পুরুষের বীর্য থেকে ছেলে
ও
নারীর বীর্য থেকে কন্যা সন্তান ?
-এম এ রাজ্জাক হাওলাদার
নারী ও পুরুষের সংমিশ্রনে সমাজ পরিচালিত হয়।
ইসলামে পুরুষের কর্ত্বত্ব দিয়ে একটি পরিবার পরিচালিত হয়। সমাজের কাছে পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ
হলো সন্তান আর সন্তানের সূচনা হয় নারী ও পুরুষ থেকে। বিজ্ঞান যদিও বহু বছর পর
এর সমাধান বের করেছে, কিন্তু রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমাধান দিয়ে গেছেন।
যেমন আল্লাহর বাণীতে বলা হয়েছে,
لِّلَّهِ مُلْكُ
ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ يَخْلُقُ مَا يَشَآءُۚ يَهَبُ لِمَن يَشَآءُ إِنَٰثًا
وَيَهَبُ لِمَن يَشَآءُ ٱلذُّكُورَ
আসমান ও জমিনের রাজত্ব একমাত্র আল্লাহর। তিনি
যা চান তাই সৃষ্টি করেন। যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা
পুত্রসন্তান দান করেন।
أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَٰثًاۖ
وَيَجْعَلُ مَن يَشَآءُ عَقِيمًاۚ إِنَّهُۥ عَلِيمٌ قَدِيرٌ
অথবা তাদেরকে পুত্র ও কন্যা উভয়ই দান করেন।
আবার যাকে ইচ্ছা নিঃসন্তান রাখেন। নিশ্চয়ই তিনি মহাজ্ঞানী, সর্বশক্তিমান। (আশ-শূরা
:৪৯-৫০)
فَقَالَ نَبِيُّ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " نَعَمْ فَمِنْ أَيْنَ يَكُونُ الشَّبَهُ
إِنَّ مَاءَ الرَّجُلِ غَلِيظٌ أَبْيَضُ وَمَاءَ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَرُ
فَمِنْ أَيِّهِمَا عَلاَ أَوْ سَبَقَ يَكُونُ مِنْهُ الشَّبَهُ " .
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বলেছেনঃ পুরুষের বীর্য সাদা আর মহিলাদের বীর্য হলুদ। যখন উভয়ের বীর্য একত্রিত হয়
এবং পুরুষের বীর্য মহিলাদের বীর্যের উপর প্রাধান্য লাভ করে, তখন আল্লাহর হুকুমে
পুত্র সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। আর যখন মহিলাদের বীর্য পুরুষের বীর্যের উপর প্রাধান্য
লাভ করে, তখন আল্লাহর হুকুমে
কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়।(সহীহ মুসলিম ৫৯৭)
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ
بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، وَعَبْدُ الأَعْلَى، عَنْ
سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ أُمَّ
سُلَيْمٍ، سَأَلَتْ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ عَنِ الْمَرْأَةِ
تَرَى فِي مَنَامِهَا مَا يَرَى الرَّجُلُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله
عليه وسلم ـ " إِذَا رَأَتْ ذَلِكَ فَأَنْزَلَتْ فَعَلَيْهَا الْغُسْلُ
" . فَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَكُونُ هَذَا قَالَ
" نَعَمْ مَاءُ الرَّجُلِ غَلِيظٌ أَبْيَضُ وَمَاءُ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَرُ
فَأَيُّهُمَا سَبَقَ أَوْ عَلاَ أَشْبَهَهُ الْوَلَدُ " .
