তীব্র তাপদাহের পরে রহমতের বৃষ্টি
-এম
এ রাজ্জাক হা্ওলাদার
তীব্র তাপদাহ হলো জাহান্নামের নিঃশ্বাস, তাই
জাহান্নামের ভয়ে বেশি করে এবং লম্বা লম্বা সূরা দিয়ে নফল নামাজ আদায় করা উত্তম।
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তাপদাহ হবে, তখন
বেশি নামাজ আদায় করো। কারণ তীব্র তাপদাহ হলো জাহান্নামের নিঃশ্বাস’। (শিশকাত: ৫৯১)
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার ক্রোধ থেকে বাঁচার জন্য
রাসূল (সা.) আমাদের বিভিন্ন দোয়া শিখিয়েছেন। নিচে এমনই গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া
দেওয়া হলো।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ
وَتَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ وَفُجَاءَةِ نِقْمَتِكَ وَجَمِيعِ سَخَطِكَ
‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই আপনার
নিয়ামতের বিলুপ্তি, আপনার অনুকম্পার পরিবর্তন, আকস্মিক
শাস্তি এবং আপনার সমস্ত ক্রোধ থেকে’। (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪৫)
আসুন আমরা সবাই অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার জন্য বেশি বেশি
করে দোয়াটি পড়ি ও শেয়ার দিয়ে অন্যদের পড়তে বলি। ইয়া আল্লাহ! আমাদের সবাইকে
জাহান্নামের নিঃশ্বাস অতিরিক্ত গরমের হাত থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহ ৭৬ বছরের মধ্যে
সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর। চলতি মাসে ২৩ দিন তাপপ্রবাহ অব্যাহত
রয়েছে। ফলে ১৯৪৮ সাল থেকে এক বছরের হিসাবে তাপপ্রবাহের দিনের রেকর্ড ভেঙেছে আজ
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল-২৪)।
উদাহরণ
স্বরূপ একটি ঘটনা নাবলে পারছি না-
একবার হযরত মুসা (আঃ)এর আমলে দীর্ঘদিন যাবত বৃষ্টি
বন্ধ ছিলো। তাঁর উম্মতরা তাঁর কাছে এসে বললো "হে নবী, আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য দোয়া করেন, এই বৃষ্টিহীন গরম আর সহ্য হয় না"।
হযরত মুসা (আঃ) সবাইকে নিয়ে বৃষ্টির জন্য
নামাজ পরে দোয়া করতে শুরু করলেন।
দোয়া করার সাথে সাথে রোদের তীব্রতা আরো বেড়ে
গেলো।
হযরত মুসা (আঃ) অবাক হলেন। তিনি জিজ্ঞাসা
করলেন
- আল্লাহ, বৃষ্টির জন্য দোয়া করলাম, তুমি রোদের তেজ বাড়াইয়া দিলা।
আল্লাহর পক্ষ থেকে জবাব আসলো-
- এই জমায়েতে এমন এক ব্যক্তি আছে, যে চল্লিশ বছর যাবত আমার নাফরমানী, আমার বিরোধীতা করছে, একটি দিনের জন্যও আমার বাধ্য হয়নি। তাঁর
কারনেই বৃষ্টি আসা বন্ধ আছে।
হযরত মুসা (আঃ) জমায়েতের দিকে তাকিয়ে, সেই অচেনা, অজানা লোকটিকে বের হয়ে যেতে বললেন।
সেই লোকটি ভাবলো, এখন যদি বের হয়ে যাই, তবে সবার সামনে পাপী হিসেবে লজ্জা পাবো। আর
যদি থাকি, তবে বৃষ্টি
আসা বন্ধ থাকবে।
নিজের ইজ্জত বাঁচানোর স্বার্থে সে আল্লাহর
কাছে দোয়া করলো "আল্লাহ, চল্লিশ বছর আমার পাপ গোপন রেখেছেন, আজকে সবার সামনে বেইজ্জতি করবেন না। ক্ষমা
চাচ্ছি"।
একদিকে দোয়া শেষ হলো, অন্যদিকে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি শুরু হলো।
হযরত মুসা (আঃ) আবারো অবাক হয়ে জিজ্জাসা
করলেন-
- আল্লাহ, কেউ তো জমায়েত থেকে বের হলো না, তবে বৃষ্টি দিয়ে দিলা যে?
আল্লাহ জবাব দিলেন-
- যার কারণে বৃষ্টি আসা বন্ধ ছিলো, তাঁর কারনেই বৃষ্টি শুরু হলো। আমি তাঁকে
ক্ষমা করে দিয়েছি।
চল্লিশ বছরের পাপ, দশ সেকেন্ডে ক্ষমা...
হযরত মুসা জিজ্জসা করলেন-
- লোকটির নাম পরিচয় তো কিছুই জানালেন না।
আল্লাহ বললেন-
- 'যখন পাপে ডুবে ছিলো, তখনই জানাই নাই, এখন তওবা করেছে, এখন জানাবো? পাপীদের পাপ আমি যথাসম্ভব গোপন রাখি, এটা আমার সাথে আমার বান্দার নিজস্ব ব্যাপার।'
অথচ আমরা নিজেরা পাপী হয়ে ও প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে কারো না কারো নামে বদনাম /
গীবত করতেই থাকি।
আল্লাহ আমাদের সকলের ছোট-বড় সকল পাপ মাফ করে
দিন, আমিন।
মাঝে মাঝে কিছু গল্প পড়লে রূহ পর্যন্ত কেঁপে
উঠে। আমাদের এই গল্প থেকে
শিক্ষা গ্রহন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
No comments:
Post a Comment
razzakhowlader59@gmil.com