মোনাজাত
শেষে দু’হাত দ্বারা মুখমন্ডল মোছা
-এম এ রাজ্জাক হাওলাদার
মোনাজাত শেষে দু’হাত দ্বারা মুখমণ্ডল মোছে দেওয়া ফিকহি
হানাফির মতে মুস্তাহাব, অনেকে আবার বিদআত বলেছেন। তবে কথা থাকে যে, বিষেশ করে বিতের
সালাত ও বৃষ্টির জন্য সালাতুল ইসস্তিসকা আদায় শেষে দু’হাত তুলে দেওয়া রাসূল করেছেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়ার
সময় সাধারণত বুক পর্যন্ত হাত তুলতেন। তবে বিশেষ কোনো বিষয়ে দোয়া করার সময় হাত
আরেকটু উঁচু করতেন। এজন্য দোয়া করার সময় হাত বুক বা কাঁধ বরাবর হাত উঠাতে হবে এবং
দুই হাতের তালুর মাঝে সামান্য ফাঁকা রাখতে হবে।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করার সময় হাতের তালু ওপর
দিকে করো। হাতের তালুর উল্টো দিক করে প্রার্থনা করো না। যখন দোয়া করা শেষ হবে, দুই হাত দিয়ে মুখমণ্ডল মাসেহ করো। (আবু দাউদ ৫৫৩, আদ্দাওয়াতুল কবির লিল বায়হাকি, পৃ. ৩৯)
ইমাম বুখারি (রহ.) তার কিতাব আদ্দাওয়াতে 'বাবু রাফয়িল ইয়াদায়ি ফিদ দোয়া'য় হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) সূত্রে বর্ণনা করেন- রাসুলুল্লাহ (সা.) দোয়া করেছেন, দোয়ার মধ্যে উভয় হাত এটুকু উঠিয়েছেন, যাতে তার হাতের পাতার শুভ্রভাগ দেখা গিয়েছে।
ফিকহি হানিফির
দলিল-
হাদিস নং-০১
عن
الزهرى قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يرفع يديه عند صدره فى الدعاء، ثم
يمسح بهما وجهه (مصنف عبد الرزاق-2/247، رقم-3234
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করার সময় বুক পর্যন্ত হাত তুলতেন এবং দোয়া শেষে হাত মোবারক চেহারায় ফেরাতেন । (তাখরিজ: মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ২/২৪৭, হাদিস নং ৩২৩৪)
হাদিস নং-০২
عن
عمر بن الخطاب، رضي الله عنه قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا رفع يديه
في الدعاء لم يحطهما حتى يمسح بهما وجهه
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুআ করার সময় যখন তার উভয় হাত উঠাতেন, তিনি তা দিয়ে তার মুখমণ্ডল মর্দন না করা পর্যন্ত নামাতেন না। (তাখরিজ: সুনানে তিরমিজি-৩৩৮৬, মুসনাদে বাজ্জার-১/২৪৩, হাদীস নং-১১২৯, মুসতাদরাকে হাকেম-২/৭৪৮, হাদীস নং-১৯৬৭)
হাদিস নং-০৩
عبد
الله بن عباس، ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ” لا تستروا الجدر، من نظر
في كتاب اخيه بغير اذنه فانما ينظر في النار، سلوا الله ببطون اكفكم ولا تسالوه
بظهورها، فاذا فرغتم فامسحوا بها وجوهكم ”
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুমা সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের ঘরের দেয়ালগুলো পর্দায় আবৃত করো না। যে ব্যক্তি বিনা অনুমতিতে তার ভাইয়ের চিঠিতে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো, সে যেন জাহান্নামের আগুনের দিকে তাকালো। তোমরা হাতের পৃষ্ঠের দ্বারা নয় বরং হাতের তালুর দ্বারা আল্লাহর কাছে চাইবে। অতঃপর দু‘আ শেষে তোমাদের হাতের তালু দিয়ে নিজের চেহারা মুছবে। (তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদ-১৪৮৫, মুস্তাদরাকে হাকেম-২/৭৪৯, হাদীস নং-১৯৬৮, মুজামে কাবীর লিততাবারানী-১০/৩১৯, হাদীস নং-১০৭৭৯)
রাসূল
করিম (সা.)ইসতিস্কা
সালাতে হাত উঠাতেন-
عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الْقَطَّانِ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ
قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ
يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِي شَىْءٍ مِنَ الدُّعَاءِ إِلاَّ فِي الاِسْتِسْقَاءِ
فَإِنَّهُ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى يُرَى بَيَاضُ إِبْطَيْهِ .
শুআয়ব ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসতিস্কার সময় ছাড়া অন্য কোন দোয়ায় হস্থদ্বয় উঠাতেন না। তিনি তখন হস্তদ্বয় এতটুকু পর্যন্ত উঠাতেন যে, তার উভয় বগলের শুভ্রতা দেখা যেত। [সহীহ। ইবন মাজাহ ১১৮০, বুখারী ১০৩১, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ১৯৫৩]
সারকথা হলো, হাত তুলে মোনাজাত শেষে মুখমণ্ডলের উপরে হাত বুলানো বা মাসেহ
করা মুস্তাহাব/সুন্নাত, যা নস দ্বারা প্রমাণিত।
No comments:
Post a Comment
razzakhowlader59@gmil.com