ইবনে মাজাহ পৃষ্ঠা নং হাদিস নং২/৬০১। আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। উম্মু সুলাইম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর
নিকট জিজ্ঞেস করেন, পুরুষের ন্যায় কোন নারীর
স্বপ্নদোষ হলে সে কী করবে? রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যদি তার স্বপ্নদোষ হয় এবং তার বীর্যপাত হয়, তবে তাকে গোসল করতে হবে।
উম্মু সালামাহ (রাঃ) বলেন, হে আললাহর রাসূল! তাই কি
হয়? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ।
পুরুষের বীর্য গাঢ় সাদা এবং স্ত্রীলোকের বীর্য পাতলা হলদে রংবিশিষ্ট। সুতরাং এদের
মধ্যে যার বীর্য আগে স্খলিত হয়, সন্তান
তার সদৃশ হয়।
(তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: মুসলিম ৩১০-১১, নাসায়ী ১৯৫, ২০০; আহমাদ ১২৬৪২, ১৩৬৯৮; দারিমী ৭৬৪। তাহক্বীক্ব
আলবানী: সহীহ। তাখরীজ আলবানী: সহীহাহ ১৩৪২)
وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ
قَالَتْ قَالَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ لَا
يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ فَهَلْ عَلَى الْمَرْأَةِ من غسل إِذا احْتَلَمت قَالَ
النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «إِذَا رَأَتِ الْمَاءَ» فَغَطَّتْ
أُمُّ سَلَمَةَ وَجْهَهَا وَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَوَتَحْتَلِمُ
الْمَرْأَةُ قَالَ: «نعم تربت يَمِينك فَبِمَ يشبهها وَلَدهَا؟»
মিশকাতুল মাসাবিহ পৃষ্ঠা নং হাদিস নং৪৩৩-[৪]
উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন
(আনাস (রাঃ)-এর মা) উম্মু সুলায়ম (রাঃ)বললেন, হে
আল্লাহর রসূল! আল্লাহ তা‘আলা হক কথা বলতে লজ্জাবোধ
করেন না। স্ত্রীলোকের স্বপ্নদোষের কারণে তার ওপর কি গোসল ফরয হয়? তিনি (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উত্তরে বললেনঃ হাঁ, যদি
(ঘুম থেকে জেগে উঠে) বীর্য দেখে। এ উত্তর শুনে উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) (লজ্জায়)
স্বীয় মুখ ঢেকে ফেললেন এবং বললেন, হে
আল্লাহর রসূল! স্ত্রীলোকেরও আবার স্বপ্নদোষ হয় (পুরুষের ন্যায় বীর্যপাত হয়)।
উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। কি আশ্চর্য! (তা
না হলে) তার সন্তান তার সদৃশ হয় কীভাবে? ] সহীহ : বুখারী ১৩০, মুসলিম
৩১৩।
وَزَادَ مُسْلِمٌ
بِرِوَايَةِ أُمِّ سُلَيْمٍ: «أَنَّ مَاءَ الرَّجُلِ غَلِيظٌ أَبْيَضُ وَمَاءَ
الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَرُ فَم أَيِّهِمَا عَلَا أَوْ سَبَقَ يَكُونُ مِنْهُ
الشَّبَهُ»
মিশকাতুল মাসাবিহ পৃষ্ঠা নং হাদিস নং৪৩৪-[৫]
কিন্তু ইমাম মুসলিম (রহঃ) উম্মু সুলায়ম (রাঃ)-এর বর্ণনায় এ কথাগুলো বেশী বলেছেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ কথাও বলেছেন যে, সাধারণত
পুরুষের বীর্য গাঢ় ও সাদা। স্ত্রীলোকের বীর্য পাতলা ও হলদে। উভয়ের বীর্যের মধ্যে
যেটিই জয়ী হয়, অর্থাৎ- যে বীর্য আগে
গর্ভাশয়ে প্রবেশ করে সন্তান তার সাদৃশ্য হয়।[1][1] সহীহ : মুসলিম ৫৯৭
عَن أنس قا ل سَمِعَ
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلَامٍ بِمَقْدَمِ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي أَرْضٍ يَخْتَرِفُ فَأَتَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ إِنِّي سَائِلُكَ عَنْ ثَلَاثٍ لَا يَعْلَمُهُنَّ
إِلَّا نَبِيٌّ: فَمَا أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ وَمَا أَوَّلُ طَعَامِ أَهْلِ
الْجَنَّةِ؟ وَمَا يَنْزِعُ الولدُ إِلَى أبيهِ أَو إِلَى أمه؟ قا ل: «أَخْبرنِي
بهنَّ جِبْرِيلُ آنِفًا أَمَّا أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ فَنَارٌ تَحْشُرُ
النَّاسَ مِنَ الْمَشْرِقِ إِلَى الْمَغْرِبِ وَأَمَّا أَوَّلُ طَعَامٍ يَأْكُلُهُ
أَهْلُ الْجَنَّةِ فَزِيَادَةُ كَبِدِ الْحُوت وَإِذَا سَبَقَ مَاءُ الرَّجُلِ
مَاءَ الْمَرْأَةِ نَزْعَ الْوَلَدَ وَإِذَا سَبَقَ مَاءُ الْمَرْأَةِ نَزَعَتْ» .
