামে তিরমিযি-৩৫৫৪)

অন্য বর্ননায় এসেছে, হযরত সাদ ইবন আবূ ওয়ক্কাস (রা:) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসূলুল্লাহ ()এর সঙ্গে এক মহিলার কাছে গেলেন। উক্ত মহিলার সামনে তখন কিছু খেজুর-বীচি ছিল। এগুলো দিয়ে তিনি তাসবহ পাঠ করছিলেন। নবীজী ()তাকে বললেন, এর চেয়ে সহজ ও উত্তম উপায় সম্পর্কে কি তোমাকে অবহিত করব? তা হল,

سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ فِي السَّمَاءِ وَسُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ فِي الأَرْضِ وَسُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ مَا بَيْنَ ذَلِكَ وَسُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ مَا هُوَ خَالِقٌ وَاللَّهُ أَكْبَرُ مِثْلَ ذَلِكَ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ مِثْلَ ذَلِكَ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ مِثْلَ ذَلِكَ

অর্থাৎ, আল্লাহ মহাপবিত্র আকাশে তার সৃষ্টি জীবের সমসংখ্যক, আল্লাহ মহাপবিত্র দুনিয়াতে তার সৃষ্ট জীবের সমসংখ্যক, আল্লাহ তাআলা মহাপবিত্র এতদুভয়ের মধ্যকার সৃষ্টির সমসংখ্যক, আল্লাহ তাআলা মহাপবিত্র তিনি যে সকল প্রাণী সৃষ্টি করবেন তার সমসংখ্যক, অনুরূপ পরিমাণ আল্লাহ তাআলা মহান, অনুরূপ পরিমাণ আল্লাহ তাআলার প্রশংসা, অনুরূপ সংখ্যকবার আল্লাহ তাআলা ছাড়া কল্যাণ করার বা ক্ষতিসাধনের আর কোন শক্তি নেই। (সুনানে আবু দাউদ-১৩১৭)

রাসূলুল্লাহ ()উক্ত মহিলাকে নিষেধ করেন নি। তিনি কেবল এর চেয়ে উত্তম ও সহজটা বলে দিয়েছেন। যদি এটি নিষিদ্ধ হত তাহলে তিনি বলে দিতেন। সুতরাং এই হাদিস ও অনুরূপ আরো হাদিস একথার দলিল যে, জিকিরের গণনার জন্য প্রচলিত তাসবহ-দানা ব্যবহারে কোনো অসুবিধা নেই। আর বর্ণিত আছে যে, আবু হুরায়রা (রা:)ও এরূপ করতেন। (আল বাহরুর রায়িক-২/৩১; আল মাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যা-১১/২৮৩; ফয়যুল কাদির-৪/৩৫৫; মাজমুউল ফাতাওয়া-২২/৫০৬)

তবে জিকির গণনায় তাসবিহ-দানা ব্যবহার করার চাইতে উত্তম হল, হাতের আঙ্গুল বা আঙ্গুলের কর ব্যবহার করা। কেননা তাসবিহ মালা হাতে থাকলে রিয়া বা লোক দেখানোর ভাব আসতে পারে।

তাছাড়া হাদিস শরিফে এসেছে, ইয়ুসাইরাহ (রা:)বলেন,

أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ أَمَرَهُنَّ أَنْ يُرَاعِينَ بِالتَّكْبِيرِ وَالتَّقْدِيسِ وَالتَّهْلِيلِ وَأَنْ يَعْقِدْنَ بِالْأَنَامِلِ فَإِنَّهُنَّ مَسْئُولَاتٌ مُسْتَنْطَقَاتٌ

রাসূলুল্লাহ ()তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা তাকবির, তাকদিস এবং তাহলিল এগুলো খুব ভালভাবে স্মরণে রাখবে এবং এগুলোকে আঙ্গুলে গুণে রাখবে। কেননা আঙ্গুলগুলোকে জিজ্ঞাসা করা হবে এবং এগুলোও সেদিন অর্থাৎ কেয়ামতের দিন কথা বলবে। (মুসনাদে আহমাদ-২৫৮৪১; আবু দাউদ-১৫০১ ই.ফা)

কিছু প্রশ্ন উত্তর পর্ব:

তসবীহ নাকি হাতের আঙুল ব্যবহার করা উত্তম?

আপনার জিজ্ঞাসার ৫৮২তম পর্বে তসবীহ নাকি হাতের আঙ্গুল ব্যবহার করা, কোনটি উত্তম সে বিষয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে ফোনের মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন লুৎফুন নাহার। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া

প্রশ্ন : আমরা আসতাগফিরুল্লাহ বা দরুদ ১০০ বার পড়ার ক্ষেত্রে তসবহ ব্যবহার করি। আমি ওই বইতে পেয়েছি যে তসবির চেয়ে হাতের আঙুল ব্যবহার করা উত্তম, কারণ রাসুল (সা.)-এর সময় তসবহ ছিল না। আমাদের আসলে কোনটা করা উচিত?