قَالَ: أشهد أَن لاإله إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ يَا رَسُولَ
اللَّهِ إِنَّ الْيَهُودَ قَوْمٌ بُهْتٌ وَإِنَّهُمْ إِنْ يعلمُوا بِإِسْلَامِي من
قبل أَن تَسْأَلهُمْ يبهتوني فَجَاءَتِ الْيَهُودُ فَقَالَ: «أَيُّ رَجُلٍ عَبْدُ
اللَّهِ فِيكُمْ؟» قَالُوا: خَيْرُنَا وَابْنُ خَيْرِنَا وَسَيِّدُنَا وَابْنُ
سيدِنا فَقَالَ: «أرأَيتم إِنْ أَسْلَمَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلَامٍ؟» قَالُوا
أَعَاذَهُ اللَّهُ مِنْ ذَلِكَ. فَخَرَجَ عَبْدُ اللَّهِ فَقَالَ أَشْهَدُ أَنْ
لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ فَقَالُوا:
شَرُّنَا وَابْنُ شَرِّنَا فَانْتَقَصُوهُ قَالَ: هَذَا الَّذِي كُنْتُ أَخَافُ
يَا رسولَ الله رَوَاهُ البُخَارِيّ رواہ البخاری (4480) ۔ (صَحِيح)
মিশকাতুল মাসাবিহ পৃষ্ঠা নং হাদিস নং৫৮৭০-[৩]
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, 'আবদুল্লাহ ইবনু সালাম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম.) -এর মদীনায় আগমনের সংবাদ শুনতে পেলেন। এ সময় তিনি নিজের এক বাগানে
খেজুর পাড়ছিলেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর কাছে এসে বললেন, আমি আপনাকে এমন তিনটি
প্রশ্ন করব, যা নবী ছাড়া আর কেউই
জানে না।
১. কিয়ামতের সর্বপ্রথম আলামত কি?
২. জান্নাতবাসীদের সর্বপ্রথম খাদ্য কি?
৩. কিসের কারণে সন্তান (আকৃতিতে) কখনো তার
পিতার মতো হয়, আবার কখনো তার মায়ের
মতো হয়?
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম.)
বললেন, এ বিষয়গুলো সম্পর্কে
জিবরীল আলায়হিস সালাম এইমাত্র আমাকে অবহিত করে গেলেন। কিয়ামতের সর্বপ্রথম আলামাত
হলো একটি আগুন, যা লোকেদেরকে পূর্ব দিকে
হতে পশ্চিম দিকে সমবেত করে নিয়ে যাবে। আর জান্নাতবাসীগণ সর্বপ্রথম যে খাদ্য খাবে, তা হলো মাছের কলিজার
অতিরিক্ত টুকরা আর (সন্তানাদির বিষয়টি) যদি নারীর বীর্যের উপর পুরুষের বীর্যের
প্রাধান্য ঘটে, তবে সন্তান বাপের মতো
হয়। আর যদি নারীর বীর্যের প্রাধান্য ঘটে, তবে
সন্তান মায়ের রূপ ধারণ করে। তখন ‘আবদুল্লাহ
ইবনু সালাম বলে উঠলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তা'আলা ছাড়া ইবাদাত
পাওয়ার যোগ্য কেউ নেই এবং নিশ্চয় আপনি আল্লাহর রাসূল।
(অতঃপর
তিনি বললেন) হে আল্লাহর রাসূল! ইয়াহূদীরা এমন একটি জাতি, যারা অপবাদ আনবে। অতঃপর
ইয়াহুদীগণ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর কাছে আসলে তিনি তাদেরকে
প্রশ্ন করলেন, তোমাদের মাঝে আবদুল্লাহ
কে? তার উত্তরে বলেন, আমাদের মধ্যে সর্বোত্তম
লোক এবং সর্বোত্তম ব্যক্তির সন্তান। তিনি আমাদের নেতা এবং আমাদের নেতার সন্তান।
তখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম.) বললেন, আচ্ছা বল তো, আবদুল্লাহ ইবনু সালাম যদি ইসালাম গ্রহণ করে, তখন তারা বলে উঠল, আল্লাহ তা'আলা তাকে তা হতে রক্ষা
করুন। এমন সময় ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম
(আড়াল হতে) বের হয়ে এসে কালিমাহ্ উচ্চারণ করে বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন
উপাসনার যোগ্য কেউ নেই এবং নিশ্চয় মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম.)
আল্লাহর রাসূল। তখন তারা (ইয়াহূদীরা) বলতে লাগল, (এ লোকটি) আমাদের মধ্যে সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তির
সন্তান। অতঃপর তারা তাকে খুব তাচ্ছিল্যভাবে তুচ্ছ প্রতিপন্ন করল। তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম
(রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! (এদের
ব্যাপারে) আমি এটাই আশঙ্কা করেছিলাম।)
(সহীহ: বুখারী ৪৪৮০, মুসনাদে আহমাদ ১২৯৯৩, মুসনাদে আবদ ইবনু
হুমায়দ ১৩৮৯, আবূ ইয়া'লা ৩৪১৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৭৪২৩, আস্ সুনানুল কুবরা লিন্
নাসায়ী ৯০৭৪।)
عَن عبد الله بن
مَسْعُود قَالَ: حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَهُوَ الصَّادِق المصدوق: «إِن أحدكُم يجمع خلقه فِي بطن أمه أَرْبَعِينَ يَوْمًا
ثمَّ يكون فِي ذَلِك علقَة مثل ذَلِك ثمَّ يكون فِي ذَلِك مُضْغَة مثل ذَلِك ثمَّ
يُرْسل الْملك فينفخ فِيهِ الرّوح وَيُؤمر بِأَرْبَع كَلِمَات بكتب رزقه وأجله
وَعَمله وشقي أَو سعيد فوالذي لَا إِلَه غَيره إِن أحدكُم لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ
أَهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إِلَّا ذِرَاعٌ
فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ
فَيَدْخُلُهَا وَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى مَا
يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إِلَّا ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ
فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيَدْخُلُهَا»
মিশকাতুল মাসাবিহ পৃষ্ঠা নং হাদিস নং৮২-[৪]
ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত।
তিনি বলেন, সত্যবাদী ও সত্যবাদী বলে
স্বীকৃত আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকেরই
জন্ম হয় এভাবে যে, তার মায়ের পেটে (প্রথমে
তার মূল উপাদান) শুক্ররূপে চল্লিশ দিন পর্যন্ত থাকে। অতঃপর তা চল্লিশ দিন পর্যন্ত
লাল জমাট রক্তপিন্ডরূপ ধারণ করে। তারপর পরবর্তী চল্লিশ দিনে মাংসপিন্ডর রূপ ধারণ
করে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা একজন মালাককে চারটি
বিষয় লিখে দেয়ার জন্য পাঠন। সে মালাক লিখেন তার- (১) ‘আমল [সে কি কি ‘আমল করবে], (২) তার মৃত্যু, (৩) তার রিয্ক্ব
(রিজিক/রিযিক) ও (৪) তার নেককার বা দুর্ভাগা হওয়ার বিষয় আল্লাহর হুকুমে তার
তাক্বদীরে লিখে দেন, তারপর তন্মধ্যে রূহ্
প্রবেশ করান। অতঃপর সে সত্তার কসম, যিনি
ব্যতীত প্রকৃত আর কোন ইলাহ নেই! তোমাদের মধ্যে কেউ জান্নাতবাসীদের ‘আমল করতে থাকে, এমনকি তার ও জান্নাতের
মধ্যে মাত্র এক হাত দূরত্ব থাকে, এমন
সময় তার প্রতি তাক্বদীরের লিখা তার সামনে আসে। আর তখন সে জাহান্নামীদের কাজ করতে
থাকে এবং জাহান্নামে প্রবেশ করে। তোমাদের কোন ব্যক্তি জাহান্নামীদের মতো ‘আমল করতে শুরু করে, এমনকি তার ও জাহান্নামের