উত্তর : হাতের আঙুলের মধ্যে গণনা করা হলো সুন্নাহ। যেহেতু রাসুল (সা.) বলেছেন, এগুলো কথা বলবে, এগুলো সাক্ষ্য দেবে। সুতরাং, উত্তম হলো এটি করা, এটা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে।

তাসবীহদানা এবং কাউন্টার মেশিন দিয়ে তাসবিহ পাঠ করার বিধান:

প্রশ্ন: তাসবীহদানা এবং কাউন্টার মেশিন দিয়ে তাসবিহ পাঠ করা সুন্নাত না বিদায়াত? আশা করি, দলিল ভিত্তিক উত্তর প্রদান করে সাহায্য করবেন৷

উত্তর: হাতের আঙ্গুল দিয়ে তাসবীহ গণনা করা উত্তম। কেননা, এই আঙ্গুলগুলো কিয়ামতের দিন সাক্ষ্য দিবে। তবে কারও আঙ্গুলে সমস্যা থাকলে কিংবা অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ হওয়ার কারণে সংখ্যা মনে রাখতে না পারলে তখন তাসবীহ দানা বা ডিজিটাল কাউন্টার মেশিন ব্যবহার করতে দোষ নেই ইনশাআল্লাহ।

শাইখ ইবনে উছাইমীন (রহ)

প্রশ্ন: আঙ্গুল দ্বারা তাসবীহ গণনা করা উত্তম না তাসবীহদানা দ্বারা?
উত্তর: তাসবীহ দানা ব্যবহার করা জায়েয। তবে উত্তম হল, হাতের আঙ্গুল ও আঙ্গুলের কর ব্যবহার করা। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

اعْقِدْنَ بِالْأَنَامِلِ فَإِنَّهُنَّ مَسْئُولَاتٌ مُسْتَنْطَقَاتٌ

“*আঙ্গুল দ্বারা তাসবীহ গণনা কর। কেননা (কিয়ামত দিবসে) এগুলো জিজ্ঞাসিত হবে এবং এগুলোকে কথা বলানো হবে।*” (আহমাদ, আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ কংকর দ্বারা তাসবীহ গণনা করা। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ দু, অনুচ্ছেদঃ তাসবীহ্ পাঠ করার ফযীলত।)
তাছাড়া তাসবীহ্ ছড়া হাতে নিয়ে থাকলে রিয়া বা লোক দেখানো ভাবের উদ্রেক হতে পারে। আর যারা তসবীহ্ ছড়া ব্যবহার করে সাধারণতঃ তাদের অন্তর উপস্থিত থাকে না। এদিক ওদিকে তাকায়। সুতরাং আঙ্গুল ব্যবহার করাই উত্তম ও সুন্নাত সম্মত। [দ্র: ফতোয়া আরকানুল ইসলাম-২৬০ নং প্রশ্নের উত্তর] (সূত্র: ইসলামী প্রশ্ন উত্তর-১৭ নভে: ২০১৮)

তাসবীহ দানা দ্বারা তাসবীহ গণনা করা:

সমাজে তাসবীহ দানা দিয়ে যিকির করার প্রচলন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ফরয ছালাতের পর, হাটে-বাজারে, রাস্তায়, বাসে-ট্রেনে, অফিস-আদালতে সর্বত্র একশ্রেণীর মানুষকে তাসবীহ গণনা করতে দেখা যায়। এতে যে রিয়া সৃষ্টি হয় তাতে কোন সন্দেহ নেই। অনেক মসজিদের কাতারে কাতারে রেখে দেয়া হয় কিংবা দেওয়ালে ও জালানায় ঝুলিয়ে রাখা হয়। তাসবীহই যেন মূল ইবাদত। অথচ এর ছহীহ কোন ভিত্তি নেই। উক্ত মর্মে যে সমস্ত বর্ণনা রয়েছে তার সবই জাল কিংবা যঈফ। 

 أ عَنْ عَائِشَةَ بِنْتِ سَعْدِ عَنْ أَبِيهَا أَنَّهُ دَخَلَ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ   عَلَى امْرَأَةٍ وَبَيْنَ يَدَيْهَا نَوًى أَوْ حَصًى تُسَبِّحُ بِهِ فَقَالَ أُخْبِرُكِ بِمَا هُوَ أَيْسَرُ عَلَيْكِ مِنْ هَذَا أَوْ أَفْضَلُ فَقَالَ سُبْحَانَ اللهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ فِى السَّمَاءِ وَسُبْحَانَ اللهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ فِى الأَرْضِ وَسُبْحَانَ اللهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ بَيْنَ ذَلِكَ وَسُبْحَانَ اللهِ عَدَدَ مَا هُوَ خَالِقٌ وَاللهُ أَكْبَرُ مِثْلُ ذَلِكَ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ مِثْلُ ذَلِكَ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ مِثْلُ ذَلِكَ. وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ مِثْلُ ذَلِكَ