মধ্যে এক হাত দূরত্ব অবশিষ্ট থাকে। এমন সময় তার প্রতি সে লেখা (তাক্বদীর) সামনে
আসে, তখন সে জান্নাতীদের কাজ
করতে শুরু করে, ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ
করে। ([1] সহীহ : বুখারী ৩২০৮, মুসলিম ২৬৪৩, আবূ দাঊদ ৪৭০৮, ইবনু মাজাহ ৭৬, তিরমিযী ২১৩৭, সহীহ ইবনু হিব্বান ৬১৭৪, আহমাদ ৩৯৩৪।)
سُلَيْمَانُ بْنُ
حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَنَسٍ
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَكَّلَ اللهُ
بِالرَّحِمِ مَلَكًا فَيَقُولُ أَيْ رَبِّ نُطْفَةٌ أَيْ رَبِّ عَلَقَةٌ أَيْ
رَبِّ مُضْغَةٌ فَإِذَا أَرَادَ اللهُ أَنْ يَقْضِيَ خَلْقَهَا قَالَ أَيْ رَبِّ
أَذَكَرٌ أَمْ أُنْثَى أَشَقِيٌّ أَمْ سَعِيدٌ فَمَا الرِّزْقُ فَمَا الأَجَلُ
فَيُكْتَبُ كَذَلِكَ فِي بَطْنِ أُمِّهِ
বুখারী শরীফ খন্ড নং পৃষ্ঠা নং হাদিস নং৬৫৯৫.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত।
তিনি বলেনঃ আল্লাহ্ রেহেমে (মাতৃগর্ভে) একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, হে প্রতিপালক! এটি
বীর্য। হে প্রতিপালক! এটি রক্তপিন্ড। হে প্রতিপালক! এটি গোশতপিন্ড। আল্লাহ্ যখন
তার সৃষ্টি পূর্ণ করতে চান, তখন ফেরেশতা বলে, হে প্রতিপালক! এটি নর
হবে, না নারী? এটি দুর্ভাগা হবে, না ভাগ্যবান? তার রিযক্ কী পরিমাণ হবে? তার জীবনকাল কী হবে? তখন (আল্লাহর নির্দেশমত)
তার মায়ের পেটে থাকাকালে ঐ রকমই লিখে দেয়া হয়। [৩১৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
৬১৪৩)
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ
إِن كُنتُمْ فِى رَيْبٍ مِّنَ ٱلْبَعْثِ فَإِنَّا خَلَقْنَٰكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ
مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ مِن مُّضْغَةٍ مُّخَلَّقَةٍ وَغَيْرِ
مُخَلَّقَةٍ لِّنُبَيِّنَ لَكُمْۚ وَنُقِرُّ فِى ٱلْأَرْحَامِ مَا نَشَآءُ
إِلَىٰٓ أَجَلٍ مُّسَمًّى ثُمَّ نُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوٓا۟
أَشُدَّكُمْۖ وَمِنكُم مَّن يُتَوَفَّىٰ وَمِنكُم مَّن يُرَدُّ إِلَىٰٓ أَرْذَلِ
ٱلْعُمُرِ لِكَيْلَا يَعْلَمَ مِنۢ بَعْدِ عِلْمٍ شَيْـًٔاۚ وَتَرَى ٱلْأَرْضَ
هَامِدَةً فَإِذَآ أَنزَلْنَا عَلَيْهَا ٱلْمَآءَ ٱهْتَزَّتْ وَرَبَتْ
وَأَنۢبَتَتْ مِن كُلِّ زَوْجٍۭ بَهِيجٍ
হে মানুষ! পুনরুত্থান সম্বন্ধে তোমাদের যদি
কোন সন্দেহ থাকে তাহলে (ভেবে দেখ,) আমিই তো তোমাদেরকে (প্রথম মানুষ আদমকে) মাটি থেকে, তারপর (অন্যান্যদেরকে)
বীর্য থেকে, তারপর জমাট রক্তপিণ্ড
থেকে, তারপর সুগঠিত ও সুগঠিত
নয় এমন মাংসখণ্ড থেকে সৃষ্টি করেছি; তোমাদের
কাছে (আমার ক্ষমতা) প্রকাশ করার জন্য। আমি যা (সৃষ্টি করতে) চাই তা একটি নির্দিষ্ট
মেয়াদ পর্যন্ত মাতৃগর্ভে রেখে দেই; তারপর
তোমাদেরকে শিশু অবস্থায় বের করে আনি; পরে
যাতে তোমরা পূর্ণ শক্তির বয়সে উপনীত হও। তোমাদের মধ্যে কতক (অল্প বয়সে) মারা যায়, আবার তোমাদের মধ্যে
কতককে নিকৃষ্টতম বয়সে (জরাজীর্ণ বার্ধক্যে) উপনীত করা হয়, যাতে তারা জানার পরে
আবার কিছুই না জানে (সবকিছু ভুলে যায়)। আর তুমি জমিনকে দেখতে পাও মৃত, তারপর আমি যখন তাতে পানি
(বৃষ্টি) বর্ষণ করি তখন তা নড়ে (জীবিত হয়ে) ওঠে, বেড়ে ওঠে আর সবরকম সুন্দর উদ্ভিদ উদ্গত করে।
(সূরা
হজ্জ.২২:৫)
ثُمَّ خَلَقْنَا
ٱلنُّطْفَةَ عَلَقَةً فَخَلَقْنَا ٱلْعَلَقَةَ مُضْغَةً فَخَلَقْنَا ٱلْمُضْغَةَ
عِظَٰمًا فَكَسَوْنَا ٱلْعِظَٰمَ لَحْمًا ثُمَّ أَنشَأْنَٰهُ خَلْقًا ءَاخَرَۚ
فَتَبَارَكَ ٱللَّهُ أَحْسَنُ ٱلْخَٰلِقِينَ
তারপর শুক্রবিন্দুকে জমাটবদ্ধ রক্তে এবং
জমাটবদ্ধ রক্তকে মাংসপিণ্ডে পরিণত করেছি। তারপর মাংসপিণ্ড থেকে হাড় সৃষ্টি করেছি
এবং হাড়গুলোকে আবার মাংস দ্বারা আচ্ছাদিত করেছি। অবশেষে তাকে অন্য এক সৃষ্টিরূপে তৈরী
করেছি। অতএব, সর্বোত্তম সৃষ্টিকর্তা
আল্লাহ কত মহান!(সূরা মু'মিনুন :১৪)
وَٱللَّهُ خَلَقَكُم
مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ جَعَلَكُمْ أَزْوَٰجًاۚ وَمَا تَحْمِلُ
مِنْ أُنثَىٰ وَلَا تَضَعُ إِلَّا بِعِلْمِهِۦۚ وَمَا يُعَمَّرُ مِن مُّعَمَّرٍ
وَلَا يُنقَصُ مِنْ عُمُرِهِۦٓ إِلَّا فِى كِتَٰبٍۚ إِنَّ ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ
يَسِيرٌ
আল্লাহ তোমাদেরকে মাটি ও বীর্য থেকে সৃষ্টি
করেছেন (প্রথম মানুষকে মাটি থেকে ও তার বংশধরদেরকে বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছেন), তারপর তোমাদেরকে
(নারী-পুরুষের) জোড়া বানিয়েছেন। নারী যে গর্ভধারণ করে ও সন্তান প্রসব করে তা
আল্লাহর জ্ঞাতসারেই হয়। বয়স্ক ব্যক্তি যে অধিক বয়স পায় কিংবা তার বয়স থেকে যা
হ্রাস করা হয় তাও কিতাবে (লাওহে মাহ্ফূযে) লিখিত আছে। নিশ্চয়ই এটা আল্লাহর পক্ষে
সহজ। (সূরা ফাতির : ১১)
أَوَلَمْ يَرَ
ٱلْإِنسَٰنُ أَنَّا خَلَقْنَٰهُ مِن نُّطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُّبِينٌ
মানুষ কি দেখে না যে, আমি তাকে (নাপাক) বীর্য
থেকে সৃষ্টি করেছি? আর সে কিনা হয়ে যায়
প্রকাশ্য ঝগড়াটে। (সূরা ইয়াছিন: ৭৭)
ٱللَّهُ ٱلَّذِى جَعَلَ
لَكُمُ ٱلْأَرْضَ قَرَارًا وَٱلسَّمَآءَ بِنَآءً وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ
صُوَرَكُمْ وَرَزَقَكُم مِّنَ ٱلطَّيِّبَٰتِۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمْۖ
فَتَبَارَكَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلْعَٰلَمِينَ
আল্লাহ তো সেই মহান সত্তা, যিনি পৃথিবীকে তোমাদের
বাসস্থান করেছেন, আকাশকে ছাদ বানিয়েছেন, তোমাদের আকার গড়েছেন, তোমাদের আকারকে সুন্দর