আয়েশা বিনতে সা তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তার পিতা রাসূল ()-এর সাথে এক মহিলার নিকটে যান। তখন স্ত্রীলোকটির সম্মুখে কিছু খেজুরের বিচি অথবা কংকর ছিল, যার দ্বারা সে তাসবীহ গণনা করছিল। রাসূল () বললেন, আমি কি তোমাকে এমন কথা বলে দিব না, যা এটা অপেক্ষা অধিক সহজ বা উত্তম হবে? তা হচ্ছে- সুবহা-নাল্লাহঅর্থাৎ, আল্লাহর পবিত্রতা যে পরিমাণ তিনি আসমানে মাখলূক সৃষ্টি করেছেন, ‘সুবহা-নাল্লাহযে পরিমাণ তিনি যমীনে মাখলূক সৃষ্টি করেছেন, ‘সুবহা-নাল্লাহযে পরিমাণ উভয়ের মাঝে রয়েছে এবং সুবহা-নাল্লাহযে পরিমাণ তিনি ভবিষ্যতে সৃষ্টি করবেন। আল্লাহু আকবারউহার অনুরূপ, ‘আলহামদু লিল্লাহউহার অনুরূপ লা ইলাহা ইল্লাল্লা-হুউহার অনুরূপ এবং লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহঅনুরূপ।(তিরমিযী হা/৩৫৬৮, ২/১৯৭ পৃঃ ও হা/৩৫৫৪; আবুদাঊদ হা/১৫০০, ১/২১০ পৃঃ; মিশকাত হা/২৩১১; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২২০৩, ৫/৯০ পৃঃ।) 

তাহক্বীক্ব: যঈফ। উক্ত হাদীছের সনদে খুযায়মাহ ও সাঈদ ইবনু আবী হেলাল নামে দুইজন ত্রুটিপূর্ণ রাবী আছে।[যঈফ তিরমিযী হা/৩৫৬৮, ২/১৯৭ পৃঃ, ‘দুআ সমূহঅধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৩০; যঈফ আবুদাঊদ হা/১৫০০, ১/২১০ পৃঃ; যঈফ আত-তারগীব হা/৯৫৯; সিলসিলা যঈফাহ হা/৮৩।] তাছাড়া এটি ছহীহ হাদীছের বিরোধী। কারণ রাসূল () ডান হাতের আঙ্গুলে তাসবীহ গণনা করতেন।[আবুদাঊদ হা/১৫০২, ১/২১০ পৃঃ; বায়হাক্বী, আস-সুনানুল কুবরা হা/৩১৪৮; ছহীহ ইবনে হিববান হা/৮৪৩; তিরমিযী হা/৩৪৮৬। উল্লেখ্য যে, ভারতীয় ছাপা তিরমিযীতে উক্ত অংশ নেই দ্রঃ ২/১৮৬ পৃঃ।]

  عَنْ عَلِىٍّ قَالَ قَالَ النَّبِىُّ   نِعْمَ الْمُذْكِرُ السُّبْحَةَ

আলী (রাঃ) বলেন, রাসূল () বলেছেন, যে দানা দ্বারা যিকির করে সে কতইনা উত্তম! [দায়লামী, মুসনাদুল ফেরদাউদ ৪/৯৮ পৃঃ।]

তাহক্বীক্ব: বর্ণনাটি জাল। উক্ত বর্ণনার প্রত্যেক রাবীই ত্রুটিপূর্ণ।[সিলসিলা যঈফাহ হা/৮৩।] আলবানী বলেন, إِنَّ السُّبْحَةَ بِدْعَةٌ لَمْ تَكُنْ فِىْ عَهْدِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا حَدَثَتْ بَعْدَهُ নিশ্চয় তাসবীহ দানা বিদআত। এটি রাসূল ()-এর যুগে ছিল না। বরং তাঁর পরে সৃষ্টি হয়েছে[সিলসিলা যঈফাহ হা/৮৩-এর আলোচনা দ্রঃ।]

  عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ كَانَ النَّبِىُّ  يُسَبِّحُ بِالْحَْصَى

আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম () কংকর দ্বারা তাসবীহ গণনা করতেন।[আবুল কাসেম জুরজানী, তারীখে জুরজান হা/৬৮।] 

তাহক্বীক্ব: বর্ণনাটি জাল। এর সনদে কুদামা বিন মাযঊন এবং ছালেহ ইবনু আলী নামে অভিযুক্ত রাবী আছে।[সিলসিলা যঈফাহ হা/১০০২।]

 সারকথা হল “হাতের আঙ্গুলের তাসবহ পড়া অতি উত্তম এবং এটা সুন্নাহ সম্মত।” তবে গণনায় যদি সংখ্যাধিক্য তাসবহ হয় যেমন হাযার বার, তবে গণনার সুবিধার্থে তসবহ দানা বা অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। যেহেতু কতিপয় সাহাবাগণের ব্যক্তিগত আমল থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায় তাই এটাকে বিদয়াত বলা উচিৎ নয়মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সঠিক জ্ঞান অর্জন করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

No comments:

Post a Comment

razzakhowlader59@gmil.com