করেছেন এবং তোমাদেরকে উৎকৃষ্ট জীবিকা দান করেছেন। ইনিই আল্লাহ, তোমাদের প্রভু।
বিশ্বজগতের প্রভু এই আল্লাহ কত মহান! ( সূরা গাফির :৬৪)
خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ
وَٱلْأَرْضَ بِٱلْحَقِّ وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْۖ وَإِلَيْهِ
ٱلْمَصِيرُ
তিনি যথাযথভাবে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন, তোমাদের আকৃতি দিয়েছেন
এবং তোমাদের আকৃতি সুন্দর করেছেন। তাঁর কাছেই (সবার) প্রত্যাবর্তন। (সূরা তাগাবুন
: ৩)
هُوَ ٱلَّذِى خَلَقَكُم
مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ يُخْرِجُكُمْ طِفْلًا
ثُمَّ لِتَبْلُغُوٓا۟ أَشُدَّكُمْ ثُمَّ لِتَكُونُوا۟ شُيُوخًاۚ وَمِنكُم مَّن
يُتَوَفَّىٰ مِن قَبْلُۖ وَلِتَبْلُغُوٓا۟ أَجَلًا مُّسَمًّى وَلَعَلَّكُمْ
تَعْقِلُونَ
তিনিই তোমাদেরকে (আদমকে) মাটি দ্বারা, তারপর (আদমের
সন্তানদেরকে) শুক্রবিন্দু দ্বারা ও তারপর জমাট রক্ত দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর
তোমাদেরকে (মায়ের পেট থেকে) শিশুরূপে বের করেন। তারপর (বড় করে তোলেন) যাতে পূর্ণ
শক্তির বয়সে (যৌবনে) উপনীত হও, তারপর
বৃদ্ধ হও— যদিও তোমাদের কেউ কেউ
তার আগেই মারা যায়— আর যাতে একটি নির্ধারিত
সময়কালে পৌঁছাতে পার, এবং যাতে তোমরা (সবকিছু
ভালভাবে) বুঝতে পার। (সূরা গাফির : ৬৭)
خَلَقَ ٱلْإِنسَٰنَ مِن
نُّطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُّبِينٌ
তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন এক ফোঁটা শুক্র
থেকে। অথচ এই মানুষই প্রকাশ্য বিরোধী হয়ে যায়। (সূরা নাহল : ৪)
إِنَّا خَلَقْنَا
ٱلْإِنسَٰنَ مِن نُّطْفَةٍ أَمْشَاجٍ نَّبْتَلِيهِ فَجَعَلْنَٰهُ سَمِيعًۢا
بَصِيرًا
আমি তো মিশ্র বীর্যের একটি ফোঁটা থেকে মানুষ
সৃষ্টি করেছি, তাকে পরীক্ষা করব বলে; তাই তাকে
শ্রবণশক্তিসম্পন্ন ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন করেছি। (সূরা ইনসান : ২)
خَلَقَ ٱلْإِنسَٰنَ
مِنْ عَلَقٍ
তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন জমাটবদ্ধ রক্ত
থেকে। (সূরা আলাক্ব : ২)
ٱلَّذِىٓ أَحْسَنَ
كُلَّ شَىْءٍ خَلَقَهُۥۖ وَبَدَأَ خَلْقَ ٱلْإِنسَٰنِ مِن طِينٍ
যিনি প্রত্যেকটি জিনিস সুন্দর করে সৃষ্টি
করেছেন এবং মাটি থেকে মানুষ সৃষ্টি শুরু করেছেন (প্রথম মানুষ আদমকে সৃষ্টি
করেছেন)। (সূরা আস-সাজদাহ : ৭)
لَقَدْ خَلَقْنَا
ٱلْإِنسَٰنَ فِىٓ أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ
অবশ্যই আমি মানুষকে সবচেয়ে সুন্দর গঠনে
সৃষ্টি করেছি। (সূরা ত্বীন : ৪)
অতএব নারী-পুরুষ উভয়ে মিলে যে সন্তান দুনিয়ার মুখ দেখে তার উজ্জল ভবিষ্যৎ দেখা আমাদের কর্তব্য। আসুন! শিকার করী
যে, নারী-পুরুষ দেবার মালিক একমাত্র
মহান আল্লাহ তায়ালা।
No comments:
Post a Comment
razzakhowlader59@gmil.com